ETV Bharat / state

এক টাকার স্কুল, ফকির বস্তিতে আলো এনেছেন শিক্ষক - Teachers Day 2024 - TEACHERS DAY 2024

One Rupee School in Bengal: মাসের শেষে গুনতে হয় না হাজার হাজার টাকা ৷ মাত্র এক টাকা দিলেই স্কুলে ভর্তি নেন শিক্ষক ৷ স্কুল থেকে দেওয়া হয় বই থেকে পোশাকও ৷ বাংলাতেই রয়েছে এমনই স্কুল ৷ শিক্ষক দিবসে খোঁজ দিচ্ছে ইটিভি ভারত ৷

Teachers Day 2024
এক টাকার স্কুল পশ্চিম বর্ধমানে (নিজস্ব ছবি)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Sep 5, 2024, 1:20 PM IST

আসানসোল, 5 সেপ্টেম্বর: ডিসেরগড়ে দামোদর নদের পাশেই মাজার শরিফ । পাশেই বহু বছর আগে গড়ে উঠেছিল একটি ফকির বস্তি । এখানকার বাসিন্দাদের নুন আনতে পান্তা ফুরনোর অবস্থা ৷ তাই বস্তির ছেলেমেয়েদের কাছে শিক্ষা বিলাসিতা মাত্র । কিন্তু এই বস্তির শিশুদের জীবনে শিক্ষার আলো আনতে মাজার শরিফের সুফি সাহেব তৈরি করেছিলেন একটি স্কুল ৷ সুফি সাহেবের মৃত্যু হয়েছে । সেই স্কুল আজও চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক বিকাশ প্রসাদ । মাত্র এক টাকা বেতনে পড়ার সুযোগ মেলে এই স্কুলে ৷

এক টাকা দিলে পড়ার সুযোগ মেলে এই স্কুলে (নিজস্ব ভিডিয়ো)

মূলত ফকির বস্তির বাসিন্দাদের পেশা ছিল ভিক্ষে করা কিংবা মাজার শরিফে চাদর ও অন্যান্য সামগ্রী বিক্রি করা । কেউ কেউ ছাতা সারাইয়ের কাজ করতেন । কিন্তু গরিব পরিবারগুলিতে শিক্ষার আলোয় পৌঁছয়নি । পাশাপাশি ওই এলাকায় কোনও সরকারি স্কুলও ছিল না । ফলে ওই পরিবারগুলির শিশুরা স্কুলে যাওয়ার আস্বাদ পায়নি । আর এটা অনুভব করেই 2008 সালে মাজার শরিফের সুফি সাহেব মাজারের পাশেই একটি স্কুল তৈরি করেছিলেন । যাতে ফকির বস্তির ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষার আলোয় আসতে পারে ।

অন্যদিকে ওই এলাকাতেই ছাত্রছাত্রীদের বিনা পয়সায় গৃহ শিক্ষকতার পাঠ দিতেন এলাকার শিক্ষিত যুবক বিকাশ প্রসাদ । তাই তাঁকে ডেকে সুফি সাহেব ওই স্কুলের দায়িত্ব তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিলেন । পরবর্তীকালে আপার প্রাইমারি স্কুলের অনুমোদন পায় স্কুলটি ৷ বর্তমানে প্রথম থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন হয় ওই স্কুলে । সেখানে এলাকারই শিক্ষিত যুবক-যুবতীরা ওই স্কুলে স্বল্প বেতনে কাজ করেন । ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে বেতন নেওয়া হয় মাত্র এক টাকা । পাশাপাশি কিছু সমাজসেবীর দানে ওই স্কুল কোনওরকম ভাবে চলছে ।

Teachers Day 2024
এক টাকায় সারাবছর স্কুলে পড়ে ছাত্রছাত্রীরা (নিজস্ব ছবি)

বিকাশ প্রসাদ বলেন, "ছাত্রছাত্রীদের কাছে এক টাকা এই কারণেই নেওয়া হয় কারণ তাদের অভিভাবকরা জানবেন যে ষোল আনা দিয়ে তিনি ছেলেমেয়েকে পড়াচ্ছেন । অর্থাৎ তাঁরও অধিকার থাকবে স্কুলে এসে কিছু বলার ।" স্কুলে বর্তমানে 80 জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে । তবে এই স্কুলে মেলে না মিড ডে মিল ৷ পাওয়া যায় না কোনওরকম সরকারি সুযোগ সুবিধা ৷ তাই অনেক ছাত্রছাত্রী পাশের সরকারি উর্দু স্কুলে চলে যাচ্ছে ৷

Teachers Day 2024
ক্লাসে পড়ায় মগ্ন ছাত্রছাত্রীরা (নিজস্ব ছবি)

বিকাশ প্রসাদের কথায়, "আমরা অনেক চেষ্টা করেও ছাত্রছাত্রীদের দুপুরের খাবারটুকু দিতে পারি না । পুরনিগম থেকে শুরু করে সরকারি বিভিন্ন জায়গায় আমরা আবেদন করেছিলাম । কিন্তু কেউ আমাদের কথা শোনেনি । খাবারের জন্য অনেক ছাত্রছাত্রী সরকারি স্কুলে চলে যাচ্ছে । আমরা কিছু বলতে পারি না ।"

Teachers Day 2024
ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষক বিকাশ প্রসাদ (নিজস্ব ছবি)

