বর্ধমান, 26 অগস্ট: ফেসবুকে আলাপের পরে প্রথমে বন্ধুত্ব। পরে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে আদিবাসী তরুণীর সঙ্গে অভিযুক্ত অজয় টুডুর। কিন্তু, পরে ওই তরুণী জানতে পারে অজয়ের সঙ্গে একাধিক মেয়ের সম্পর্ক রয়েছে। তাই ওই তরুণী সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিল। কিন্তু, অজয় সম্পর্ক ভাঙতে রাজি হয়নি। এর জেরেই দু'জনের মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। যার জেরেই এই খুনের ঘটনা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে।
বর্ধমানের নান্দুরে আদিবাসী তরুণীকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত অজয় টুডুকে গ্রেফতার করার পরে পুলিশ 10 দিনের পুলিশ হেফাজতে নেয়। শনিবার রাতে ধৃত অজয়কে নিয়ে পুলিশ গাংপুর এলাকায় যায়। সেখানের ঝোপ থেকে একটি রক্তমাখা ছুরি ও রক্তমাখা হলুদ টি-শার্ট, জিনসের প্যান্ট উদ্ধার করে ৷ ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, দু'জনেই তারা বেঙ্গালুরুতে আলাদা আলাদা শপিংমলে কাজ করত। দু'জনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা হওয়ার পরে ওই তরুণী জানতে পারে একাধিক মেয়ের সঙ্গে অজয়ের সম্পর্ক আছে। ফলে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করে ওই তরুণী। কিন্তু, অজয় সম্পর্ক ভাঙতে রাজি হয়নি।
ঘটনার দিন-গত 12 অগস্ট একসঙ্গেই বাড়ি ফেরে তারা ৷ 14 অগস্ট সন্ধ্যা নাগাদ অজয় ওই তরুণীকে ফোন করে তাকে দেখা করতে বলে। কিন্তু, ওই তরুণী আর রাজি হয়নি। এদিকে, বারবার ফোন করতে থাকে অজয়। তখন ওই তরুণী বাথরুম যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটা অন্ধকার জায়গায় অজয়ের সঙ্গে দেখা করে। সেখানে ফের দু'জনের মধ্যে ঝগড়াঝাটি শুরু হয়। সেই সময় হঠাৎ তাকে গলা চেপে ধরে ধারালো ছুরি দিয়ে নলি কেটে দেয়।
তারপর অজয় সেখান থেকে বেরিয়ে গাংপুর সংলগ্ন একটা জঙ্গলে রক্তমাখা ছুরি ও জামাকাপড় একটা প্যাকেটে ভরে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে অজয় ট্রেন ধরে হাওড়া পালিয়ে যায়। তারপর পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায় সে পালিয়ে বেড়ায় ৷ মোবাইল ব্যবহার না-করায় পুলিশ তার গতিবিধি আন্দাজ করতে পারছিল না। দু-একদিন আগে পুলিশ খড়গপুর এলাকায় তার মোবাইলের লোকেশন পায়। পরে আবার ফোন বন্ধ রাখে অজয় ৷ শেষ পর্যন্ত তাকে পাঁশকুড়া এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে।
গাংপুরের এক বাসিন্দা অনুপ দাস বলেন, "আমাদের বাড়ির পিছনে একটা ঝোপ মতো আছে ৷ সেখান থেকে প্লাস্টিক মোড়া প্যাকেটে রক্তমাখা হলুদ রংয়ের গেঞ্জি ও জিন্সের প্যান্ট আর রক্তমাখা ছুরি পেয়েছে পুলিশ।" পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার আমনদীপ বলেন, "জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছে ওই যুবক। ঠিক কী কারণে খুন, এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কি না, সবকিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।"