আসানসোল, 20 ফেব্রুয়ারি: কুম্ভস্নানের উদেশ্যে প্রয়াগরাজ যাওয়ার পথে দুর্ঘটনার কবলে পুণ্যার্থীদের গাড়ি। এই ঘটনায় 2 জনের মৃত্যু হয়েছে ৷ আহত হয়েছেন 6 জন। আহতদের মধ্যে 4 জন মহিলা। এক মহিলার অবস্থা গুরুতর। মৃত ও আহতরা সবাই বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের অযোধ্যা গ্রামের বাসিন্দা। আহতরা আসানসোল জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনাটি ঘটেছে 19 নম্বর জাতীয় সড়কে কুলটি থানার চৌরঙ্গি মোড়ের কাছে ৷
জানা গিয়েছে বাঁকুড়ার বিষ্ণপুরের অযোধ্যা গ্রাম থেকে একটি জায়লো গাড়িতে 8 তীর্থযাত্রী প্রয়াগরাজের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন ৷ বুধবার রাত 9টা নাগাদ খাওয়াদাওয়া সেরে তাঁরা বাঁকুড়া থেকে রওনা হন। আসানসোল পেরিয়ে কুলটি চৌরঙ্গি মোড় ঢোকার আগেই তাঁদের গাড়িটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। পুলিশ জানিয়েছে, একটি লরির পিছনে সজোরে ধাক্কা মারে জায়লো গাড়িটি ৷ এই ঘটনায় শান্তনু মুখোপাধ্যায় (65) এবং শৈলেন বন্দ্যোপাধ্যায়ের (60) মৃত্যু হয় ৷
আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের এসিপি (কুলটি) জাভেদ হুসেন জানান, "বাঁকুড়ার থেকে গাড়িটি প্রয়াগরাজ যাচ্ছিল। গাড়িতে চালক-সহ 8 জন যাত্রী ছিলেন। দু'জনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি ৷ গাড়ির গতি বেশি ছিল ৷ লরিটি রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল কি না, পুলিশ তদন্ত করে দেখছে ।" দুর্ঘটনায় জায়লো গাড়িটি পুরো দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছে ৷ কারণ তদন্ত করছে পুলিশ। যে লরিটির পিছনে জায়লো গাড়িটি ধাক্কা মারে, সেটিকে পুলিশ আটক করেছে ৷
আহত হয়েছেন শান্তনু মুখোপাধ্যায় ছেলে সৌরভ মুখোপাধ্যায়, স্ত্রী মনসা মুখোপাধ্যায়, পুত্রবধু অনন্যা মুখোপাধ্যায় ৷ এছাড়াও শৈলেন বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রূম্পা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর এক নিকট আত্মীয় শিউলি কর্মকার ও গাড়ির চালক সোমনাথ চক্রবর্তী আহত হয়েছেন। আহতদেরও উদ্ধার করে দ্রুত আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। আহতদের মধ্যে শিউলি কর্মকারের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পুলিশ দেহগুলি আসানসোল জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে ৷

চালক সোমনাথ চক্রবর্তী ইটিভি ভারতকে বলেন, "আমি এর আগেও তিনবার গাড়ি নিয়ে প্রয়াগরাজ গিয়েছি ৷ এবারে মামা, মামিমা-সহ পরিবারের অন্যদের নিয়ে যাচ্ছিলাম ৷ কুলটি ঢোকার মুখে একটি লরি লেন পাল্টানোর সময় হঠাৎ দাঁড়িয়ে যায়। আমার সামনে চলে আসে। আর কিছু মনে নেই ।"
মৃত শান্তনু মুখোপাধ্যায়ের ছেলে সৌরভ মুখোপাধ্যায় বলেন, "আমাদের বাড়ি বিষ্ণুপুরের অযোধ্যা গ্রামে ৷ প্রয়াগরাজের উদ্দেশ্যে আমরা কুম্ভস্নান করতে যাচ্ছিলাম। আমি পিছনের সিটে বসে ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই ৷ দেখি আমার স্ত্রী জানালার বাইরে মুখ বের করে পড়ে আছে ৷ মা বাইরে ছিটকে পড়েছে ৷ বাবার পুরো মুখে আঘাত লেগেছে। বাবা আর বেঁচে নেই। আমার এক মামাও এই ঘটনায় মারা গিয়েছে।"