বুনিয়াদপুর (দক্ষিণ দিনাজপুর), 25 অক্টোবর: সুকান্ত মজুমদার ৷ পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সভাপতি ৷ তিনি বলছেন, ‘‘সুকান্ত মজুমদার গুন্ডামি করতে শুরু করলে পিএইচডি করা গুন্ডার গুন্ডামি সামলানোর ক্ষমতা আপনাদের নেই ৷’’
শুক্রবার এই হুঁশিয়ারি শোনা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রী পরিষদের সদস্য সুকান্তর মুখে ৷ একথা তিনি বলেছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরে বিজেপির এক সভা থেকে ৷ যেখানে দাঁড়িয়ে তিনি এই কথা বলেন, সেটা তাঁর সংসদীয় এলাকা বালুরঘাটের অন্তর্গত ৷
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে যে কেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতির মুখে এমন হুঁশিয়ারি শোনা গেল ?
আসলে এ দিন বুনিয়াদপুরে বিজেপির পক্ষ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয় ৷ মিছিল শেষে গঙ্গারামপুর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক বা এসডিপিও-র কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে বিজেপি ৷ দক্ষিণ দিনাজপুরের এই মহকুমায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অভিযোগ তুলেই এ দিন এই কর্মসূচি করে গেরুয়া শিবির ৷
সেই কর্মসূচিতে বক্তৃতা দিতে গিয়ে গঙ্গারামপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার দায় সুকান্ত মজুমদার চাপিয়ে দেন স্থানীয় এসডিপিও-র উপর ৷ তাঁর অভিযোগ, গঙ্গারামপুরের এসডিপিও একের পর এক অপদার্থতার পরিচয় দিয়ে গিয়েছেন ৷ আদিবাসী নাবালিকাকে ধর্ষণের ঘটনাও ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল পুলিশ ৷ বিজেপি ছিল বলে বিষয়টি নিয়ে হইচই হয়েছিল ৷
সেই প্রসঙ্গে তিনি টেনে আনেন মাস কয়েক আগে হয়ে যাওয়া লোকসভা নির্বাচনের কথা ৷ যে ভোটে বালুরঘাট থেকে নিজের সাংসদ পদ ধরে রাখতে লড়াইয়ে নেমেছিলেন সুকান্ত মজুমদার ৷ তাঁর বিপক্ষে ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের বিপ্লব মিত্র ৷ সুকান্তর অভিযোগ, বিপ্লব মিত্রকে ভোটে জেতাতে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন এসডিপিও ৷ তার পর কটাক্ষ করে উল্লেখ করেন যে তাঁর মতো ‘সাধারণ ব্যক্তিকে’ হারানোর জন্য বালুরঘাটে চারবার সভা করতে এসেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷
তিনি আরও অভিযোগ করেন যে 2026 সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির মনোবল ভাঙতে কর্মীদের মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে ৷ তার পরও বিজেপিকে আটকানো যাবে না বলে তাঁর দাবি ৷ সুকান্তর বক্তব্য, বিজেপি ছাব্বিশেই ক্ষমতায় আসবে, পশ্চিমবঙ্গে সরকার গড়বে ৷
পাশাপাশি তিনি দাবি করেন যে পুলিশি মদতে বিরোধীদের উপর গুন্ডামি করা হচ্ছে ৷ সেই গুন্ডামির পালটা জবাব দিতেই নিজের গুন্ডামির প্রসঙ্গ টানেন সুকান্ত মজুমদার ৷ বালুরঘাটের সাংসদ বলেন, ‘‘সুকান্ত মজুমদার গুন্ডামি করতে শুরু করলে পিএইচডি করা গুন্ডার গুন্ডামি সামলানোর ক্ষমতা আপনাদের নেই ৷...আপনারা যদি গুন্ডামি বন্ধ করতে না-পারেন, তাহলে আমাকে গুন্ডামি করতে নামতে বাধ্য করবেন ৷’’
তাঁর আরও হুঁশিয়ারি, ‘‘তাঁবেদারি করতে হলে পুলিশের উর্দি খুলে তৃণমূলের ঝান্ডা ধরে রাস্তায় আসুন, আমরা বুঝিয়ে দেব কত ধানে কত চাল ৷...পয়সা রোজগার করতে হলে তৃণমূল করুন, পুলিশের চাকরি করতে যাবেন না ৷’’ এমনকী এসডিপিও-র কার্যালয় থেকে জাতীয় পতাকা খুলে তৃণমূলের পতাকা লাগানোর ‘পরামর্শও’ দেন তিনি ৷
এ দিনের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন গঙ্গারামপুরের বিধায়ক সত্যেন রায়, তপনের বিধায়ক বুধরায় টুডু, বিজেপির জেলা সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক বাপি সরকার প্রমুখ ।