ETV Bharat / state

সব টাকা খরচ করলেও দেবশ্রীকে নিয়ে রায়গঞ্জে 'ক্ষোভের পাহাড়', দেখুন রিপোর্ট কার্ড - Debasree Chaudhuri Report Card

Lok Sabha Elections 2024: সিপিএমের মহম্মদ সেলিমকে হারিয়ে 2019 সালে রায়গঞ্জের সাংসদ হন বিজেপির দেবশ্রী চৌধুরী ৷ পাঁচ বছরে কী কী কাজ করেছেন তিনি ? কোন কোন কাজ করতে পারনেনি প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ? কী বলছে তাঁর রিপোর্ট কার্ড ? খতিয়ে দেখল ইটিভি ভারত ৷

Lok Sabha Elections 2024
Lok Sabha Elections 2024
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Mar 24, 2024, 6:22 PM IST

রায়গঞ্জ সাংসদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ অনেক

রায়গঞ্জ, 22 মার্চ: 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গ দেখেছিল গেরুয়া ঝড় ৷ সেই ঝড়ে রায়গঞ্জ আসনে জয়ী হন বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরী ৷ হারিয়ে দেন সিপিএমের তৎকালীন পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিমের মতো পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদকে ৷ ভোটে জেতার পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও হন দেবশ্রী ৷ 2021 সালে তাঁকে অবশ্য মন্ত্রীত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় ৷

পাঁচ বছর পর আরও একটা ভোট ৷ তাঁর রিপোর্ট কার্ডে ভরসা করেই এই কেন্দ্রে লড়াইয়ের ময়দানে বিজেপি ৷ তথ্য বলছে, গত পাঁচ বছরে নিজের সাংসদ কোটার তহবিলের পুরো টাকাই কাজে লাগাতে পেরেছেন দেবশ্রী ৷ এর মধ্যে রয়েছে শ্মশানঘাটের সংস্কার, পাকা রাস্তা, হাইমাস্ট লাইট, হস্টেল, জলের ট্যাংক-সহ পানীয় জলের ব্যবস্থা, কমিউনিটি হল, শৌচালয়, লাইব্রেরি, যোগা সেন্টার নির্মাণের মতো বেশ কিছু কাজ ৷ বিশেষ কাজের মধ্যে রয়েছে 43 লক্ষ 75 হাজার 434 টাকা ব্যয়ে রায়গঞ্জ রেল স্টেশনের দু’নম্বর প্ল্যাটফর্মের পাশে রাস্তা নির্মাণ, 30 লক্ষ 44 হাজার 727 টাকায় গোয়ালপোখরে অত্যাধুনিক ইন্টিগ্রেটেড প্যাক হাউজ নির্মাণ, 38 লক্ষ 46 হাজার 292 টাকায় রায়গঞ্জে তফশিলি উপজাতিভুক্ত মেয়েদের জন্য হস্টেল নির্মাণের মতো কাজও ৷

তবে অনেক চেষ্টা করেও তিনি রায়গঞ্জ শহরের ভিতরে থাকা রেলওয়ে ক্রশিংয়ের উপর ওভারব্রিজ কিংবা আন্ডারপাস করতে পারেননি ৷ যদিও এর দায় তাঁর নয়৷ জেলা প্রশাসন অনুমোদন না করার জন্যই সেই কাজ থমকে রয়েছে ৷ তবে গত পাঁচ বছরে সাংসদ হিসাবে দেবশ্রীর সবচেয়ে বড় কাজ, ডালখোলায় বাইপাস চালু করা ৷

সাংসদ হিসাবে দেবশ্রীর কাজে রায়গঞ্জ কেন্দ্রে মানুষের কাছ থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গিয়েছে ৷ এক বাসিন্দা পূরণ শর্মা বলছেন, "জেলাবাসীর জন্য সাংসদ অনেক কাজই করেছেন ৷ এলাকার কথা তিনি অনেকবারই সংসদে তুলে ধরেছেন ৷ তবে আমাদের আকাঙ্খার তো আর শেষ নেই ৷ শুধু রায়গঞ্জ শহরের রেলওয়ে ক্রশিংয়ে ফ্লাইওভার কিংবা আন্ডারপাসটা তিনি করতে পারেননি ৷ ওটা হলে ভালো হত ৷ আর রায়গঞ্জ থেকে দিল্লিগামী সরাসরি একটি ট্রেন এখানকার মানুষের প্রয়োজন ছিল ৷"

