কোচবিহার, 16 নভেম্বর: চিরাচরিত প্রথা মেনে রাস চক্র ঘুরিয়ে 212তম রাস উৎসবের সূচনা হল কোচবিহারে। শুক্রবার রাতে মদনমোহন মন্দিরে বিশেষ পুজোর পর ঐতিহ্যবাহী রাস চক্র ঘুরিয়ে রাস উৎসবের সূচনা করেন কোচবিহার জেলাশাসক তথা দেবত্র ট্রাস্ট বোর্ডের সভাপতি অরবিন্দ কুমার মিনা রাস উৎসব সূচনা করেন। তার আগে বিশেষ পুজা অনুষ্টিত হয় মদনমোহন মন্দির প্রাঙ্গণে।
রাজ আমলের প্রথা মেনে সারাদিন উপবাস করে বিশেষ পুজায় বসেন জেলা অরবিন্দ কুমার মিনা। জেলা শাসক রাসচক্র ঘুরিয়ে উদ্বোধনের পর সাধারন মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হয় মদনমোহন ঠাকুর বাড়ির গেট । গেট খুলতেই রাস চক্র ঘোরানোর জন্য ঢল নামে সাধারণ মানুষের ৷ যদিও সন্ধ্যা থেকে মদনমোহন ঠাকুর বাড়ির বাইরে ভিড় করেন সাধারণ মানুষ । এদিন মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো ফল সামগ্রী দিয়েও পুজো দেন জেলাশাসক।
1812 সালে রাসপূর্ণিমার দিন কোচবিহারের মহারাজা হরেন্দ্রনারায়ণ ভেটাগুড়িতে নিজের রাজপ্রাসাদে প্রবেশ করেন। এই উপলক্ষে রাজপ্রাসাদের বাইরে মেলাও বসে। পরবর্তীতে কোচবিহার শহরে রাজপ্রাসাদ তৈরি করা হয় ৷ পাশাপাশি 1890 সালে বৈরাগী দিঘির পাড়ে মদনমোহন মন্দির গড়ে ওঠে ৷ এরসঙ্গে রাস উৎসবও স্থানান্তরিত হয় সেখানে। সেই থেকেই রাস উৎসব কোচবিহারে হয়ে আসছে।
200 বছরের বেশি পুরানো কোচবিহার রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। শুধু কোচবিহার জেলা নয় অসম, নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ থেকেও প্রচুর মানুষ আসেন রাস উৎসবে । মদনমোহন রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে কোচবিহার পৌরসভা পরিচালিত রাস মেলা প্রতি বছর 15 দিন ধরে চলে। মদনমোহন ঠাকুরবাড়ি চত্বরে রাস উৎসব ঘিরে প্রতিদিন চলে ধর্মীয় কীর্তন থেকে শুরু করে চলে যাত্রাপালাও ৷
মহরাজাদের শুরু করা রাস উৎসব রাজাদের সময় চলে যাওয়ায় পর থেকে নিয়ম অনুযায়ী কোচবিহার রাজ আমলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সেই ভূমিকা পালন করেন কোচবিহার জেলাশাসক । সেইমত কোচবিহারে জেলাশাসক মদনমোহন ঠাকুর বাড়ি রাস চক্র ঘুরিয়ে রাস উৎসবের সূচনা করার পরেই সাধারণ মানুষের জন্য রাস চক্র ঘোরাবার সুযোগ হয়ে থাকে । এদিন তার ব্যতিক্রম হয়নি ৷ নিয়ম করে দিনভর উপবাস থাকার পর বিশেষ পূজায় বসেন জেলাশাসক । এরপর রাস চক্র ঘুরিয়ে তার শুভ সূচনা করেন ।