বারাসত, 13 জুন: নিখোঁজ নাবালকের পচা গলা দেহ উদ্ধার ঘিরে বৃহস্পতিবার উত্তাল হল উত্তর 24 পরগনার বারাসতের কাজিপাড়া । পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিবেশীর পরিত্যক্ত বাথরুম থেকে পুলিশ নাবালকের পচা গলা ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে ৷ তিনদিন নিখোঁজ থাকার পর দেহ উদ্ধার হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা ৷ বিকেলে দেহ উদ্ধারের পর পুলিশকে ঘিরে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখায় স্থানীয়রা । পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে এদিন কাজিপাড়ায় 35 নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন মৃতের পরিবারের সদস্যরা। বেশ কিছুক্ষণ ধরে চলে সেই অবরোধ ৷ শেষমেশ পরিস্থিতি সামাল দিতে বারাসতের এসডিপিও'র নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী আসে ঘটনাস্থলে ।
এরপর দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় ৷ তবে চাপা উত্তেজনা ছিল ৷ সেই উত্তেজনায় সন্ধ্যাবেলা ফের রণক্ষেত্রের রূপ নেয় ৷ ক্ষুদ্ধ বাসিন্দাদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি শুরু হয় ৷ পুলিশকে লক্ষ্য করে উত্তেজিত জনতা ইটবৃষ্টি করতে থাকে ৷ অভিযুক্ত মহিলার বাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়। পরিস্থিতি সামলাতে ঘটনাস্থলে নামানো হয় ব়্যাফ ৷
পুলিশের অনুমান, এটি একটি খুনের ঘটনা । পরিকল্পিতভাবে নাবালকের দেহটি ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বাথরুমে। পরিবারেরও দাবি, খুন করা হয়েছে ওই নাবালককে। খুনের সঙ্গে প্রতিবেশী এক মহিলার যোগ রয়েছে বলেও দাবি নিহতের পরিবারের সদস্যদের । কারণ নিখোঁজ হওয়ার আগে ওই নাবালককে শেষবার দেখা গিয়েছিল প্রতিবেশী ওই মহিলার সঙ্গেই । পরিবারের দাবি খতিয়ে দেখতে প্রতিবেশী ওই মহিলাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে ।
জানা গিয়েছে, গত রবিবার থেকে নিখোঁজ ছিল বারাসত নর্থ কাজিপাড়ার বাসিন্দা ওই শিশু । পরিবার সূত্রে খবর, সেদিন বাড়ি থেকে সে টাকা নিয়ে বেরিয়েছিল দোকানে খাবার কিনবে বলে । তারপর থেকে আর খোঁজ মেলেনি তার । বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করা হলেও কোনও হদিশ না-মেলায় শেষমেশ মিসিং ডায়েরি করা হয় বারাসত থানায় । অভিযোগ, নিখোঁজ ডায়েরির পর পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত শুরু করলেও সেভাবে তদন্তে কোনও গতি আসেনি । যার ফলে পুলিশের তদন্ত নিয়ে আগে থেকেই ক্ষোভ ছিল পরিবারের লোকজনের । সেই পুঞ্জীভূত ক্ষোভই এদিন আছড়ে পড়ে নিখোঁজ নাবালকের পচা গলা দেহ উদ্ধার হওয়ার পর । যা ঘিরে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা ।
এদিকে, নিখোঁজ নাবালকের পচা গলা দেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে একদিকে পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে নিহতের পরিবারের সদস্যরা । অন্যদিকে, খুনের ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে মুখর হয়েছে মৃত নাবালকের পরিবারের লোকজন । যদিও নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ মানতে চায়নি পুলিশ । তাঁদের দাবি, সঠিক পথেই তদন্ত এগোচ্ছে । খুনের ঘটনায় দোষীদের কাউকেই রেয়াত করা হবে না । খুনের নেপথ্যে কী কারণ, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।