ETV Bharat / state

সুন্দরবনের খুদের আঁকায় ফুটে উঠছে তাঁদের জীবনযাপনের লড়াই - Sundarbans Children Celebrate Life

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : 2 hours ago

Sundarbans Children Celebrate Life: সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রাম সানকিজানের ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের আঁকায় ফুটে উঠছে তাঁদের জীবনযাপনের লড়াই ৷ ফুটে উঠেছে তাদের লুকিয়ে থাকা প্রতিভা ৷

ETV BHARAT
সুন্দরবনের খুদের আঁকায় ফুটে উঠছে তাঁদের জীবনযাপনের লড়াই (নিজস্ব চিত্র)

কলকাতা, 1 অক্টোবর: সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রাম সানকিজান । যেখানে অনেকের হাতেই আজও পৌঁছয়নি মোবাইল ফোন ৷ এমনকি জীবনধারণের ন্যূনতম ব্যবস্থাটুকু সেখানে নেই ৷ প্রতিদিন বেঁচে থাকতে হয় বাঘ বা কুমিরের সঙ্গে লড়াই করে ৷ সেখানে একটি স্কুলের সাহায্যে খুদেরা পড়াশোনা শিখছে । শুধু তাই নয়, তাদের মধ্যে লুকিয়ে থাকা প্রতিভাগুলিকেও জাগ্রত করে সুশীল সমাজের কাছে তুলে ধরছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ ।

বিবেকানন্দ সংঘ এবং অনু চৌধুরী মেমোরিয়াল এডুকেশনাল ফাউন্ডেশনের প্রচেষ্টায় দক্ষিণ 24 পরগনার সুন্দরবন এলাকার গ্রাম সানকিজানে তৈরি হয়েছে বিবেকানন্দ আদর্শ বিদ্যালয় । ওখানকার খুদেরা পড়াশোনার পাশাপাশি একাধিক বিষয়ে শিক্ষালাভ করছে । সম্প্রতি স্কুল কতৃপক্ষের চেষ্টাতেই খাস কলকাতার একটি পাঁচতারা হোটেলে 'চিলড্রেন অফ দ্য সুন্দরবন' নামে ছাত্রছাত্রীদের আঁকা চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয় ।

সুন্দরবনের খুদের আঁকায় ফুটে উঠছে তাঁদের জীবনযাপনের লড়াই (নিজস্ব ভিডিয়ো)

খুদে পড়ুয়াদের রং-তুলির ছোঁয়ায় ফুটে উঠেছে সুন্দরবনের জীবনযাত্রা । এছাড়াও অনুষ্ঠানে শিল্পী গৌরব রায়ের তোলা সাদা-কালো বহু ছবিও প্রদর্শিত হয় । অনুষ্ঠানে পাঁচ থেকে পনেরো বছর বয়সি শিশুদের নাচ, গান ও কবিতা পরিবেশনায় সুন্দরবনের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরা হয় ।

বিবেকানন্দ সংঘ এবং অনু চৌধুরী মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সচিব অধ্যাপক উজ্জ্বল চৌধুরী জানান, সানকিজান গ্রামের মানুষের সাহায্যে একটি স্কুল গড়ে উঠেছিল ৷ তবে তা কোভিডের সময় বন্ধ হয়ে যায় । আমফানের সময়ও স্কুলটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় । তখন এই স্কুলে 130 জন খুদে পড়াশোনা করত ৷ কিন্তু বন্ধ হয়ে যায় তাদের পড়াশোনা । স্থানীয় এক ব্যক্তি জয়কৃষ্ণ হালদারের প্রচেষ্টা থাকা সত্ত্বেও স্কুলটিকে আর তেমনভাবে দাঁড় করানো সম্ভব হয়নি । বিষয়টি জানার পরে এই স্কুলের সঙ্গে যুক্ত হন উজ্জ্বল চৌধুরী । ট্রাস্ট তৈরি করে স্কুলটিকে আবার দাঁড় করানো হয় এবং আজ তারা কলকাতায় এসে নিজেদের প্রতিভা সকলের সামনে তুলে ধরতে পেরেছে ।

বর্তমানে এই স্কুলে 252 জন পড়ুয়া পড়াশোনা করে । আপাতত এই স্কুলে ক্লাস এইট পর্যন্ত রয়েছে ৷ তবে ভবিষ্যতে এখানে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পঠন পাঠনের ব্যবস্থা করার ইচ্ছে রয়েছে কর্তৃপক্ষের । কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয় যে, একাধিক সংস্থার সাহায্যে এখানে উন্নত মানের শিক্ষাদানের চেষ্টা চলছে ।

ETV BHARAT
সুন্দরবনের খুদে শিল্পীদের ছবির প্রদর্শনী (নিজস্ব চিত্র)

স্কুলের ক্লাস সেভেনের এক খুদে পড়ুয়া রুপালি সাঁপুই জানায় যে, তাদের এলাকায় তেমন স্কুল নেই । রুপালির বাবা একজন পরিযায়ী শ্রমিক । বিভিন্ন বাধা এড়িয়ে রুপালি ও তার ভাই মন দিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে । বড় হয়ে চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছে রয়েছে এই খুদে পড়ুয়ার ।

পঞ্চম শ্রেণির আর এক খুদের নাম সোনালি সাঁপুই ৷ সে তার আঁকা দুটি ছবি প্রদর্শনীতে এনেছে ৷ একটিতে রয়েছে 'বাঘের মুখে কাঁকড়া শিকার' আর অপরটি 'আমফানে নদী বাঁধের মেরামত'। সোনালি জানায় যে, তাঁর গ্রামে সে প্রতিদিন যা দেখে, সেটাই উঠে এসেছে তার আঁকায় ।