আরেক বাসিন্দা অভিজিৎ মণ্ডল বলেন, "সাংসদ হিসেবে দেবশ্রী চৌধুরী যথেষ্টই কাজ করেছেন ৷ এলাকার কথা সংসদে তুলে ধরেছেন ৷ ডালখোলা বাইপাস চালু করে তিনি আমাদের অভিশাপমুক্ত করেছেন ৷ তবে তিনি দূরপাল্লার ট্রেনের ব্যবস্থা করতে না-পারায় আমরা একটু আশাহত ৷ রায়গঞ্জ শহরের যানজট নিয়ন্ত্রণে রেল ক্রশিং পারাপারের একটা ব্যবস্থা করা তাঁর উচিত ছিল ৷ সেটাও তিনি করতে পারেননি ৷ আমরা আশায় ছিলাম, সাংসদ হিসাবে তিনি এখানে এইমস আর এয়ারপোর্ট নির্মাণে পদক্ষেপ নেবেন ৷ এক্ষেত্রেও আমরা আশাহত ৷ জেলায় শিল্প স্থাপনেও তাঁর তেমন ভূমিকা দেখা যায়নি ৷"

তবে সাংসদের কাজে মোটেই খুশি নন নিতাই সাহা ৷ তাঁর মন্তব্য, “গত পাঁচ বছরে সাংসদ আমাদের জন্য তেমন কোনও কাজ করেননি ৷ তাঁর কাছে আমরা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের আশা করেছিলাম ৷ সেটা আমরা পাইনি ৷ সংসদে এলাকার কথা তুল ধরতে আমি অন্তত তাঁকে একবারও দেখিনি ৷ আমরা তাঁর কাছে স্বাস্থ্য, পরিবহণ সহ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন আশা করেছিলাম ৷ আশাহত হয়েছি ৷ তিনি এখানে কোনও ট্রেনও আনতে পারেননি ৷ আমাদের দূরপাল্লার ট্রেনের খুব প্রয়োজন ৷

এলাকায় সাংসদ দেবশ্রীর দেখা নেই বহুদিন থেকেই ৷ তাঁর অনুপস্থিতিতে বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলার সভাপতি বাসুদেব সরকার দাবি করলেন, “রায়গঞ্জবাসীর প্রত্যাশা অনুযায়ী আমরা গত পাঁচ বছর কাজ করেছি ৷ মানুষের প্রত্যাশা পূরণে আমরা 100 শতাংশ সফলতাও পেয়েছি ৷ রায়গঞ্জবাসীর প্রথম প্রত্যাশা ছিল কলকাতাগামী দিনের ট্রেন ৷ ভোটে জেতার ন’মাসের মাথায় আমরা কুলিক এক্সপ্রেস চালু করেছি ৷ জেলাবাসীর দাবি ছিল, ডালখোলা বাইপাস চালু করা ৷ সেই কাজ করা হয়েছে ৷ শুধু ডালখোলা নয়, জেলার চারটি বাইপাস করা হয়েছে ৷ এর মধ্যে শুধুমাত্র রায়গঞ্জ বাইপাসের কাজ টেকনিক্যাল কারণের জন্য একটু আটকে রয়েছে ৷’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘মানুষের দাবি ছিল, রায়গঞ্জে পোস্ট অফিসের ডিভিশনাল অফিস করা ৷ সেটা করা হয়েছে ৷ রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমরা রায়গঞ্জকে অন্যমাত্রা দিতে পেরেছি ৷ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের অধুনিকীকরণে অমৃত ভারত প্রকল্পে এখানে 100 কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে ৷ প্রান্তিক এই জেলায় হেলিকপ্টার ল্যান্ড করার সুবিধে ছিল না ৷ রায়গঞ্জ বিএসএফ ক্যাম্পে হেলিপ্যাডের ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷ রায়গঞ্জ শহরের যানজট নিয়ন্ত্রণে আমরা রেলওয়ে ক্রশিংয়ে আন্ডারপাস তৈরির কাজে সচেষ্ট হয়েছি ৷’’

