ভোপাল, 28 জানুয়ারি: মহাকুম্ভ নিয়ে জনগণের মধ্যে উৎসাহের শেষ নেই ৷ দেশ-বিদেশ থেকে কোটি কোটি মানুষ পুণ্যস্নানের জন্য ভিড় জমাচ্ছেন প্রয়াগরাজে ৷ কেউ আবার স্ত্রী বা স্বামীর সঙ্গে সাত জন্মের বন্ধন সুনিশ্চিত করতে জোড়ায় জোড়ায় পুণ্যস্নান সারছেন ৷ কিন্তু আশ্চর্যের কথা, এই মহাকুম্ভকে কেন্দ্র করেই ভোপালে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ৷ আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করেছেন 55 বছর বয়সি স্বামী । এই বিষয়ে তাঁর বক্তব্য সাধ্বী নয়, আমি এমন একজন বউ চাই যে সবসময় ভালো সাজগোজ করে স্ত্রী হয়ে থাকবে ৷
পেশায় ঠিকাদার স্বামী চাননি যে তাঁর স্ত্রী মহাকুম্ভে স্নান করতে যান। তা সত্ত্বেও স্বেচ্ছায় বন্ধুদের সঙ্গে প্রয়াগরাজে যান স্ত্রী। তার জেরে স্ত্রীর থেকে অব্যাহতি চেয়ে হিন্দু বিবাহ আইনের 13(A) ধারার অধীনে ভোপাল জেলা পারিবারিক আদালতে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন ।
সেখানে লেখেন, তিনি এমন একজন স্ত্রী চান যে সাজ-সজ্জার পাশাপাশি তাঁর ইচ্ছার যত্ন নেবেন । কোনও সাধ্বী চান না ৷ বহুবার তাঁকে আধুনিক করতে চেষ্টা করেও লাভ হয়নি ৷ গাড়ি কিনে স্ত্রীকে ড্রাইভিং স্কুলে ভর্তি করিয়েছিলেন, তাতেও কোনও সুরাহা হয়নি ৷ কপালে তিলক ও গলায় রুদ্রাক্ষের মালা পরে থাকে ৷ অনেকবার পাহাড় বা কোনও রোমান্টিক জায়গায় ঘুরতে যেতে বললেও স্ত্রী যাননি ৷ কিন্তু বন্ধুদের সঙ্গে মহাকুম্ভে চলে গিয়েছেন ৷ এটাই প্রথম নয়, আগেও একদল মহিলার সঙ্গে মথুরা, বৃন্দাবন এবং দ্বারিকা প্রভৃতি তীর্থস্থান ঘুরেছেন ৷ এই আচরণে বিরক্ত হয়ে আদালতে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করা ৷
পারিবারিক আদালতের কাউন্সিলর শৈল অবস্থি বলেন, "সাধারণত স্বামীরা এখানে অভিযোগ করেন যে তাদের স্ত্রী-রা সাজসজ্জার জন্য প্রচুর অর্থ অপচয় করেন, তবে এই ক্ষেত্রে স্বামী বলেছেন যে স্ত্রী পার্লারে যান না বা তিনি নিজেকে আকর্ষণীয় দেখাতে আগ্রহী নন ৷ অন্য মহিলাদের মতো পোশাক পরলেও লিপস্টিক লাগান না ৷ নিজেকে সাজান না । ইদানিং সিঁদুরের পরিবর্তে চন্দন পরতে শুরু করেছেন । পাশাপাশি মহাকুম্ভ থেকে ফেরার পর গলায় রুদ্রাক্ষের মালা পরা শুরু করেছেন ৷"
বিবাহবিচ্ছেদের কাউন্সেলিংয়ে স্ত্রী বলেন," উনি কী চান আমি কল গার্লের মতো মেকআপ করি ? আমার কোনও দোষ নেই ৷ স্বামীর কথা মেনে ও সেজেগুজে থাকতে চাই না ৷ বিবাহবিচ্ছেদেও রাজি, কিন্তু নিজের বেশভূষা ও জীবনধারা পরিবর্তন করতে পারব না ৷"
কাউন্সিলর শৈল অবস্থির থেকে জানা গিয়েছে, মামলাকারী স্বামীর বয়স প্রায় 55 বছর । প্রায় 27 বছর আগে তাদের বিয়ে হয় । এখন তাদের দুই সন্তান রয়েছে । 23 বছর বয়সি বড় মেয়ের বিয়েও হয়ে গিয়েছে । 20 বছরের ছেলে পড়াশোনা করছে ৷ দু'জনেই বাবাকে সমর্থন জানিয়েছেন ৷ তবে এই সমস্যার সমাধান করতে কাউন্সিলর একটি কাউন্সেলিং সেশন শেষ করে ফের আরেকটি সেশনের জন্য কথা বলবেন ৷