সুন্দরবনের চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে বড় হতে হলেও চোখ জোড়া স্বপ্নকে মুছে ফেলেনি ছোট ছোট ছেলেমেয়েগুলো ৷ বাংলার মানুষ তাদের পাশে দাঁড়ালে সুন্দর আগামীর অন্যতম দিশারী হয়ে উঠবে এই কচিকাঁচারা ৷

কলকাতা, 1 অক্টোবর: সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রাম সানকিজান । যেখানে অনেকের হাতেই আজও পৌঁছয়নি মোবাইল ফোন ৷ এমনকি জীবনধারণের ন্যূনতম ব্যবস্থাটুকু সেখানে নেই ৷ প্রতিদিন বেঁচে থাকতে হয় বাঘ বা কুমিরের সঙ্গে লড়াই করে ৷ সেখানে একটি স্কুলের সাহায্যে খুদেরা পড়াশোনা শিখছে । শুধু তাই নয়, তাদের মধ্যে লুকিয়ে থাকা প্রতিভাগুলিকেও জাগ্রত করে সুশীল সমাজের কাছে তুলে ধরছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ ।

বিবেকানন্দ সংঘ এবং অনু চৌধুরী মেমোরিয়াল এডুকেশনাল ফাউন্ডেশনের প্রচেষ্টায় দক্ষিণ 24 পরগনার সুন্দরবন এলাকার গ্রাম সানকিজানে তৈরি হয়েছে বিবেকানন্দ আদর্শ বিদ্যালয় । ওখানকার খুদেরা পড়াশোনার পাশাপাশি একাধিক বিষয়ে শিক্ষালাভ করছে । সম্প্রতি স্কুল কতৃপক্ষের চেষ্টাতেই খাস কলকাতার একটি পাঁচতারা হোটেলে 'চিলড্রেন অফ দ্য সুন্দরবন' নামে ছাত্রছাত্রীদের আঁকা চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয় ।

সুন্দরবনের খুদের আঁকায় ফুটে উঠছে তাঁদের জীবনযাপনের লড়াই (নিজস্ব ভিডিয়ো)

খুদে পড়ুয়াদের রং-তুলির ছোঁয়ায় ফুটে উঠেছে সুন্দরবনের জীবনযাত্রা । এছাড়াও অনুষ্ঠানে শিল্পী গৌরব রায়ের তোলা সাদা-কালো বহু ছবিও প্রদর্শিত হয় । অনুষ্ঠানে পাঁচ থেকে পনেরো বছর বয়সি শিশুদের নাচ, গান ও কবিতা পরিবেশনায় সুন্দরবনের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরা হয় ।

বিবেকানন্দ সংঘ এবং অনু চৌধুরী মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সচিব অধ্যাপক উজ্জ্বল চৌধুরী জানান, সানকিজান গ্রামের মানুষের সাহায্যে একটি স্কুল গড়ে উঠেছিল ৷ তবে তা কোভিডের সময় বন্ধ হয়ে যায় । আমফানের সময়ও স্কুলটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় । তখন এই স্কুলে 130 জন খুদে পড়াশোনা করত ৷ কিন্তু বন্ধ হয়ে যায় তাদের পড়াশোনা । স্থানীয় এক ব্যক্তি জয়কৃষ্ণ হালদারের প্রচেষ্টা থাকা সত্ত্বেও স্কুলটিকে আর তেমনভাবে দাঁড় করানো সম্ভব হয়নি । বিষয়টি জানার পরে এই স্কুলের সঙ্গে যুক্ত হন উজ্জ্বল চৌধুরী । ট্রাস্ট তৈরি করে স্কুলটিকে আবার দাঁড় করানো হয় এবং আজ তারা কলকাতায় এসে নিজেদের প্রতিভা সকলের সামনে তুলে ধরতে পেরেছে ।

বর্তমানে এই স্কুলে 252 জন পড়ুয়া পড়াশোনা করে । আপাতত এই স্কুলে ক্লাস এইট পর্যন্ত রয়েছে ৷ তবে ভবিষ্যতে এখানে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পঠন পাঠনের ব্যবস্থা করার ইচ্ছে রয়েছে কর্তৃপক্ষের । কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয় যে, একাধিক সংস্থার সাহায্যে এখানে উন্নত মানের শিক্ষাদানের চেষ্টা চলছে ।

ETV BHARAT
সুন্দরবনের খুদে শিল্পীদের ছবির প্রদর্শনী (নিজস্ব চিত্র)

স্কুলের ক্লাস সেভেনের এক খুদে পড়ুয়া রুপালি সাঁপুই জানায় যে, তাদের এলাকায় তেমন স্কুল নেই । রুপালির বাবা একজন পরিযায়ী শ্রমিক । বিভিন্ন বাধা এড়িয়ে রুপালি ও তার ভাই মন দিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে । বড় হয়ে চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছে রয়েছে এই খুদে পড়ুয়ার ।

পঞ্চম শ্রেণির আর এক খুদের নাম সোনালি সাঁপুই ৷ সে তার আঁকা দুটি ছবি প্রদর্শনীতে এনেছে ৷ একটিতে রয়েছে 'বাঘের মুখে কাঁকড়া শিকার' আর অপরটি 'আমফানে নদী বাঁধের মেরামত'। সোনালি জানায় যে, তাঁর গ্রামে সে প্রতিদিন যা দেখে, সেটাই উঠে এসেছে তার আঁকায় ।

সুন্দরবনের চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে বড় হতে হলেও চোখ জোড়া স্বপ্নকে মুছে ফেলেনি ছোট ছোট ছেলেমেয়েগুলো ৷ বাংলার মানুষ তাদের পাশে দাঁড়ালে সুন্দর আগামীর অন্যতম দিশারী হয়ে উঠবে এই কচিকাঁচারা ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.