তিনি আরও কাজের খতিয়ে দিয়েছেন ৷ তিনি বলেন, ‘‘রেলের আধিকারিকরা এসে সব খতিয়ে দেখেছেন ৷ স্কেচ পর্যন্ত করেছেন ৷ কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন কাজের এনওসি এখনও দেয়নি ৷ এর জন্য কাজ করা যাচ্ছে না ৷ মেডিক্যাল কলেজেও অনেক কাজ হয়েছে ৷ মানুষের এমন অনেক দাবি আমরা পূরণ করেছি ৷ তবে রেলের আন্ডারপাসটাই প্রশাসনের অসহযোগিতার জন্য তৈরি করতে পারিনি ৷ আমাদের সাংসদ তাঁর উন্নয়ন তহবিলের 100 শতাংশ টাকাই খরচ করতে পেরেছেন ৷”

যদিও জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অরিন্দম সরকারের বক্তব্য, “রায়গঞ্জের বেশিরভাগ মানুষ সাংসদকে দেখতেই পাননি ৷ করোনাকালেও তাঁকে এলাকায় দেখা যায়নি ৷ দুঃসময়ে মানুষ তাঁকে পাশে পায়নি ৷ এক্ষেত্রে এই সাংসদকে শূন্য দেওয়া ছাড়া উপায় নেই ৷ এখানকার সাংসদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও ছিলেন ৷ মন্ত্রী থাকলেও তিনি এই জেলার জন্য কোনও কাজ করতে পারেননি ৷’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘এমন সাংসদ অপদার্থ ৷ তিনি হাস্যকৌতুক ছাড়া কিছু করেন না ৷ এমন সাংসদ খুঁজে পাওয়া মুশকিল ৷ রাজ্যের 18 জন সাংসদের মধ্যে এখানকার সাংসদ নিকৃষ্ট ৷ আর যে ট্রেনগুলির কথা তারা বলছেন, সেসব ইউপিএ আমলে পাওয়া ৷ নতুন ট্রেন পাওয়া দূরের কথা, দিল্লিগামী যে ট্রেন ছিল, সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ৷ রায়গঞ্জ স্টেশনে যথার্থ পরিকাঠামোও নেই ৷ কেন্দ্রীয় সরকার এখন রেলকে বেসরকারি হাতে বিক্রির চেষ্টা চালাচ্ছে ৷ রেল নিয়ে মানুষ এখন বিরক্ত ৷”

আরও পড়ুন:

  1. ঘাসফুলে ঘেরা বহরমপুরে 'রবিনহুড' অধীরের খতিয়ান
  2. বিষ্ণুপুরে মুখোমুখি সৌমিত্র-সুজাতা, পাঁচ বছরের কাজের নিরিখে জয়ের হ্যাটট্রিক কি হবে বিজেপি প্রার্থীর?
  3. অসিত মালকে ব্যর্থ সাংসদ তকমা বোলপুরবাসীর, কী বলছে রিপোর্ট কার্ড?

রায়গঞ্জ সাংসদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ অনেক

রায়গঞ্জ, 22 মার্চ: 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গ দেখেছিল গেরুয়া ঝড় ৷ সেই ঝড়ে রায়গঞ্জ আসনে জয়ী হন বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরী ৷ হারিয়ে দেন সিপিএমের তৎকালীন পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিমের মতো পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদকে ৷ ভোটে জেতার পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও হন দেবশ্রী ৷ 2021 সালে তাঁকে অবশ্য মন্ত্রীত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় ৷

পাঁচ বছর পর আরও একটা ভোট ৷ তাঁর রিপোর্ট কার্ডে ভরসা করেই এই কেন্দ্রে লড়াইয়ের ময়দানে বিজেপি ৷ তথ্য বলছে, গত পাঁচ বছরে নিজের সাংসদ কোটার তহবিলের পুরো টাকাই কাজে লাগাতে পেরেছেন দেবশ্রী ৷ এর মধ্যে রয়েছে শ্মশানঘাটের সংস্কার, পাকা রাস্তা, হাইমাস্ট লাইট, হস্টেল, জলের ট্যাংক-সহ পানীয় জলের ব্যবস্থা, কমিউনিটি হল, শৌচালয়, লাইব্রেরি, যোগা সেন্টার নির্মাণের মতো বেশ কিছু কাজ ৷ বিশেষ কাজের মধ্যে রয়েছে 43 লক্ষ 75 হাজার 434 টাকা ব্যয়ে রায়গঞ্জ রেল স্টেশনের দু’নম্বর প্ল্যাটফর্মের পাশে রাস্তা নির্মাণ, 30 লক্ষ 44 হাজার 727 টাকায় গোয়ালপোখরে অত্যাধুনিক ইন্টিগ্রেটেড প্যাক হাউজ নির্মাণ, 38 লক্ষ 46 হাজার 292 টাকায় রায়গঞ্জে তফশিলি উপজাতিভুক্ত মেয়েদের জন্য হস্টেল নির্মাণের মতো কাজও ৷

