ETV Bharat / state

ভাঙল 194 বছরের প্রথা, 'কো-এড' হচ্ছে স্কটিশ চার্চ স্কুল - Scottish Church Collegiate School - SCOTTISH CHURCH COLLEGIATE SCHOOL

Admission in Scottish Church School: স্কটিশ চার্চ স্কুলে প্রাইমারির পর একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে ভরতির সুযোগ পেল মেয়েরাও ৷ শুক্রবার আলেকজান্ডার ডাফের জন্মদিনেই ভাঙল 194 বছরের প্রথা ৷

Etv Bharat
স্কটিশ স্কুলে ভরতি ছাত্রীদেরও
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Apr 26, 2024, 6:04 PM IST

194 বছর পর ছাত্রদের স্কটিশ স্কুলে ভরতি ছাত্রীদেরও

কলকাতা, 26 এপ্রিল: রবিঠাকুরের 'অচলায়তন' নাটক নিশ্চই পড়েছেন ! মনে আছে নিশ্চই, সুভদ্র আর পঞ্চককে ? সেই সুভদ্র যে তিনশো-পয়তাল্লিশ বছরের আগল ঘুচিয়েছিল উত্তর দিকের জানলা খুলে ৷ উপন্যাসের মতোই খানিকটা যেন মিলে গিয়েছে মিশনারি স্কুল স্কটিশ চার্চের ক্ষেত্রে ৷ 194 বছর পর এখানেও ভাঙল প্রথা ৷ ছাত্রদের স্কুলে প্রবেশ করল ছাত্রীরা। প্রাইমারির পর এবার একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে ছাত্রীদের ভর্তি নেওয়া হবে । তার শুভ সূচনা হল শুক্রবার অর্থাৎ 26 এপ্রিল ।

মূলত, 26 এপ্রিল আলেকজান্ডার ডাফের জন্মদিন । ফলে এই দিনটাকেই শুভদিন হিসাবে বেছে নেয় স্কটিশ চার্চ স্কুল। সদ্য ভর্তি হওয়া ছাত্রীরা এইদিন স্কুলে আসেন। তাদের হাতে গোলাপ ফুল তুলে দেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। 194 বছরের ইতিহাস ভেঙে কেন ছাত্রীদের প্রবেশ ঘটল স্কটিশে? তাঁর উত্তরে প্রধান শিক্ষক বিভাস স্যান্যাল বলেন, "আমাদের বিশপ মশাই বারবার বলতেন মহিলারা সমাজের একটা অঙ্গ । আজকের যুগে দাঁড়িয়ে কেন তাঁদের বাদ দেব আমরা? প্রায় দুশো বছর ধরে তাঁরা এই মিশনারি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত। সে জন্যই আমাদের এই ভাবনা।" মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের আগেই প্রায় 65 থেকে 70 জন ছাত্রী এই স্কুলে ভর্তি হওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছে। একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীর প্রত্যেকটা বিষয়ের জন্য এবং দুটো ভাষার ক্ষেত্রেই দরজা খোলা রয়েছে ছাত্রীদের।

স্কুলে ছাত্রীদের প্রবেশ করানো হলে একটা ভালো সুযোগ দেওয়া যাবে বলেই মনে করছেন সদ্য মাধ্যমিক পাস করা পৃথা চক্রবর্তী। সে বলে, "আগে আমি হলি চাইল্ডে পড়তাম। তারপর আমার এক বন্ধু আমাকে জানিয়েছিল স্কটিশ চার্চে ছাত্রীদের ভর্তি করা হবে। প্রথমে বিশ্বাস করিনি ৷ তবে পরে খবরেও দেখি। ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিল কলেজ রয়েছে এমন একটি স্কুলে পড়ার। যদি আমার মাধ্যমিকের রেজাল্টটা ভালো হয়, তাহলে আমি এই স্কুলে ভর্তি হতে পারবো। তাতে আমি এবং আমার মা-বাবাও খুব খুশি হবেন। আমার একটা স্বপ্ন পূরণ হবে।"

