কলকাতা, 2 এপ্রিল: এপ্রিলের পয়লাতেই বঙ্গের তাপমাত্রা 37 ডিগ্রি ছুঁয়েছে। আগামীতে গরম আরও বাড়বে বলেই জানিয়েছে হাওয়া অফিস ৷ অতিরিক্ত এই গরমে এখনই দরদর করে ঘামছেন মানুষজন। কিন্তু এই ঘাম-ই আপনার অজান্তে ডেকে আনছে ডেঙ্গি বাহক মশাকে ৷ কীভাবে? কলকাতা কর্পোরেশনের বিশিষ্ট পতঙ্গ বিশারদ তথা চিকিৎসক দেবাশিস বিশ্বাস দিলেন তারই ব্যাখ্যা ৷
তিনি বলেন, "এই গরমে আমরা সকলে দরদর করে ঘামছি। এই ঘাম খুব বিপদজনক। বিপদ বলার কারণ ঘামের মধ্যে থাকে ল্যাকটিক অ্যাসিড। সেই গন্ধে ডেঙ্গির প্রধান বাহক এডিস ইজিপ্টাই আকর্ষিত হয়। যাঁরা ঘামছেন, তাঁদের একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে, ঘাম হবেই তবে সেটা দ্রুত মুছে ফেলতে হবে। যদি দিনে একাধিকবার স্নান করেন সেটা ভালো। তাতে ঘাম জমবে না ৷ আর ঘাের গন্ধ না থাকায় ইডিশ মশা কামড়তে আসবে না। অনেকে আবার সুগন্ধি সাবান ব্যবহার করেন স্নান করতে। তাতে বিপদ আরেকটু বাড়ে।"
তিনি আরও বলেন, "শুনতে অবাক লাগলেও এই সুগন্ধি সাবানে বেশি আকর্ষিত হয় ডেঙ্গি মশা এডিস ইজিপ্টাই।" তিনি আরও একটি বিষয় নজরে আনেন সেটা হল, অতিরিক্ত ফাস্টফুডও কিন্তু বেশি ঘামের কারণ হতে পারে ৷ তাঁর কথায়, খেতেই পারেন, তবে বেশি খেলে বেশি ঘাম। বেশি ঘাম মানেই বেশি ল্যাকটিক অ্যাসিড। আর সেটা হলেই আপনার উপর নজর পড়বে ডেঙ্গি মশার। আরেকটা বিষয় মাথায় রাখা উচিত যে এই গরমে হালকা রঙের জামা কাপড় পড়া ভালো। কারণ এডিস মশা অন্য মশার মতো দেখতেও পায়। তাঁদের প্রিয় পছন্দের রংগুলো হল গাঢ় নীল, লাল ও কালো। সুতরাং শত্রু মশার হাত থেকে নিষ্কৃতি পেতে হালকা রঙের জমা পড়া ভালো।
দেবাশিস বিশ্বাস আরও জানান, ডেঙ্গি প্রতিরোধে সজাগ থাকুন বছরভর। জানুয়ারি মাস শীতলতম মাস। ডেঙ্গি হতে উষ্ণতা লাগে 16 ডিগ্রি থেকে 40 ডিগ্রি। তবে জানুয়ারিতে গড় তাপমাত্রা থাকে 19 ডিগ্রির কাছাকাছি ৷ ফলে এই সময় ডেঙ্গি হতে পারে। আবার জল জমার বিষয় না থাকলেও জল শূন্য কলকাতা হয় না। যেখানে যতটুকু জমা জল থাকুক না কেন সেখানেই ডেঙ্গি মশা ডিম পাড়ে। তাই জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর সকলকেই সজাগ থাকতে হবে। তাই এক্ষেত্রে মীরা দেব বর্মনের লেখা এই গান 'বর্ণে, গন্ধে, ছন্দে গীতিতে হৃদয় দিয়েছ দোলা...' ভীষণ তাৎপর্যপূর্ণ ৷ কারণ জামাকাপড়ের বর্ণ ও ঘামের গন্ধেই আকৃষ্ট হতে পারে ডেঙ্গি বাহক এডিস ইজিপ্টাই মশা ৷
আরও পড়ুন
1. দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে তাপপ্রবাহ, হলুদ সতর্কতা জারি হাওয়া অফিসের
2. 'জ্বর-সর্দি-কাশিকে অনীহা নয়, হতে পারে শিশু মৃত্যুও'
3. গরমে সাবধান না হলে কিডনিতে হতে পারে পাথর, সতর্কবার্তা চিকিৎসকের