কলকাতা, 25 অক্টোবর: পুজোর মুখে উচ্চ প্রাথমিকে 14 হাজার পদে কলকাতা হাইকোর্ট নিয়োগের নির্দেশ দেওয়ায় হাসি ফুটেছিল চাকরি প্রার্থীদের মুখে। কিন্তু সেই নির্দেশ শীর্ষ আদালতে চ্যালেঞ্জ হওয়ায় ফের চিন্তায় পড়েছিলেন হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থী। শীর্ষ আদালত কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশই বহাল রাখায় নিয়োগে সবুজ সংকেত মিলেছে। শুক্রবার ওই মামলা প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ খারিজ করে দেয় ৷
উচ্চ প্রাথমিকে 14 হাজারেরও বেশি শূন্যপদে নিয়োগের ক্ষেত্রে আর কার্যত বাধা রইল না স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি)। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ জানিয়েছে, এখনই কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে হস্তক্ষেপ করছে না শীর্ষ আদালত।
অগস্ট মাসে 14 হাজারের বেশি শূন্যপদে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। ওই নির্দেশ সংরক্ষণ নীতির বিরোধী, এই দাবি তুলে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রাজীব ব্রহ্ম-সহ কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী। ফলে 14 হাজার চাকরিপ্রার্থীর নিয়োগ নিয়ে আবার তৈরি হয় জট। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পাদরিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রার বেঞ্চ জানিয়েছে, নতুনদের আবেদন শোনা হবে না। হাইকোর্টই মামলাকারীদের বক্তব্য শুনবে, বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।
গত 28 অগস্ট দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর আপার প্রাইমারিতে 14 হাজারের বেশি নিয়োগের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ আপার প্রাইমারিতে নতুন করে মেধাতালিকা প্রকাশ করতে নির্দেশ দেন। নির্দেশে বলা হয় পুনরায় মূল্যায়ন করতে গিয়ে যে 1463 জনকে বাতিল করেছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন, তাদেরকে নিয়ে নতুন করে কাউন্সেলিং করতে হবে।
মোট 14 হাজার 52 জন প্রার্থীকে কাউন্সেলিং শেষে নতুন করে নিয়োগ করতে হবে। এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে 8 সপ্তাহের মধ্যে। 2016 সালের 23 সেপ্টম্বর 14 হাজার 339টি শূন্যপদে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণিতে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করে স্কুল সার্ভিস কমিশন। কিন্তু মামলার গেরোয় আটকে যায় নিয়োগ। 2019 সালের 27 জুন প্রথম দফায় পার্সোনালিটি টেস্টের বিজ্ঞপ্তি জারি করে সার্ভিস কমিশন।
তার আগেই 2018 সালে 'নথিপত্র যাচাইয়ের' দাবিতে মামলা দায়ের হয় হাইকোর্টে। কারণ যোগ্যতা থাকার সত্ত্বেও অনেকেই সুযোগ পাননি এই দাবিতে মামলা দায়ের হয়েছিল। 2018 সালের পরে একাধিক মামলা দায়ের হয়। স্কুল সার্ভিস কমিশন যে মেধা তালিকা প্রকাশ করেছিল সেই তালিকায় অনিয়ম হয়েছে মনে করে 2020 সালের 11 ডিসেম্বর সম্পূর্ণ মেধা তালিকা বাতিল করেন বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্য।
একইসঙ্গে নিয়োগে স্থগিতাদেশ দেন। এরপর নতুন করে ইন্টারভিউয়ের পর তালিকা প্রকাশ হয়। সেখানে 1463 জনকে আগের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে ফের মামলা হয় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় স্থগিতাদেশ তুলে দিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ ক্ষতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেন স্কুল সার্ভিস কমিশনকে। সেই মামলা বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ দীর্ঘ দিন শোনার পর নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিলেন 14 হাজার 52টি শূন্য পদে।