তবে অনেক চেষ্টা করেও তিনি রায়গঞ্জ শহরের ভিতরে থাকা রেলওয়ে ক্রশিংয়ের উপর ওভারব্রিজ কিংবা আন্ডারপাস করতে পারেননি ৷ যদিও এর দায় তাঁর নয়৷ জেলা প্রশাসন অনুমোদন না করার জন্যই সেই কাজ থমকে রয়েছে ৷ তবে গত পাঁচ বছরে সাংসদ হিসাবে দেবশ্রীর সবচেয়ে বড় কাজ, ডালখোলায় বাইপাস চালু করা ৷

সাংসদ হিসাবে দেবশ্রীর কাজে রায়গঞ্জ কেন্দ্রে মানুষের কাছ থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গিয়েছে ৷ এক বাসিন্দা পূরণ শর্মা বলছেন, "জেলাবাসীর জন্য সাংসদ অনেক কাজই করেছেন ৷ এলাকার কথা তিনি অনেকবারই সংসদে তুলে ধরেছেন ৷ তবে আমাদের আকাঙ্খার তো আর শেষ নেই ৷ শুধু রায়গঞ্জ শহরের রেলওয়ে ক্রশিংয়ে ফ্লাইওভার কিংবা আন্ডারপাসটা তিনি করতে পারেননি ৷ ওটা হলে ভালো হত ৷ আর রায়গঞ্জ থেকে দিল্লিগামী সরাসরি একটি ট্রেন এখানকার মানুষের প্রয়োজন ছিল ৷"

আরেক বাসিন্দা অভিজিৎ মণ্ডল বলেন, "সাংসদ হিসেবে দেবশ্রী চৌধুরী যথেষ্টই কাজ করেছেন ৷ এলাকার কথা সংসদে তুলে ধরেছেন ৷ ডালখোলা বাইপাস চালু করে তিনি আমাদের অভিশাপমুক্ত করেছেন ৷ তবে তিনি দূরপাল্লার ট্রেনের ব্যবস্থা করতে না-পারায় আমরা একটু আশাহত ৷ রায়গঞ্জ শহরের যানজট নিয়ন্ত্রণে রেল ক্রশিং পারাপারের একটা ব্যবস্থা করা তাঁর উচিত ছিল ৷ সেটাও তিনি করতে পারেননি ৷ আমরা আশায় ছিলাম, সাংসদ হিসাবে তিনি এখানে এইমস আর এয়ারপোর্ট নির্মাণে পদক্ষেপ নেবেন ৷ এক্ষেত্রেও আমরা আশাহত ৷ জেলায় শিল্প স্থাপনেও তাঁর তেমন ভূমিকা দেখা যায়নি ৷"

তবে সাংসদের কাজে মোটেই খুশি নন নিতাই সাহা ৷ তাঁর মন্তব্য, “গত পাঁচ বছরে সাংসদ আমাদের জন্য তেমন কোনও কাজ করেননি ৷ তাঁর কাছে আমরা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের আশা করেছিলাম ৷ সেটা আমরা পাইনি ৷ সংসদে এলাকার কথা তুল ধরতে আমি অন্তত তাঁকে একবারও দেখিনি ৷ আমরা তাঁর কাছে স্বাস্থ্য, পরিবহণ সহ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন আশা করেছিলাম ৷ আশাহত হয়েছি ৷ তিনি এখানে কোনও ট্রেনও আনতে পারেননি ৷ আমাদের দূরপাল্লার ট্রেনের খুব প্রয়োজন ৷

