শিলিগুড়ি, 10 মে: তীব্র পানীয় জলের সমস্যার সম্মুখীন হতে চলেছে শিলিগুড়ির মানুষ ! তিস্তার বাঁধ সংস্কার-সহ শিলিগুড়ি সংলগ্ন ফুলবাড়ির পানীয় জল প্রকল্প সংলগ্ন এলাকা থেকে পলি সরানোর কাজ শুরু হয়েছে ৷ তার জেরে শিলিগুড়ি শহরে সংকট দেখা দিতে পারে পানীয় জলের ৷ শুক্রবার থেকেই এই দু’টি সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে ৷ এ নিয়ে পৌরনিগমের তরফে আগাম সতর্কতা জারি করা হয়েছে ৷ চালু করা হয়েছে কন্ট্রোল রুম ৷ পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন শিলিগুড়ি পৌরনিগমের মেয়র গৌতম দেব ৷
মেয়র জানিয়েছেন, "পরিস্থিতি মোকাবিলায় সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ৷ কোথাও যাতে পানীয় জলের সমস্যা দেখা না দেয়, সেক্ষেত্রে আগাম ব্যবস্থা করেছি আমরা ৷ 21টি ট্যাঙ্কারে পানীয় জল সরবরাহ করা হবে ৷ পাশাপাশি পাঁচটি বরোর মাধ্যমে তিন হাজার করে পানীয় জলের পাউচ বণ্টন করা হবে ৷" কিন্তু, মেয়রের অভয়বাণীতেও উদ্বেগে রয়েছে শহরবাসী ৷
বেশ কয়েক বছর যাবৎ শহরে জলকষ্ট অব্যাহত । কিছু ওয়ার্ডে জলের ট্যাঙ্ক পাঠানো হয় প্রতিনিয়ত ৷ এবার ফের প্রায় একমাসের জন্য জল সমস্যায় পড়তে চলেছে শিলিগুড়ির মানুষজন ৷ সম্প্রতি সিকিমে হড়পাবানের জেরে তিস্তা নদীর বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৷ অন্যদিকে, পলি মাটিও জমে গিয়েছে নদী-সহ লিঙ্ক ক্যানালেও ৷ তাই বর্ষার আগেই বাঁধ মেরামতের পাশাপাশি পলি পরিষ্কার করা বাধ্যতামূলক ৷ তা না হলে, বর্ষার সময় বাঁধ আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে ৷ তাতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন গৌতম দেব ৷ তাই মেরামতির কারণে, তিস্তা থেকে জল তোলা সম্ভব নয় বলে জানান তিনি ৷
ইতিমধ্যে, দ্রুত ওই কাজ করার জন্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি ও সেচ দফতরকে অনুরোধ করেছেন মেয়র ৷ পাশাপাশি 6 কোটি 9 লক্ষ টাকা দিয়ে যে বিকল্প জলাশয় বানানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল, তার কাজও এক মাসের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ মেয়র গৌতম দেব জানিয়েছেন, "জলের সমস্যার জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী শহরবাসীর কাছে ৷ কিন্তু, আমরা রাস্তায় থাকব ৷ কোথাও জলের অভাব হবে না ৷ আমরা ট্যাঙ্ক, পাউচ পাঠিয়ে দেব ৷"
তা সত্ত্বেও, আগামী সোমবারের থেকে শিলিগুড়ির নাগরিকদের কাছে নির্দিষ্ট পরিমাণ জল পৌঁছাবে না ৷ তাই মানুষের সমস্যার কথা চিন্তা করে গৌতম দেব জানিয়েছেন, "জনস্বাস্থ্য কারিগরি ও সেচ দফতর কাজ শেষ করতে একমাস সময় চাইলেও, আমরা বলেছি সম্ভব হলে দিনরাত কাজ করে 15 দিনের মধ্যে কাজ শেষ করা হোক ৷ এদিকে আমরা জলাশয়ের কাজের অগ্রগতিও দেখতে যাব ৷" এই বিষয়ে বিজেপির শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক নান্টু পাল বলেন, "বিজ্ঞপ্তি জারি করে নিজেদের দায় সেরে দিচ্ছে এই বোর্ড ৷ এই কাজ আরও আগে করার প্রয়োজন ছিল ৷ এই গরমে এমনিতেই পানীয় জলের সংকট ৷ তার মধ্যে প্রায় একমাস বন্ধ থাকলে শহরবাসীর ব্যাপক সমস্যা হবে ৷"
আরও পড়ুন: