জলপাইগুড়ি, 21 নভেম্বর: এ কী কাণ্ড ! রেলের চুরি যাওয়া সম্পত্তির হদিশ মিলল নাকি শ্মশানে । মাটি খুঁড়তেই চক্ষু চড়কগাছ আরপিএফের । ঘটনাটি ঘটেছে কোচবিহার জেলার সাহেবগঞ্জ থানা এলাকার ত্রিমোহনী গ্রামে ৷
শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি ঘটনা ৷ রেল সূত্রে খবর, রেললাইনের অংশ কেটে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল । সেই রেললাইনের অংশ উদ্ধার হল কোচবিহারের এক শ্মশান থেকে । ত্রিমোহনী গ্রামে আরপিএফের ক্রাইম ইন্টিলিজেন্স ব্রাঞ্চের (সিআইবি) জওয়ানরা অভিযান চালিয়ে রেলের ওই চুরি যাওয়া সম্পত্তির হদিশ পান । এরপর গ্রামের মানুষদের বুঝিয়ে শ্মশান ঘাট থেকে রেললাইনের অংশ তুলে আনেন ।
আরপিএফের তরফে জানা গিয়েছে, গত 7 নভেম্বর নিউ কোচবিহার রেলওয়ে স্টেশন আরপিএফের কাছে খবর আসে, বামনহাট রেলওয়ে স্টেশন থেকে রেলের পাত চুরি গিয়েছে । এরপরেই আরপিএফ ঘটনার তদন্ত শুরু করে । রেলের সম্পত্তির চুরির ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব এসে পরে আরপিএফ ইনস্পেকটর আদিত্য কুমার মীনার উপর । তারপরেই বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হয় ।
তদন্ত নেমে বামনহাট রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে এক চোরকে ধরে ফেলে আরপিএফের ক্রাইম ইন্টিলিজেন্স ব্রাঞ্চ । ধৃতের নাম হরিপদ বর্মন । তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরপিএফ জানতে পারে, বামনহাট স্টেশন থেকে দশ কিলোমিটার দূরে শ্মশানের কাজের জন্য সেখানকার ঠিকাদারকে তিনি রেলের পাত বিক্রি করে দিয়েছিলেন । এরপরেই ধৃতের কথা মত সাহেবগঞ্জ থানা এলাকার ত্রিমহনী গ্রামে যায় আরপিএফ ৷ সেখান গিয়ে তাদের চোখ কপালে ওঠে ৷
আরপিএফ দেখে, শ্মশানে মৃতদেহ দাহ করার জন্য যে লোহার অ্যাঙ্গেল লাগানো হয়, তার জায়গায় রেলের চুরি যাওয়ায় পাত লাগানো রয়েছে । এরপর গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন আরপিএফ ইন্সপেক্টর আদিত্য কুমার মীনা । শ্মশান থেকে রেলের পাত তুলে নিয়ে আসা হয় নিউ কোচবিহার আরপিএফ পোস্টে ।
আরপিএফের ক্রাইম ইন্টিলিজেন্স ব্রাঞ্চের ইন্সপেক্টর আদিত্য কুমার মীনা বলেন, "রেলের পাত চুরি করার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয় ৷ তার থেকেই জানতে পারি, রেলের পাত চুরি করে শ্মশানের মৃতদেহ দাহ করার পরিকাঠামো নির্মাণের কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল । ঠিকাদারকে বিক্রি করবে বলেই রেলের পাত চুরি করা হয়েছিল । আমরা গ্রামবাসীদেরকে বুঝিয়ে নির্মীয়মান শ্মশান থেকে লোহার পাত তুলে এনেছি ।" রেলের সম্পত্তি চুরি অভিযোগে ধৃতের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে আরপিএফ ।