মিনাখাঁ, 13 এপ্রিল: ভোটের মুখে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে শনিবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল উত্তর 24 পরগনার মিনাখাঁর কুলটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা । দু'পক্ষের সংঘর্ষ, মারধরে ঝরল রক্ত । চলল একের পর এক দোকান এবং কারখানা ভাঙচুরও । যার জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায় । সংঘর্ষে বিধায়ক ঊষারানি মণ্ডল ঘনিষ্ঠ তিন তৃণমূল কর্মী জখম হয়েছেন । যার মধ্যে আজের মিদ্দা নামে এক শাসক কর্মীর আঘাত গুরুতর বলেই খবর তৃণমূল সূত্রে । মারধরে তাঁর ডান চোখ মারাত্মক জখম হয়েছে । জখম কর্মীদের প্রত্যেককেই উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে মিনাখাঁ গ্রামীণ হাসপাতালে । সেখানেই আহতদের চিকিৎসা চলছে । কী কারণে এই সংঘর্ষের ঘটনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ । ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে ।
জানা গিয়েছে, মিনাখাঁর তৃণমূল বিধায়ক ঊষারানি মণ্ডলের সঙ্গে হাড়োয়া পঞ্চায়েত সমিতির দলীয় সহ-সভাপতি আব্দুল খালেক মোল্লার বিবাদ দীর্ঘদিনের । মূলত এলাকার কর্তৃত্ব ও দখলদারি কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে বারেবারে গণ্ডগোলে জড়িয়েছেন বিধায়ক এবং পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতির অনুগামীরা । এ নিয়ে আগেও দু'পক্ষের সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়েছে কুলটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা । দলের বিধায়ক এবং পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতির এই বিবাদ মেটাতে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব একসময় হস্তক্ষেপও করেছিল । তারপরও যে দু'পক্ষের বিবাদ মেটেনি তা স্পষ্ট শনিবারের ঘটনা থেকেই ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন সকালে ঘুসিঘাটা বাজারে মাছের আড়তে কাজ করছিলেন বিধায়ক ঘনিষ্ঠরা । অভিযোগ,তখনই খালেক মোল্লার লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে চড়াও হয় বিধায়ক ঘনিষ্ঠ তৃণমূল কর্মীদের উপর । পালটা প্রতিরোধ গড়ে তুললে দু'পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ বেঁধে যায় । সংঘর্ষ চলাকালীনই চায়ের দোকান ও সেলাই কারখানায় ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ । যদিও ভাঙচুর এবং সংঘর্ষের ঘটনায় খালেক মোল্লার গোষ্ঠীর লোকজনকেই দায়ী করেছে বিধায়ক ঘনিষ্ঠ তৃণমূল কর্মীরা । আর তা ঘিরেই ভোটের আবহে তেতে রয়েছে মিনাখাঁর কুলটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা ।
এই বিষয়ে বিধায়ক ঘনিষ্ঠ তৃণমূল কর্মী ফজরুল রহমান মোল্লা বলেন, "মিনাখাঁ বিধানসভা এলাকায় তৃণমূলের দুটি গোষ্ঠী রয়েছে । একটি বিধায়ক ঊষারানি মণ্ডলের । অন্যটি ব্লক সভাপতি ও হাড়োয়া পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আব্দুল খালেক মোল্লার । আমরা বিধায়ক ঘনিষ্ঠ হওয়াতে এ দিন মাছের আড়তে গিয়ে হামলা চালায় খালেক মোল্লার ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা বাহার উদ্দিন মোল্লা এবং তাঁর লোকজন । হামলায় গুরুতর জখম হয়েছেন আজের মিদ্দা নামে দলীয় কর্মী । আমরা এর বিহিত চাই । বিধায়ক যদি কোনও ব্যবস্থা না নেয় তাহলে আমাদের বিকল্প ভাবনা নিতে হবে ।"
একই সুর শোনা গিয়েছে ফতেমা বিবি নামে বিধায়ক ঘনিষ্ঠ আরও এক শাসককর্মীর গলাতেও । তাঁর কথায়, "কী কারণে হামলা এবং মারধর করা হল তা কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না । আমরা চাই, হামলাকারীদের শাস্তি হোক । নইলে এঁরা আবারও হামলা চালাতে পারে এলাকায় ।" এদিকে, আতঙ্কিত ঘুসিঘাটা বাজার ও সন্নিহিত এলাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে । সেই সঙ্গে হামলাকারীদের খোঁজেও চলছে চিরুনি তল্লাশি ।
আরও পড়ুন: