কৃষ্ণনগর, 17 অক্টোবর: কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে, ভিডিয়োগ্রাফি করে ময়নাতদন্ত করা হল কৃষ্ণনগরে খুন হওয়া তরুণীর ৷ এই ঘটনার তদন্তের জন্য সিট অর্থাৎ স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম গঠন করা হয়েছে ৷ তদন্তে সিআইডি-রও সাহায্য নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার । তিনি বলেন, ময়নাতদন্তের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট হাতে এলেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্টভাবে বলা যাবে ৷ ঘটনায় অভিযুক্ত তরুণীর 'প্রেমিক'কে সাতদিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত ৷
এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার জানান, "জেলা পুলিশ গোটা বিষয়টির দ্রুতগতিতে তদন্ত শুরু করেছে । ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে । মূল অভিযুক্তকেও গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে । তাঁর সাতদিনের পুলিশি হেফাজতের জন্য আমরা যে আবেদন জানিয়েছিলাম, তা মঞ্জুর করেছে আদালত ৷ তদন্তের জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে ৷ আমরা সকলেই মৃত তরুণীর পরিবারের সঙ্গে রয়েছি । তদন্ত যাতে দ্রুতগতিতে সম্পূর্ণ করা যায়, তার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে ।"
মঙ্গলবার রাতে কৃষ্ণনগরের কোতোয়ালি থানার অন্তর্গত আশ্রমপাড়া এলাকার একটি পুজো মণ্ডপে এক তরুণীর অর্ধদগ্ধ দেহ বিবস্ত্র অবস্থায় উদ্ধার করা হয় । এরপরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা । ওই তরুণীর পরিবারের অভিযোগ, তাদের মেয়েকে ধর্ষণ করে, খুন করা হয়েছে এবং তারপরে দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ।
এই খবর জানাজানি হতেই কৃষ্ণনগরের বাসিন্দারা-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও কোতোয়ালি থানার সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন । এই ঘটনার কথা জানিয়ে কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুল্যাণ মন্ত্রীকে চিঠি লেখেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ৷ তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন ৷
তরুণীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ধর্ষণ ও পোড়ানোর অভিযোগ-সহ একাধিক মামলা রুজু করে । এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত তরুণীর প্রেমিক হিসেবে পরিচিত এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ । পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁর মা-বাবা এবং দুই বন্ধুকে আটক করা হয় । আজ সকালে ধৃতকে কৃষ্ণনগর জেলা আদালতে পেশ করা হয় ৷ তাঁকে 7 দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে ৷
এদিকে, পরিবারের আবেদন মেনে আজ কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মৃত তরুণীর দেহের ময়নাতদন্ত করা হয় । গোটা প্রক্রিয়ার ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়েছে ৷ এদিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার এবং ডিআইজি (সিআইডি) সোমা দাস । তাঁদের সঙ্গে ছিলেন কৃষ্ণনগর জেলা পুলিশ সুপার অমরনাথ কে এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিত কুমার । প্রায় দশ মিনিট ধরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন তাঁরা । এরপর কোতোয়ালি থানায় এসে সাংবাদিক সম্মেলন করেন সুপ্রতিম সরকার ।