মধ্যমগ্রাম, 25 সেপ্টেম্বর: আরজি কর-কাণ্ডের আবহে এবার আরও জাঁকজমক উৎসবের ডাক দিলেন তৃণমূল বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী। সম্প্রতি, মধ্যমগ্রামে পুজো বৈঠকে যোগ দিতে এসে জেলার পুলিশ সুপার এবং জেলাশাসকের সামনেই তিনি বলেন, "যাঁরা বলছেন উৎসবে নেই, আমাদের চ্যালেঞ্জ আরও ভাল করে উৎসব করা। গত বছর জেলায় উৎসব যা হয়েছিল, তার থেকেও এবার বড় করে শৃঙ্খলা মেনে ভালোভাবে করতে হবে।আমরাও প্রমাণ করতে চাই, আমরাও উৎসবে আছি।"
আরজি কর-কাণ্ডে প্রতিবাদ জানাতে এবছর রাজ্যের একাধিক পুজো কমিটি সরকারি অনুদান না নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। তার মধ্যে উত্তর 24 পরগনার অশোকনগরের দোগাছিয়া বাবা পঞ্চানন দুর্গোৎসব কমিটিও রয়েছে।
নাম না করে সেই পুজো কমিটির প্রসঙ্গ টেনে এনে নারায়ণ গোস্বামী বলেন, "আমি জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারকে একটি তথ্য জানাতে চাই, অশোকনগরের একটি পুজো কমিটি আরজি করের ঘটনার পর বলেছিল, তাঁরা পুজোর অনুদান নেবে না। এটা জানতে পেরে আমার মনে খুব ব্যথা লেগেছিল। কিন্তু, হঠাৎ দেখলাম রবিবার তাঁরাই ওসির সামনে আমার চেম্বারে এসে বলে, আমরা পুজোর অনুদান নেব ! তখন ওঁদের জিজ্ঞাসা করি, দম দিয়েছিল কারা ? উত্তরে তাঁরা বলেন, ভুল হয়ে গিয়েছে। আমার কানে কানে এসে ভুল স্বীকার করলে হবে না। তোমরা যেমন সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেছিল। সেভাবেই সকলকে জানাতে হবে। তাই, আমি সবাইকে বলব, উৎসবে ফিরুন। পুলিশের যে সমস্ত গাইডলাইন রয়েছে, সেই সব মেনেই আপনারা পুজো করুন। কারণ দুর্গা পুজো বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব।"
বিধায়ক আরও বলেন, "পুজোর আয়োজনে কেউ সমস্যায় পড়লে তিনি তাঁদের পাশে থাকবেন। যে পুজো কমিটিতে গতবছর খিচুড়ি ভোগ কিংবা বাউল গান হত না। সেখানে এই ধরণের ব্যবস্থা করতে হবে। তার জন্য জেলাপরিষদের সভাধিপতি হিসেবে আমার কিছু করার থাকলে করব। পুজো কমিটির কাছে অনুরোধ করব, আমাকে বলবেন। আমি সব ধরণের সহযোগিতা করতে রাজি আছি।" এদিকে, তৃণমূল বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামীর এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিরোধীরা। এই প্রসঙ্গে জেলা সিপিএমের নেতা আহমেদ আলি খান বলেন, "আরজি করের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় যেখানে গোটা দেশের মানুষ বিচার চাইছে। সেখানে নারায়ণ গোস্বামীর মতো জনপ্রতিনিধিরা জাঁকজমক উৎসবের ডাক দিচ্ছেন।আসলে ওঁর নেত্রী, তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই তো উৎসবে ফেরার ডাক দিয়েছেন। সেটাই ফলো করছেন উনি। বিচার এবং উৎসব। এই দু'টোর মধ্যে গুলিয়ে দিতে চাইছেন শাসকদলের নেতারা। এভাবে বিষয়টি গুলিয়ে দেওয়া যাবে না। মানুষ তার বিচারের দাবি থেকে সরবে না।"