এখনও বাড়ি বাড়ি ঘুরে ছাত্রছাত্রীদের জোগাড় করে নিয়ে আসেন বিকাশ প্রসাদ । যারা পড়তে চায় না, স্কুলছুট এমন অনেক ছাত্রছাত্রীকে তিনি নিজে স্কুলে নিয়ে এসে শিক্ষার আলোয় নিয়ে আসছেন । শিক্ষক দিবসে এমন শিক্ষককে ইটিভি ভারতের শ্রদ্ধা ।

আসানসোল, 5 সেপ্টেম্বর: ডিসেরগড়ে দামোদর নদের পাশেই মাজার শরিফ । পাশেই বহু বছর আগে গড়ে উঠেছিল একটি ফকির বস্তি । এখানকার বাসিন্দাদের নুন আনতে পান্তা ফুরনোর অবস্থা ৷ তাই বস্তির ছেলেমেয়েদের কাছে শিক্ষা বিলাসিতা মাত্র । কিন্তু এই বস্তির শিশুদের জীবনে শিক্ষার আলো আনতে মাজার শরিফের সুফি সাহেব তৈরি করেছিলেন একটি স্কুল ৷ সুফি সাহেবের মৃত্যু হয়েছে । সেই স্কুল আজও চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক বিকাশ প্রসাদ । মাত্র এক টাকা বেতনে পড়ার সুযোগ মেলে এই স্কুলে ৷

এক টাকা দিলে পড়ার সুযোগ মেলে এই স্কুলে (নিজস্ব ভিডিয়ো)

মূলত ফকির বস্তির বাসিন্দাদের পেশা ছিল ভিক্ষে করা কিংবা মাজার শরিফে চাদর ও অন্যান্য সামগ্রী বিক্রি করা । কেউ কেউ ছাতা সারাইয়ের কাজ করতেন । কিন্তু গরিব পরিবারগুলিতে শিক্ষার আলোয় পৌঁছয়নি । পাশাপাশি ওই এলাকায় কোনও সরকারি স্কুলও ছিল না । ফলে ওই পরিবারগুলির শিশুরা স্কুলে যাওয়ার আস্বাদ পায়নি । আর এটা অনুভব করেই 2008 সালে মাজার শরিফের সুফি সাহেব মাজারের পাশেই একটি স্কুল তৈরি করেছিলেন । যাতে ফকির বস্তির ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষার আলোয় আসতে পারে ।

অন্যদিকে ওই এলাকাতেই ছাত্রছাত্রীদের বিনা পয়সায় গৃহ শিক্ষকতার পাঠ দিতেন এলাকার শিক্ষিত যুবক বিকাশ প্রসাদ । তাই তাঁকে ডেকে সুফি সাহেব ওই স্কুলের দায়িত্ব তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিলেন । পরবর্তীকালে আপার প্রাইমারি স্কুলের অনুমোদন পায় স্কুলটি ৷ বর্তমানে প্রথম থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন হয় ওই স্কুলে । সেখানে এলাকারই শিক্ষিত যুবক-যুবতীরা ওই স্কুলে স্বল্প বেতনে কাজ করেন । ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে বেতন নেওয়া হয় মাত্র এক টাকা । পাশাপাশি কিছু সমাজসেবীর দানে ওই স্কুল কোনওরকম ভাবে চলছে ।

Teachers Day 2024
এক টাকায় সারাবছর স্কুলে পড়ে ছাত্রছাত্রীরা (নিজস্ব ছবি)

বিকাশ প্রসাদ বলেন, "ছাত্রছাত্রীদের কাছে এক টাকা এই কারণেই নেওয়া হয় কারণ তাদের অভিভাবকরা জানবেন যে ষোল আনা দিয়ে তিনি ছেলেমেয়েকে পড়াচ্ছেন । অর্থাৎ তাঁরও অধিকার থাকবে স্কুলে এসে কিছু বলার ।" স্কুলে বর্তমানে 80 জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে । তবে এই স্কুলে মেলে না মিড ডে মিল ৷ পাওয়া যায় না কোনওরকম সরকারি সুযোগ সুবিধা ৷ তাই অনেক ছাত্রছাত্রী পাশের সরকারি উর্দু স্কুলে চলে যাচ্ছে ৷

Teachers Day 2024
ক্লাসে পড়ায় মগ্ন ছাত্রছাত্রীরা (নিজস্ব ছবি)

বিকাশ প্রসাদের কথায়, "আমরা অনেক চেষ্টা করেও ছাত্রছাত্রীদের দুপুরের খাবারটুকু দিতে পারি না । পুরনিগম থেকে শুরু করে সরকারি বিভিন্ন জায়গায় আমরা আবেদন করেছিলাম । কিন্তু কেউ আমাদের কথা শোনেনি । খাবারের জন্য অনেক ছাত্রছাত্রী সরকারি স্কুলে চলে যাচ্ছে । আমরা কিছু বলতে পারি না ।"

Teachers Day 2024
ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষক বিকাশ প্রসাদ (নিজস্ব ছবি)

এখনও বাড়ি বাড়ি ঘুরে ছাত্রছাত্রীদের জোগাড় করে নিয়ে আসেন বিকাশ প্রসাদ । যারা পড়তে চায় না, স্কুলছুট এমন অনেক ছাত্রছাত্রীকে তিনি নিজে স্কুলে নিয়ে এসে শিক্ষার আলোয় নিয়ে আসছেন । শিক্ষক দিবসে এমন শিক্ষককে ইটিভি ভারতের শ্রদ্ধা ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.