কলকাতা, 15 অগস্ট: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে বুধবার মধ্যরাতে তাণ্ডবের পর ওইদিনই গভীর রাতে সেখানে পৌঁছে যান কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। আর ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়েই তীব্র ক্ষোভ উগড়ে দেন পুলিশ কমিশনার ৷ তাঁর মূলত ক্ষোভ, পড়ুয়া চিকিৎসকের খুনের ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া 'গুজব' নিয়ে ৷ এমনকী আরজি করের ঘটনার জন্য সংবাদমাধ্যমকেও কাঠগড়ায় তুলেছেন বিনীত গোয়েল ৷
সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন গুজব নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করে পুলিশ কমিশনার বলেন, "আমি সত্যিই ক্ষুব্ধ ।" ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তিনি আরও বলেন, "ডিসি নর্থ প্রতিবাদকারীদের রক্ষা করতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি অজ্ঞান হয়ে গিয়েছেন। এখানে যা হয়েছে তা সংবাদ মাধ্যমের দ্বারা ভুল খবর প্রচারের জন্যও কিছুটা হয়েছে। কলকাতা পুলিশ এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত। আমরা কী করিনি ? সব করা হয়েছে ৷ যা যা পদক্ষেপ নেওয়ার পুলিশ সব করেছে ৷ তারপরও মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হয়েছে একশ্রেণির মানুষের দ্বারা ৷ এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই ৷ জোর করে রাজনীতিকরণ করানোর চেষ্টা হচ্ছে ৷" অসুরক্ষিত আরজি কর হাসপাতালের প্রসুতি বিভাগের নিরাপত্তায় রয়েছে কলকাতা পুলিশের প্রমীলা বাহিনী।
তাণ্ডবের ঘটনার খবর পেয়ে লালবাজারের তরফে কলকাতা পুলিশের মোট চারটি মহিলা ইউনিটকে আরজি কর হাসপাতালের প্রসুতি বিভাগের নিরাপত্তার জন্য পাঠানো হয়। জানা গিয়েছে, আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসারত রোগী ও তাঁদের আত্মীয় থেকে শুরু করে বিশেষ করে হাসপাতালের প্রসুতি বিভাগে চিকিৎসকরত শিশু থেকে শুরু করে মায়েদের নিরাপত্তা দিল কলকাতা পুলিশের প্রমিলা বাহিনী। প্রত্যকের হাতে ছিল লাঠি ও আগ্নেয়াস্ত্র। যে কোনও বহিরাগতরা হাসপাতালের প্রসুতি বিভাগে ঢুকে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না-পারে তার জন্য বদ্ধপরিকর লালবাজার।
বাকি পুলিশ নামে রাস্তায়। তান্ডবকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে দফায় দফায় পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায়। পাশাপাশি ইটের ঘায়ে মাথা ফাটে কলকাতা পুলিশের ওসি দেবাশিস দত্তের ৷ অভিযোগ আরজি কর হাসপাতালে তাণ্ডবের ঘটনার প্রায় দেড় ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে আসেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল-সহ কলকাতা পুলিশের যুগ্ম-নগরপাল (সদর) মিরাজ খালেদ ও কলকাতা পুলিশের গুন্ডাদমন শাখার গোয়েন্দারা। এরপরেই শুরু হয় ধরপাকর। ঘটনাস্থলে আনা হয় অতিরিক্ত বাহিনী। লাঠি চালানো হয়। পরে কলকাতা পুলিশের নগরপাল বিনীত গোয়েলকে দেখে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। হামলার ঘটনায় এলাকা থেকে প্রায় 12 জনকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় থানায়। এলাকা ও হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেন তদন্তকারীরা। খতিয়ে দেখা হয়, কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে ৷ পাশাপাশি তারা কোথা থেকে এসেছিল।