কলকাতা, 5 ডিসেম্বর: নির্বাচন পরবর্তী সময় থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছিল । সবচেয়ে বড় অভিযোগ ছিল, যোগাযোগ না-রাখার । বহু ক্ষেত্রে সাংসদের আচরণে অপমানিতও হয়েছেন কেউ কেউ । আর এই অবস্থায় দলেরই ছয় বিধায়ক সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিলেন।
চিঠিতে লিখেছেন, তাঁদের বিধানসভা এলাকায় সমান্তরাল সংগঠন গড়ছেন সাংসদ মহুয়া মৈত্র । সেই সংগঠনের মাধ্যমেই সমস্ত কাজ করছেন তিনি । এমনকি এই বিধায়করা সাংসদকে স্থানীয় সংগঠনের কাজে আমন্ত্রণ করলেও, তিনি সময় দেন না । সাংসদ দিল্লির কাজে বেশি ব্যস্ত থাকেন । নিজের সংসদীয় এলাকায় সময় দেন কম । মহুয়ার বদলে যে কাউকে সভাপতি করা হোক, তা মেনে নিতে প্রস্তুত এই বিধায়করা ।
যতদূর জানা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে সই রয়েছে, চোপড়ার বিধায়ক রুকবানুর রহমান, করিমপুরের বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহরায়, নাকাশিপাড়ার বিধায়ক কল্লোল খাঁ, পলাশিপাড়ার বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য, কৃষ্ণনগর দক্ষিণের বিধায়ক উজ্জ্বল বিশ্বাস এবং কালীগঞ্জের বিধায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদের । তবে কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল রায় এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেননি । জানা গিয়েছে, দলনেত্রীর পাশাপাশি এই চিঠি দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির কাছেও পাঠানো হয়েছে । যদিও এই নিয়ে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খোলেননি ।
প্রসঙ্গত, শেষ রদবদলের সময় মহুয়াকে কৃষ্ণনগরে তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলা সভাপতি করেন দলনেত্রী মমতা । অন্যদিকে, রুকবানুর সাংগঠনিক জেলা চেয়ারম্যান । সেখানে দাঁড়িয়ে মহুয়ার বিরুদ্ধে রুকবানুর-সহ ছয় বিধায়কের নালিশের বিষয়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।
বিধায়কের অভিযোগ, সম্প্রতি 178 জন বুথ সভাপতি এবং 17 জন অঞ্চল সভাপতিকে বদল করেছেন মহুয়া । কিন্তু তা নিয়ে বিধায়কদের কিছু জানাননি তিনি, চেয়ারম্যানদেরও কিছু জানাননি । এমনকি বিরোধী গোষ্ঠীর নেতাদেরই বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে । এর ফলে সাংগঠনিক জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দল ।
কৃষ্ণনগরে এ ধরনের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঘটনা প্রথম নয় । অতীতেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের একাধিক খবর প্রকাশ্যে এসেছে । যেহেতু এই মুহূর্তে মহুয়া মৈত্র দিল্লিতে রয়েছে তাই তাঁর প্রতিক্রিয়া এই নিয়ে আলাদা করে জানা যায়নি । তবে রাজনৈতিক মহল তাকিয়ে রয়েছে, এই নিয়ে দলনেত্রী কী ব্যবস্থা নেন সেদিকে ।