অণ্ডাল, 4 অগস্ট: আশঙ্কাই সত্যি হল ৷ ডিভিসির ছাড়া জলের পরিমাণ এক লক্ষ কিউসেক ছাড়িয়েছে। যার জেরেই ডুবল অণ্ডালের একাধিক গ্রাম ৷ আতঙ্কিত দামোদর তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা। দামোদরের জলে অণ্ডালের রামপ্রসাদপুর, কুটিরডাঙ্গা-সহ বিস্তীর্ণ এলাকাও জলমগ্ন। রবিবার ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে ওই এলাকা পরিদর্শন করলেন অণ্ডালের বিডিও। আর পরিদর্শনের পর বিডিও দেবাঞ্জন দত্ত বলেন, "অণ্ডাল ব্লক প্রশাসন সমস্ত রকমভাবেই প্রস্তুত। বেশ কয়েকটি জায়গায় ত্রাণ শিবির তৈরি করা হয়েছে। এলাকা জলমগ্ন হলেই বাসিন্দাদের সেই নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হবে।"
শনিবার কিছু অংশে দামোদরের জল ঢুকেছিল। রবিবার সেই জল অনেকটাই নেমে গিয়েছে। তবে ডিভিসি'র জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়লে ফের জল ঢুকতে পারে এলাকায়। বিডিওর কথায়, "আমরা এই বিপর্যয় মোকাবিলা করতে একেবারেই প্রস্তুত।" উল্লেখ্য, এই এলাকায় দামোদরের চরে বহু জনবসতি গড়ে উঠেছে বিগত বেশ কয়েক দশক আগে থেকেই। তারা মূলত দামোদরের চরে পরিবার নিয়ে বসবাস করে ৷ কৃষিকাজই হল এদের মূল পেশা। অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে সেই এলাকাগুলিও এই মুহূর্তে জলের তলায়।
এদিন সকাল থেকেও দফায় দফায় বৃষ্টি হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই দামোদরের জল বাড়ছে। হু-হু করে জল ঢুকছে বিভিন্ন গ্রামে। স্থানীয় এক প্রৌঢ়া মালতি দে বলেন, "প্রত্যেক বছর আমাদের শুধু আশ্বাস মেলে। কাজের কাজ কিছুই হয় না। ভোট এলে আমাদের নিয়ে রাজনীতি করা হয়। কিন্তু প্রতিবছর আমাদের গ্রামে জল ঢুকে যায়। রাস্তাঘাট একেবারে কাঁচা। জল ঢুকে গেলে চলাফেরা করতে ভীষণ অসুবিধা হয়। আমাদের ঘরবাড়ির সব ডুবে যায়। রেশনের চাল পাচ্ছি ৷ সেটাই সেদ্ধ করে খাচ্ছি কোনওরকমে।"
বছর আসে, বছর যায় কিন্তু দামোদার তীরবর্তী অণ্ডাল ব্লকের এই গ্রামগুলির মানুষের দুরবস্থা কাটে না বলেই অভিযোগ। আষাঢ়ে মেঘ দেখলে এই মানুষগুলি ভয়ে কার্যত সিঁটিয়ে যান। ঘর ছাড়া হওয়ার আতঙ্ক তাড়া করে এদের প্রত্যেক বছর। কবে মিলবে এদের মুক্তি ? প্রশ্ন উঠেছে, কিন্তু উত্তর কবে মিলবে কেউ জানে না।