এলাকায় সাংসদ দেবশ্রীর দেখা নেই বহুদিন থেকেই ৷ তাঁর অনুপস্থিতিতে বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলার সভাপতি বাসুদেব সরকার দাবি করলেন, “রায়গঞ্জবাসীর প্রত্যাশা অনুযায়ী আমরা গত পাঁচ বছর কাজ করেছি ৷ মানুষের প্রত্যাশা পূরণে আমরা 100 শতাংশ সফলতাও পেয়েছি ৷ রায়গঞ্জবাসীর প্রথম প্রত্যাশা ছিল কলকাতাগামী দিনের ট্রেন ৷ ভোটে জেতার ন’মাসের মাথায় আমরা কুলিক এক্সপ্রেস চালু করেছি ৷ জেলাবাসীর দাবি ছিল, ডালখোলা বাইপাস চালু করা ৷ সেই কাজ করা হয়েছে ৷ শুধু ডালখোলা নয়, জেলার চারটি বাইপাস করা হয়েছে ৷ এর মধ্যে শুধুমাত্র রায়গঞ্জ বাইপাসের কাজ টেকনিক্যাল কারণের জন্য একটু আটকে রয়েছে ৷’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘মানুষের দাবি ছিল, রায়গঞ্জে পোস্ট অফিসের ডিভিশনাল অফিস করা ৷ সেটা করা হয়েছে ৷ রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমরা রায়গঞ্জকে অন্যমাত্রা দিতে পেরেছি ৷ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের অধুনিকীকরণে অমৃত ভারত প্রকল্পে এখানে 100 কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে ৷ প্রান্তিক এই জেলায় হেলিকপ্টার ল্যান্ড করার সুবিধে ছিল না ৷ রায়গঞ্জ বিএসএফ ক্যাম্পে হেলিপ্যাডের ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷ রায়গঞ্জ শহরের যানজট নিয়ন্ত্রণে আমরা রেলওয়ে ক্রশিংয়ে আন্ডারপাস তৈরির কাজে সচেষ্ট হয়েছি ৷’’

তিনি আরও কাজের খতিয়ে দিয়েছেন ৷ তিনি বলেন, ‘‘রেলের আধিকারিকরা এসে সব খতিয়ে দেখেছেন ৷ স্কেচ পর্যন্ত করেছেন ৷ কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন কাজের এনওসি এখনও দেয়নি ৷ এর জন্য কাজ করা যাচ্ছে না ৷ মেডিক্যাল কলেজেও অনেক কাজ হয়েছে ৷ মানুষের এমন অনেক দাবি আমরা পূরণ করেছি ৷ তবে রেলের আন্ডারপাসটাই প্রশাসনের অসহযোগিতার জন্য তৈরি করতে পারিনি ৷ আমাদের সাংসদ তাঁর উন্নয়ন তহবিলের 100 শতাংশ টাকাই খরচ করতে পেরেছেন ৷”

যদিও জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অরিন্দম সরকারের বক্তব্য, “রায়গঞ্জের বেশিরভাগ মানুষ সাংসদকে দেখতেই পাননি ৷ করোনাকালেও তাঁকে এলাকায় দেখা যায়নি ৷ দুঃসময়ে মানুষ তাঁকে পাশে পায়নি ৷ এক্ষেত্রে এই সাংসদকে শূন্য দেওয়া ছাড়া উপায় নেই ৷ এখানকার সাংসদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও ছিলেন ৷ মন্ত্রী থাকলেও তিনি এই জেলার জন্য কোনও কাজ করতে পারেননি ৷’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘এমন সাংসদ অপদার্থ ৷ তিনি হাস্যকৌতুক ছাড়া কিছু করেন না ৷ এমন সাংসদ খুঁজে পাওয়া মুশকিল ৷ রাজ্যের 18 জন সাংসদের মধ্যে এখানকার সাংসদ নিকৃষ্ট ৷ আর যে ট্রেনগুলির কথা তারা বলছেন, সেসব ইউপিএ আমলে পাওয়া ৷ নতুন ট্রেন পাওয়া দূরের কথা, দিল্লিগামী যে ট্রেন ছিল, সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ৷ রায়গঞ্জ স্টেশনে যথার্থ পরিকাঠামোও নেই ৷ কেন্দ্রীয় সরকার এখন রেলকে বেসরকারি হাতে বিক্রির চেষ্টা চালাচ্ছে ৷ রেল নিয়ে মানুষ এখন বিরক্ত ৷”

আরও পড়ুন:

  1. ঘাসফুলে ঘেরা বহরমপুরে 'রবিনহুড' অধীরের খতিয়ান
  2. বিষ্ণুপুরে মুখোমুখি সৌমিত্র-সুজাতা, পাঁচ বছরের কাজের নিরিখে জয়ের হ্যাটট্রিক কি হবে বিজেপি প্রার্থীর?
  3. অসিত মালকে ব্যর্থ সাংসদ তকমা বোলপুরবাসীর, কী বলছে রিপোর্ট কার্ড?
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.