মালদা, 3 অক্টোবর: পুজোর মুখে জলস্তর বাড়ছে মহানন্দার ৷ নদীর জল ঢুকে পড়েছে পুরাতন মালদা শহরের অসংরক্ষিত এলাকার ওয়ার্ডগুলিতে ৷ এলাকার বাসিন্দারা নিজেদের জিনিসপত্র নিয়ে নিরাপদ জায়গায় সরে যেতে শুরু করেছেন ৷ এখনও পুরসভার তরফে মাথা গোঁজার মতো ব্যবস্থা করা হয়নি বলে অভিযোগ তাঁদের ৷ যদিও দুর্গতদের জন্য দ্রুত ত্রাণ শিবির খোলার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুরাতন মালদা পুর কর্তৃপক্ষ ৷
গত কয়েকদিন ধরেই ক্রমাগত বাড়ছিল জেলার প্রধান দুই নদী গঙ্গা ও ফুলহরের জল ৷ এবার বাড়তে শুরু করেছে মহানন্দার জলস্তরও ৷ বৃহস্পতিবার দুপুরে মহানন্দার জলস্তরের উচ্চতা ছিল 20.87 মিটার ৷ অর্থাৎ আর 13 সেন্টিমিটার জল বাড়লেই মহানন্দা তার বিপদসীমা 21.00 মিটার উচ্চতা ছুঁয়ে ফেলবে ৷ এ দিন গঙ্গা-ফুলহরের জল নতুন করে আর বাড়েনি ৷ গঙ্গা 24.87 মিটার উচ্চতায় স্থিতিশীল হয়েছে ৷ এখনও নদী তার বিপদসীমা থেকে 18 সেন্টিমিটার উঁচু দিয়ে বইছে ৷ জল কমছে ফুলহরের ৷ নদী এ দিন তার বিপদসীমা 27.43 মিটার থেকে 48 সেন্টিমিটার নীচের উচ্চতায় রয়েছে ৷
এরই মধ্যে পুরাতন মালদা পুরসভার মহানন্দা নদী সংলগ্ন 7, 9 ও 20 নম্বর ওয়ার্ডের অসংরক্ষিত এলাকায় জল ঢুকে গিয়েছে ৷ 9 নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সফিক শেখের কথায়, "তিনদিন ধরে নদীর জল বাড়ছে ৷ শেষ পর্যন্ত এলাকায় জল ঢুকে পড়েছে ৷ ঘরেও জল ঢুকে গিয়েছে ৷ ঘর খালি করে দিয়েছি ৷ বাড়ির পাশেই একটি স্কুল রয়েছে ৷ স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছে, আরও দু'তিনদিন পর স্কুল ফাঁকা হবে ৷ এই দু'তিনদিন থাকব কোথায় জানি না ৷ জলে বিষাক্ত সাপ-সহ অন্যান্য পোকামাকড় ঘুরে বেড়াচ্ছে ৷ এই পরিস্থিতিতে সরকারি সহায়তা খুব প্রয়োজন ৷"
20 নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইসলাম শেখ বলছেন, "ক'দিন ধরে নদীর জল বাড়তে বাড়তে শেষ পর্যন্ত এলাকায় ঢুকে গিয়েছে ৷ এলাকার প্রায় 250টি বাড়ি ডুবে গিয়েছে ৷ আমরা জিনিসপত্র বাঁচাতে ব্যস্ত ৷ আমাদের জন্য কোনও স্কুলের ব্যবস্থা এখনও করা হয়নি ৷ শুনলাম, স্কুলে পরীক্ষা চলছে ৷ পরীক্ষা শেষ না-হলে স্কুলে আমরা ঢুকতে পারব না ৷ পরীক্ষা না-থাকলে এতদিনে স্কুলেই চলে যেতাম ৷"
পুরাতন মালদা পৌরসভার চেয়ারম্যান কার্তিক ঘোষের বক্তব্য, "আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রেখে চলছি ৷ দুর্গতদের জন্য যাতে দ্রুত ফ্লাড সেন্টার তৈরি করা যায় তা দেখা হচ্ছে ৷ দু'একদিনের মধ্যেই সবাইকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া হবে ৷"