অপরদিকে 1973 সালে স্কটিশ স্কুল থেকে পড়াশোনা শেষ করেছিলেন দিলীপ দাস। তাঁর স্কুল জীবনের 50 বছর উপলক্ষে বন্ধুদেরকে সঙ্গে নিয়ে এদিনের অনুষ্ঠানের সামিল হন তিনিও। স্কুলের এই নতুন উদ্যোগ নিয়ে গর্বিত ছাত্ররাও। দিলীপ বাবু জানান, আজকে একটা ঐতিহাসিক দিন। খুব ভালো লাগছে আজকের দিনে আমারাও সামিল হতে পেরেছি। আশা রাখছি 194 বছর ধরে যেভাবে স্কটিশ এগিয়ে গিয়েছে, সেভাবেই আরও এগিয়ে যাবে আগামী দিনে ৷ ছেলে ও মেয়ে উভয়ের জন্য এই স্কুল সম্পন্ন হয়ে উঠুক।"

194 বছর আগে উত্তর কলকাতার বুকে গড়ে উঠেছিল অন্যতম ছাত্রদের মিশনারি স্কুল স্কটিশ চার্চ । তারপর একাধিক কৃতি ছাত্রের নাম উঠে এসেছে এই স্কুল থেকে। তবে এবার শুধু ছেলেরা নয়, তার অংশীদার হচ্ছে মেয়েরাও । শুক্রবার এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে স্কুলে উপস্থিত ছিলেন স্কুল কমিটির প্রসিডেন্ট তথা কলকাতা বিশপ রেভ ডঃ পরিতোষ ক্যানিং, স্কটিশ চার্চ স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিভাস স্যান্যাল-সহ ম্যানেজমেন্ট বিভাগের আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে, স্কুলের মেন বিল্ডিং-এ ক্লাস হবে মেয়েদের। ছাত্র এবং ছাত্রীরা একসঙ্গে ক্লাস করবেন, তবে আলাদা ভাগ করে বসানো হবে তাদের। কিন্তু ছাত্রীদের প্রবেশ করানোর আগেই বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। তার মধ্যে অন্যতম হল, স্কুলের মেয়েদের জন্য কমন রুম, আলাদা শৌচালয়। এছাড়াও একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীকে সম্পূর্ণভাবে সেন্ট্রাল এসিতে ঘেরার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

1. কবে প্রকাশিত হবে মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল? প্রকাশ্যে তারিখ

2. উচ্চমাধ্যমিকে সেমিস্টার পদ্ধতি, পড়ুয়া-অভিভাবকদের বোঝাতে ওয়েবিনার 'উজ্জীবন চর্চা'

3. আমূল বদলে যাচ্ছে সিবিএসই বোর্ডের পাঠ্যক্রম, কবে থেকে চালু ?

194 বছর পর ছাত্রদের স্কটিশ স্কুলে ভরতি ছাত্রীদেরও

কলকাতা, 26 এপ্রিল: রবিঠাকুরের 'অচলায়তন' নাটক নিশ্চই পড়েছেন ! মনে আছে নিশ্চই, সুভদ্র আর পঞ্চককে ? সেই সুভদ্র যে তিনশো-পয়তাল্লিশ বছরের আগল ঘুচিয়েছিল উত্তর দিকের জানলা খুলে ৷ উপন্যাসের মতোই খানিকটা যেন মিলে গিয়েছে মিশনারি স্কুল স্কটিশ চার্চের ক্ষেত্রে ৷ 194 বছর পর এখানেও ভাঙল প্রথা ৷ ছাত্রদের স্কুলে প্রবেশ করল ছাত্রীরা। প্রাইমারির পর এবার একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে ছাত্রীদের ভর্তি নেওয়া হবে । তার শুভ সূচনা হল শুক্রবার অর্থাৎ 26 এপ্রিল ।

মূলত, 26 এপ্রিল আলেকজান্ডার ডাফের জন্মদিন । ফলে এই দিনটাকেই শুভদিন হিসাবে বেছে নেয় স্কটিশ চার্চ স্কুল। সদ্য ভর্তি হওয়া ছাত্রীরা এইদিন স্কুলে আসেন। তাদের হাতে গোলাপ ফুল তুলে দেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। 194 বছরের ইতিহাস ভেঙে কেন ছাত্রীদের প্রবেশ ঘটল স্কটিশে? তাঁর উত্তরে প্রধান শিক্ষক বিভাস স্যান্যাল বলেন, "আমাদের বিশপ মশাই বারবার বলতেন মহিলারা সমাজের একটা অঙ্গ । আজকের যুগে দাঁড়িয়ে কেন তাঁদের বাদ দেব আমরা? প্রায় দুশো বছর ধরে তাঁরা এই মিশনারি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত। সে জন্যই আমাদের এই ভাবনা।" মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের আগেই প্রায় 65 থেকে 70 জন ছাত্রী এই স্কুলে ভর্তি হওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছে। একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীর প্রত্যেকটা বিষয়ের জন্য এবং দুটো ভাষার ক্ষেত্রেই দরজা খোলা রয়েছে ছাত্রীদের।

