কলকাতা, 21 ফেব্রুয়ারি: অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাসভবন ভাঙার ঘটনায় এবার রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করল বিরোধীরা । শুক্রবার এই নিয়ে প্রতিবাদ এবং নিন্দায় সরব হলেন রাজ্যের বিরোধী দলগুলি ।
সিপিআইএমের বক্তব্য:
সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রামচন্দ্র ডোমের কথায়, "এই ঘটনা খুবই দুর্ভাগ্যজনক এবং বেদনাদায়ক । শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতীর সঙ্গে ঠাকুর পরিবারের সম্পর্ক ওতপ্রোতভাবে জড়িত । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরে পরবর্তীতে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্বভারতীর পরবর্তী আচার্য হয়েছিলেন । স্বাভাবিকভাবেই তিনি যে বাড়িতে থাকতেন সেটি অবশ্যই ঐতিহ্যমণ্ডিত ৷ এটি একটি অত্যন্ত মূল্যবান ঐতিহ্য তাকে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন ছিল । এই কাজে বিশ্বভারতী থেকে শুরু করে রাজ্য সরকার এবং প্রশাসন সবারই দায়িত্ব । কিন্তু সেই বাড়ি প্রায় ভেঙে ধ্বংস করে দিয়েছে । একটা বাড়িকে ভেঙে ফেলতে গেলে তো সেটা আর রাতারাতি হয় না বেশ কিছুটা সময় ধরেই এই কাজ করা হয়েছে । তাহলে আজ যে এই কাজ বন্ধ করে বোলপুর পুরসভার পক্ষ থেকে তালা ঝোলানো হয়েছে । এতদিন কি তারা নীরব দর্শক ছিল ? তার এই ঐতিহ্য রক্ষা করার ব্যাপারে বিশ্বভারতী এবং বোলপুর প্রশাসন কতটা সক্রিয় সেই বিষয়ে প্রশ্ন উঠছে । স্থানীয় প্রশাসনই বা কি ভূমিকা পালন করেছে ?
কংগ্রেসের বক্তব্য:
পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সভাপতি শুভঙ্কর সরকার মনে করেন, "রাজনৈতিকভাবে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আমি বলতে চাই যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রোভিন্সিয়াল কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের সবার ৷ শান্তিনিকেতনে ঐতিহাসিক অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বসতবাটি । তা ভেঙে ফেলা হচ্ছে । অবনপল্লী এক ইতিহাস, যা ধ্বংস করা হচ্ছে । তাই রাজ্য সরকার, শান্তিনিকেতনের পরিচালক মণ্ডলী এবং রাজ্যের হেরিটেজ কমিটির কাছে আমার আবেদন যে দয়া করে এই বাড়িটিকে অধিগ্রহণ করুন ৷ যাতে এই জায়গাটি জমি হাঙরদের হাতে না যায় । এটি ব্যক্তিগত সম্পত্তি হতেই পারে কিন্তু এই ধরনের অনেক সম্পত্তি রাজ্য সরকার অধিগ্রহণ করেছে । তাই আবারও আবেদন জানাব জেনেই হেরিটেজের বিলোপ ঘটাবেন না । ধ্বংস করবেন না । তাহলে ইতিহাস ক্ষমা করবে না । এটা জাতিসত্তাকে এবং বাংলার ইতিহাসকে শেষ করে দেওয়ার একটা চক্রান্ত । তাই এর বিরোধে বাংলার মানুষ সোচ্চার হন ।"
বিজেপির প্রতিক্রিয়া:
প্রাক্তন সাংসদ তথা বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন যে,"এই রাজ্য সরকার হল মাফিয়াদের সরকার । বাড়ি-নদী-জমি-জায়গা-বালি-কয়লা সব লুট হয়ে যাচ্ছে । পয়সা দিয়ে সব কিনে নিচ্ছে । ঐতিহ্য বা সংস্কৃতির কোনও মূল্য নেই । তাই সারা পশ্চিমবঙ্গজুড়ে ভোট রাজত্ব চলছে যারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে । এরাই দলকে চালাচ্ছে । ভোটও দিয়ে দিচ্ছে । এদের কাছে সংস্কৃতির কোনও গুরুত্ব নেই তাই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে । সরকার চলছে ঠিকই কিন্তু সরকারের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই ।
যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি ।