দার্জিলিং/জলপাইগুড়ি, 27 মে: ঘূর্ণিঝড় রেমালের দাপটে বিধ্বস্ত জনজীবন। রবিবার মাঝরাত থেকে টানা বৃষ্টি শুরু হয়েছে পাহাড়েও। তবে সমতলে সোমবার সকাল থেকে বৃষ্টি হয়নি। দার্জিলিং ও কালিম্পংয়েও বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হয়েছে। তবে দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলায় কমলা সতর্কতা জারি করেছে ওই দুই জেলার প্রশাসন। অন্যদিকে, সিকিমে রবিবার থেকে টানা বৃষ্টির জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গ্যাংটকের সঙ্গে উত্তর সিকিমের যোগাযোগের অন্যতম 'টুং নদী'র সেতু।
উত্তর সিকিমের টুং নদীর উপর সেতু টানা বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত। এর আগে সিকিমে হড়পা বানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল টুং নদীর উপর থাকা কাঠের ওই সেতু। পরে সেনার তরফে বেইলি ব্রিজ বানানো হয়। কিন্তু সম্প্রতি বেইলি ব্রিজের প্লেট খুলে নেওয়া হয়েছিল। এদিকে, পাহাড়ে রবিবার টানা বৃষ্টির ফলে নদীর জলের স্তর বৃদ্ধি পায়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় টুং নদীর উপর থাকা ওই সেতু। ওই সেতু দিয়ে প্রথমে ঝুঁকি নিয়ে পর্যটক বোঝাই গাড়ি চলাচল করলেও পরে সেতুর উপর দিয়ে জল বইতে শুরু করে। আপাতত ওই সেতু দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। পর্যটকদের বিকল্প রাস্তা দিয়ে চলাচলের নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। যদিও দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলায় পর্যটকদের আটকে থাকার কোন খবর নেই। সিকিমেও অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: গাছের ডাল ভেঙে বৃদ্ধার মৃত্যু মৌসুনি দ্বীপে, রেমালের তাণ্ডব কাড়ল আরও এক প্রাণ
রেমাল ঘুর্ণিঝড়ের জেরে উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় লাল সতর্ক জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। মঙ্গলবারও উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার জেলায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এই জেলা গুলোতে লাল সতর্কতাও জারি করেছে আবহাওয়া দফতর ৷ কমলা সতর্কতা জারি হয়েছে দার্জিলিং, কালিম্পং, উত্তর দিনাজপুর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে। এই দুই দিন বৃষ্টির সঙ্গে মালদা, উত্তর দিনাজপুর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে ঝোড়ো হাওয়ার পুর্বাভাস রয়েছে। বৃষ্টিপাতের সঙ্গেই 55 কিলোমিটার বেগে ঝোড়া হাওয়ার পুর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। ইতিমধ্যেই জলপাইগুড়ি সেচ দফতরের পক্ষ থেকে জলপাইগুড়ির জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তা, জলঢাকা, ডায়না-সহ পাহাড় থেকে নেমে আসা নদী গুলোর পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে। জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রত্যকটি ব্লকের বিডিওকে এলার্ট করা হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য তৈরি রয়েছে জেলা প্রশাসন।
জলপাইগুড়ি আঞ্চলিক আবহাওয়া দফতর সুত্রে জানানো হয়েছে, সোমবার রাত থেকে সিকিমের গ্যংটক, পাকইং, মঙ্গন, নামচি জেলায় তেমন বৃষ্টিপাত হয়নি। ফলে তিস্তা নদীর জলস্তর বাড়েনি। রাতে আলিপুরদুয়ারের বারোবিশাতে 66.2 মিলিমিটার, শিলিগুড়ির চম্পাসারিতে 64.6 মিলিমিটার ও শিলিগুড়িতে 74.8 মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জল থইথই মহানগর, বিভিন্ন জায়গায় গাছ উপড়ে বিপর্যস্ত জনজীবন