স্কুলে ছাত্রীদের প্রবেশ করানো হলে একটা ভালো সুযোগ দেওয়া যাবে বলেই মনে করছেন সদ্য মাধ্যমিক পাস করা পৃথা চক্রবর্তী। সে বলে, "আগে আমি হলি চাইল্ডে পড়তাম। তারপর আমার এক বন্ধু আমাকে জানিয়েছিল স্কটিশ চার্চে ছাত্রীদের ভর্তি করা হবে। প্রথমে বিশ্বাস করিনি ৷ তবে পরে খবরেও দেখি। ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিল কলেজ রয়েছে এমন একটি স্কুলে পড়ার। যদি আমার মাধ্যমিকের রেজাল্টটা ভালো হয়, তাহলে আমি এই স্কুলে ভর্তি হতে পারবো। তাতে আমি এবং আমার মা-বাবাও খুব খুশি হবেন। আমার একটা স্বপ্ন পূরণ হবে।"

অপরদিকে 1973 সালে স্কটিশ স্কুল থেকে পড়াশোনা শেষ করেছিলেন দিলীপ দাস। তাঁর স্কুল জীবনের 50 বছর উপলক্ষে বন্ধুদেরকে সঙ্গে নিয়ে এদিনের অনুষ্ঠানের সামিল হন তিনিও। স্কুলের এই নতুন উদ্যোগ নিয়ে গর্বিত ছাত্ররাও। দিলীপ বাবু জানান, আজকে একটা ঐতিহাসিক দিন। খুব ভালো লাগছে আজকের দিনে আমারাও সামিল হতে পেরেছি। আশা রাখছি 194 বছর ধরে যেভাবে স্কটিশ এগিয়ে গিয়েছে, সেভাবেই আরও এগিয়ে যাবে আগামী দিনে ৷ ছেলে ও মেয়ে উভয়ের জন্য এই স্কুল সম্পন্ন হয়ে উঠুক।"

194 বছর আগে উত্তর কলকাতার বুকে গড়ে উঠেছিল অন্যতম ছাত্রদের মিশনারি স্কুল স্কটিশ চার্চ । তারপর একাধিক কৃতি ছাত্রের নাম উঠে এসেছে এই স্কুল থেকে। তবে এবার শুধু ছেলেরা নয়, তার অংশীদার হচ্ছে মেয়েরাও । শুক্রবার এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে স্কুলে উপস্থিত ছিলেন স্কুল কমিটির প্রসিডেন্ট তথা কলকাতা বিশপ রেভ ডঃ পরিতোষ ক্যানিং, স্কটিশ চার্চ স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিভাস স্যান্যাল-সহ ম্যানেজমেন্ট বিভাগের আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে, স্কুলের মেন বিল্ডিং-এ ক্লাস হবে মেয়েদের। ছাত্র এবং ছাত্রীরা একসঙ্গে ক্লাস করবেন, তবে আলাদা ভাগ করে বসানো হবে তাদের। কিন্তু ছাত্রীদের প্রবেশ করানোর আগেই বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। তার মধ্যে অন্যতম হল, স্কুলের মেয়েদের জন্য কমন রুম, আলাদা শৌচালয়। এছাড়াও একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীকে সম্পূর্ণভাবে সেন্ট্রাল এসিতে ঘেরার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

1. কবে প্রকাশিত হবে মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল? প্রকাশ্যে তারিখ

2. উচ্চমাধ্যমিকে সেমিস্টার পদ্ধতি, পড়ুয়া-অভিভাবকদের বোঝাতে ওয়েবিনার 'উজ্জীবন চর্চা'

3. আমূল বদলে যাচ্ছে সিবিএসই বোর্ডের পাঠ্যক্রম, কবে থেকে চালু ?

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.