শিলিগুড়ি, 10 জুলাই: ভারী থেকে অতিভারী বৃ্ষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ ৷ টানা বৃষ্টিতে ধস নেমেছে পাহাড়ের একাধিক এলাকায় ৷ তিস্তায় তলিয়ে গেছে বাংলা-সিকিম লাইফ লাইন 10 নম্বর জাতীয় সড়কের বেশ কিছু অংশ ৷ ফলে বন্ধ 10 নম্বর জাতীয় সড়ক ৷ আর এই কারণে প্রতিদিন প্রায় 100 কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে সিকিম সরকারের । এমন দাবি করেছেন সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং।
10 নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ থাকায় আরও একবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি । শিলিগুড়ি থেকে কালিম্পং, দার্জিলিং ও সিকিম যোগাযোগের মূল ভরসা হল এই সড়ক । কিন্তু টানা ভারী বৃষ্টির জেরে সড়কের একাধিক জায়গা ধসে গিয়েছে ৷ সেকারণে বিগত প্রায় দশ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে জাতীয় সড়কটি । বন্ধ রয়েছে সমস্তরকম যান চলাচল । বিকল্প পথ খোলা থাকলেও সেদিক দিয়ে ভারী যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে । এতে সিকিমের পরিস্থিতি আরও বেশি উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ।
জাতীয় সড়কটি বন্ধ থাকায় কালিম্পং জেলার দিকে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়েছে । দাঁড়িয়ে রয়েছে সারি সারি লাইন দিয়ে কয়েকশো গাড়ি। মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং বলেন, "10 নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ থাকায় সিকিমের ট্রাফিক ব্যবস্থাতেও প্রভাব পরেছে । আমরা প্রতিদিন সিকিমে প্রবেশের ক্ষেত্রে যে টোল বা কর আদায় করি তা সরাসরি রাজ্যের রাজস্বের ভান্ডারে আসে ৷ এই মুহূর্তে সেটাও পাওয়া যাচ্ছে না। তাতে প্রায় প্রতিদিন 100 কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে সরকারের।"
সম্প্রতি 10 নম্বর জাতীয় সড়কের পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ, সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রী নীতিন গড়কড়ির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন প্রেম সিং তামাং। দ্রুত কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে সড়ক মেরামত ও সংস্কারের দাবি জানান তিনি। প্রয়োজনে সাধারণ মানুষ এবং সেনাকে ব্যবহার করা হোক বলেও জানান তিনি।
কেন্দ্র দ্রুত পদক্ষেপ না-করলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে প্রধানমন্ত্রী ও নীতিন গড়কড়িকে জানিয়েছেন সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী। চিকেন নেক শিলিগুড়ি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই এলাকা দিয়ে কালিম্পং হয়ে বাংলা-সিকিম সীমান্তের পাশাপাশি ইন্দো-চিন সীমান্ত-সহ উত্তর-পূর্ব ভারতে যাতায়াতের অন্যতন সড়কপথ 10 নম্বর জাতীয় সড়ক। ফলে সড়কটি বন্ধ থাকায় আর্থ-সামাজিক দিক দিয়ে ক্ষতির মুখে পড়ছে সিকিম।
সিকিমের মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তা ও সিকিমের সাংসদ একইভাবে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে কাজে লাগানোর জন্য দাবি জানান। সম্প্রতি অক্টোবরের হড়পা বানের জন্য সিকিমে তিস্তা নদীখাত 8 থেকে 10 মিটার বেড়ে গিয়েছে । তাতে নদীর স্রোত আরও বেশি জাতীয় সড়কের ক্ষতি করছে ।