সন্দেশখালি, 24 ফেব্রুয়ারি: কেটে গেল 51 দিন ৷ সন্দেশখালিতে এখনও জ্বলছে আগুন ৷ গতকাল দিনভর দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়েছে সন্দেশখালির বেড়মজুর। বিক্ষোভ থেকে অবরোধের জেরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জারি করা হয়েছে 144 ধারা। এরপরই বিক্ষোভ সামাল দিতে সন্ধ্যায় মোড়ে মোড়ে সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়েছে পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চলছে রাজ্যপুলিশের রুটমার্চ ৷ গ্রামে বসেছে পুলিশের সহায়তা ক্যাম্প।
সূত্রের খবর, বেড়মজুর গ্রামে ঢোকার রাস্তার মোড়ে মোড়ে এই সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। মূলত নজরদারি চালাতেই পুলিশের তরফে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কোথাও কোনও জমায়েত হলে কিংবা অবাঞ্ছিত কোনও ব্যক্তি গ্রামে ঢোকার চেষ্টা করলে তা সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে ঠেকানো সম্ভব হবে বলেই মনে করছেন পুলিশের শীর্ষকর্তারা। কারণ, যত দিন যাচ্ছে সন্দেশখালিতে ক্ষোভের পারদ ততই বাড়ছে। তারইমধ্যে সন্দেশখালি ছাড়িয়ে গ্রামবাসীদের ক্ষোভের আঁচ এসে পৌঁছেছে বেড়মজুর, ঝুপখালি এবং কাছারি এলাকাতে। সেখানেও শুক্রবার রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে আন্দোলনে নামেন মহিলারা।
এই ঝুপখালি এবং কাছারি এলাকাতেই শাহজাহানের ভাই শেখ সিরাজউদ্দিনের বিরুদ্ধে ভুরিভুরি অভিযোগ বাসিন্দাদের। যার জেরে সিরাজউদ্দিনের ভেড়ির আলাঘরে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন গ্রামবাসীরা। কীর্তিমান শেখ সিরাজউদ্দিনের বিরুদ্ধে জোর জুলুম, মারধর, আবাস ও জবকার্ডের টাকা আত্মসাতের মতো গুচ্ছগুচ্ছ অভিযোগ রয়েছে। তাই সুবিচার চেয়ে শুক্রবার লাঠি, ঝাঁটা হাতে রাস্তায় নামেন মহিলারা। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে এলাকা শান্ত রাখতে গোটা বেড়মজুরজুড়ে জারি করা হয় 144 ধারা।
এলাকার উপর নজর রাখতে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজও শুরু করে প্রশাসন। রাস্তার মোড়ে মোড়ে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয় গোটা এলাকা। এদিকে, ডিজি রাজীব কুমারের কড়া নির্দেশ এবং অশান্ত বেড়মজুর-কে শান্ত করতে রাতে আবারও অ্যাকশনে নামে পুলিশ। থমথমে পরিবেশের মধ্যেই বিভিন্ন এলাকায় চলছে রুটমার্চও! নেতৃত্বে রয়েছেন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার।
পুলিশের স্পষ্ট যুক্তি, আইন ভাঙলেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেই কারণে অশান্তি পাকানোর অভিযোগে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী-সহ পাঁচ গ্রামবাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও দাবি পুলিশের। অন্যদিকে, শনিবার সকালে পুলিশের তরফে সহায়তা ক্যাম্প বসানো হয়েছে গ্রামের রাস্তার ধারে। যেখানে গ্রামবাসীরা তাঁদের যাবতীয় অভাব, অভিযোগ জানাতে পারবেন। ইতিমধ্যে শাহজাহানের ভাই সিরাজউদ্দিন এবং তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে জমি দখল-সহ বেশকিছু অভিযোগ ক্যাম্পে জমা পড়েছে বলেই খবর প্রশাসন সূত্রে।
আরও পড়ুন: