বৈদ্যবাটি, 30 জুলাই: তারকেশ্বরে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনার কবলে পুণ্যার্থীরা ৷ সোমবার একটি হোটেলের ছাদের চাঙর ভেঙে মাথায় পড়ে আহত মহিলা-সহ ছ'জন । ঘটনাটি ঘটেছে বৈদ্যবাটি নিমাইতীর্থ ঘাটের কাছে । আহতদের শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ৷ এই ঘটনার পরই পুলিশ ও বৈদ্যবাটি পুরসভার আধিকারিকরা দোকানে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন ।
জানা গিয়েছে, আহতরা সকলেই পশ্চিম মেদিনীপুরের ক্ষীরপাইয়ের বাসিন্দা । তাঁরা বৈদ্যবাটি আসে তারকেশ্বরে যাওয়ার জন্য । তারা মোট ন'জনের একটি দল ছিল । গঙ্গার ঘাট থেকে জল নেওয়ার আগে একটি হোটেলে বসে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন সকলে । হঠাতই হোটেলের ছাদের প্লাস্টারের কিছুটা ভেঙে পড়ে । তাতেই ছ'জনের মাথায় ও গায়ে আঘাত লাগে । তাঁদের মধ্যে তিনজনের মাথা ফেটে যায় । একজন যুবতী গুরুতর চোট পান । জখমদেরকে তড়িঘড়ি শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । সেখানেই তাঁদের চিকিৎসা করা হয় ।
ঘটনার পর বাধ্য হয়ে তারকেশ্বর যাত্রীরা শিবতীর্থে না গিয়ে বাড়ি ফিরে যান । ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে এই ধরনের আরও বাড়ি থাকলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন পৌরসভার আধিকারিকরা । পুণ্যার্থী বুবাই বাগ বলেন, "আমরা 9 জন বন্ধু-বান্ধবী মিলে তারকেশ্বরে জল ঢালতে যাওয়ার জন্য বেরিয়েছিলাম । সকালে বেরিয়েছি তাই খিদে পেয়ে গিয়েছিল । নিমাইতীর্থ ঘাটের কাছে একটি হোটেলে খেতে ঢুকেই বিপত্তি হয় । 9 জন দুটো টেবিলে বসেছিলাম । হঠাতই ছাদ থেকে চাঙর ভেঙে মাথার উপর পড়ল । আমাদের এক বান্ধবী পাপিয়া মণ্ডল গুরুতর আহত হয় । আরও কয়েকজনের মাথায় চোট লাগে ।"
আহতদের এক আত্মীয় বৈদ্যবাটির বাসিন্দা সোমনাথ নন্দীর কথায়, "যে ভাবে এই ধরনের ঘটনা ঘটল, তাতে প্রশাসনের এ বিষয়ে আরও সজাগ হওয়া উচিত । যেভাবে ভঙ্গ বাড়িতে ব্যবসা চলছিল সেটায় নজর দেওয়া উচিত । কোনও দোকানদার এই আহতদের সাহায্যের জন্য পাশে এল না । এইরকম করে হোটেল ব্যবসা কী করে চলছে ? কেন প্রশাসন নজর দিচ্ছে না ? আমরা চাই এদের মতো আর অন্য কোনও পুণ্যার্থীকে যেন এই ধরনের সমস্যার মুখে পড়তে না হয় ।"
শ্রাবণী মেলা উপলক্ষে গত দু'সপ্তাহ ধরে শেওড়াফুলি ও বৈদ্যবাটি বিভিন্ন ঘাট থেকে জল নিয়ে তারকেশ্বরের উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছেন পুণ্যার্থীরা । তার আগে বৈদ্যবাটি আসে পাশে থাকা-খাবারের হোটেল ও দোকান থেকে অনেকে খাওয়াদাওয়া সেরে নিচ্ছেন ৷ এখানে কিছু স্থায়ী ও অস্থায়ী খাবারের দোকান রয়েছে । অভিযোগ, এই দোকানগুলির মধ্যে কিছু দোকান অনুমতি নিয়েই চালানো হচ্ছে । আবার কেউ কেউ বেআইনি ভাবেও ব্যবসা চালাচ্ছে । যদিও যে হোটেলে দুর্ঘটনা ঘটেছে তার ব্যবসার অনুমতি আছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখছে পুরসভা । কোনও রকম সমস্যা দেখলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ প্রশাসন ।