জলপাইগুড়ি, 14 নভেম্বর: করলাভ্যালি চা বাগানের আদিবাসীদের নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করার অভিযোগ তৃণমূল নেতা কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে ৷ প্রতিবাদে তির ধনুক নিয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হল । পোড়ানো হল অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার কুশপুতুল ৷
দলমত নির্বিশেষে করলাভ্যালি চা বাগানের শ্রমিকরা বৃহস্পতিবার তৃণমূল নেতার মন্তব্যের বিরোধিতা করে আন্দোলনে নামেন । জলপাইগুড়ি থেকে শিলিগুড়িগামী 27 নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান চা-শ্রমিকরা । এক ঘণ্টা জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ থাকে । অবশেষে পুলিশের আশ্বাসে ওঠে অবরোধ ৷
এ দিন করলাভ্যালি চা বাগানের বাসিন্দা তথা অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান টিকা রাউটিয়া বলেন, "আমি একজন আদিবাসী মহিলা । কৃষ্ণ দাস আমাদের করলাভ্যালি চা বাগানের আদিবাসীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন । শুধু তাই নয়, তৃণমূল কংগ্রেসের সোশাল মিডিয়া প্লাটফর্মে করলাভ্যালি চা বাগানের আদিবাসীদের অপমান করা হয়েছে । আমাদের নিয়ে ভুয়ো ভিডিয়ো দিয়ে মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে ৷ তাই আমরাও প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছি ।"
করলাভ্যালি চা বাগানের শ্রমিক মহেশ রাউটিয়া অভিযোগ করে বলেন, "গত 11 তারিখ কালীপুজো উপলক্ষে আমাদের চা বাগানে ফুটবল মাঠে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় । সেখানে সবাই আনন্দ করে । কিন্তু নিজেকে তৃণমূল নেতা বলে দাবি করা কৃষ্ণ দাস আদিবাসীদের নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় কুরুচিকর মন্তব্য করেন । তৃণমূল কংগ্রেসের সোশাল মিডিয়া প্লাটফর্মেও এই নিয়ে মন্তব্য করা হয় । আমরা মনে করেছি, চা বাগানের আদিবাসীদের তিনি অপমান করেছেন । তিনি আবার নিজেকে জননেতা বলেন । আমরা চাই প্রশাসন তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করুক ।"
যদিও অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা কৃষ্ণ দাস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন । তিনি বলেন, "আদিবাসী কাউকে আমি অপমান করিনি । পুজোর মেলাকে কেন্দ্র করে জুয়া খেলা হয়েছিল ৷ মদ বিক্রি হয়েছে । তাতে বেশকিছু নেতার পকেট ভারী হয়েছে ৷ সেটা প্রকাশ্যে আনতেই আমি ভিডিয়োটি ভাইরাল করেছি । আমি যদি ভুল হই রাজনীতি ছেড়ে দেব ৷" কৃষ্ণ দাসের অভিযোগের তির তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি তপন দে'র বিরুদ্ধে । তিনিও ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ।
এ দিন করলাভ্যালি চা বাগানের ম্যানেজার রথীন্দ্র গঙ্গোপাধ্যায় শ্রমিকদের আন্দোলনে সামিল হন । তিনি বলেন, "আমার বাগানের শ্রমিকরা রাস্তায় নেমেছেন ৷ তাই আমিও এসেছি তাঁদের সঙ্গে সামিল হতে । চা বাগানে মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছিল তাতে আমিও ছিলাম । আমাদের বাগানের নাম বদনাম করা হয়েছে । আমি শ্রমিকদের ম্যানেজার তাই আমি মুখ বন্ধ করে থাকতে পারি না।"
বিজেপির জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামী বলেন, "আদিবাসী সমাজকে অপমান করার অধিকার কোনও তৃণমূল নেতাকে দেওয়া হয়নি । এটা তৃণমূল কংগ্রেসের দুই গোষ্ঠীর নেতাদের লড়াই মাত্র ।"