কলকাতা, 2 সেপ্টেম্বর: ধর্ষণ বিরোধী কড়া আইন প্রণয়নে বিধানসভায় অপরাজিতা উইমেন চাইল্ড বিল 2024 আনছে রাজ্য সরকার ৷ আগামিকাল, অর্থাৎ মঙ্গলবার রাজ্য বিধানসভায় যে বিল আসতে চলেছে এখনও পর্যন্ত তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি । তবে এটা জানা গিয়েছে যে, তার নাম হতে চলেছে অপরাজিতা উইমেন চাইল্ড বিল (পশ্চিমবঙ্গ ফৌজদারি আইন সংশোধন) 2024 । এই বিল বিধানসভায় পেশ করবেন আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক । আগামিকাল এই বিলের আলোচনায় উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ।
ধর্ষণবিরোধী আইন আগেও হয়েছে দেশে । কিন্তু এবারের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার এই আইন অবশ্যই বাকিদের থেকে আলাদা । একইসঙ্গে তাৎপর্যপূর্ণও বটে । সেটা আরও স্পষ্ট হয়েছে বিলের নাম পরিবর্তনে ৷ বিধানসভায় কালকের বিশেষ অধিবেশনে কোনও প্রশ্নোত্তর পর্ব থাকছে না । বিলের উপর আলোচনা দিয়েই অধিবেশন শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে । এই বিলে আলোচনার জন্য দু'ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছে ৷ উল্লেখ্য, এই বিলটি কোনও নতুন বিল নয় ৷ আদতে এটি একটি সংশোধনী বিল । শুধুমাত্র বিলের নামটাই পরিবর্তন করা হয়েছে ।
আরজি কর-কাণ্ডের পর রাজ্য পুলিশ ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে ৷ তবে সেই অস্বস্তি কাটাতে ধর্ষণ বিরোধী কড়া কেন্দ্রীয় আইন আনার দাবিতে সরব হয়েছে রাজ্যের শাসকদল ৷ কেন্দ্রের কাছে এই দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দুটি চিঠিও লিখে ফেলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ যদিও তাঁর প্রথম চিঠির জবাব দিয়ে রাজ্যের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট নিষ্ক্রিয় করে রাখার কথা বলে রাজ্যকে বিঁধেছে কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী ৷ তবে তাঁর সেই কথারও পালটা বক্তব্য দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বিতীয় চিঠিতে ৷
গত বুধবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন যে, রাজ্যও ধর্ষণ রুখতে সর্বোচ্চ শাস্তি অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ডের সংস্থান রেখে আইন আনবে ৷ তাঁর এই কথার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই আইন আনার ক্ষেত্রে অনুমোদন দেওয়া হয় ৷ জানানো হয় যে, 2 সেপ্টেম্বর বসবে বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন ৷ প্রথম দিন শোকপ্রস্তাব পেশ হওয়ার পর, দ্বিতীয় দিনই ধর্ষণ সংক্রান্ত বিল পাশ হবে বলে জানা যায় ৷
রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় সেদিনই জানান, দিল্লিতে নির্ভয়া কাণ্ডের পর ধর্ষণবিরোধী একটি আইন আনা হয়েছিল । তবে সেই আইনে বিচারের জন্য কোনও সময় নির্দিষ্ট করা ছিল না । রাজ্য সরকার এবার যে আইন আনতে চলেছে, তাতে ধর্ষণের ক্ষেত্রে সময় বেঁধে দিয়ে ফাঁসির সাজার সংস্থান রাখা হবে ।