কাকদ্বীপ ও বিধাননগর, 16 জানুয়ারি: আরজি কর কাণ্ডে প্রতিবাদ করা জুনিয়র ডাক্তার আসফাকুল্লার নাইয়ার বাড়িতে বিধাননগর পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে কাকদ্বীপ বিধানসভার অন্তর্গত হারুড পয়েন্ট পোস্টাল থানার রামতলু নগর এলাকায় ওই জুনিয়র ডাক্তারের বাড়িতে পৌঁছয় 30 থেকে 40 জন পুলিশের দল ৷ বেশ কয়েকঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালিয়ে বেরিয়ে যান অফিসাররা ৷
বর্তমানে আরজি কর হাসপাতালের হস্টেলেই থাকেন আসফাকুল্লা। তাঁর বাড়িতে তদন্তের ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছে এলাকার মানুষজনেরা । এ বিষয়ে আসফাকুল্লার দাদা অলিউল্লাহ নাইয়া বলেন, "সকালে বেশ কয়েকজন পুলিশ অফিসার আসফাকুল্লার ঘর তল্লাশি করতে আসে। বেশ কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করে এবং সিজার লিস্ট আমাকে দেন।"
নামপ্রকাশের অনিচ্ছুক এক প্রতিবেশী মহিলা বলেন, "বৃহস্পতিবার সকালে আমরা দেখি বেশ কয়েকজন পুলিশ ওদের বাড়িতে এসেছে তদন্ত করতে। আমার মনে হয় মহিলা চিকিৎসকের ঘটনায় তদন্ত করতে এসেছেন অফিসাররা।"
তবে এই বিষয়ে জুনিয়র চিকিৎসক আসফাকুল্লা নাইয়া বলেন,"একটা চিঠি দিতে 40 জন পুলিশের প্রয়োজন পড়ে না। আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রী বা পার্থ চট্টোপাধ্যায় অথবা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক নয় । এমনকি কোনও অনৈতিক কাজের সঙ্গেও যুক্ত নয়। একটা কর্মক্ষেত্রে ধর্ষণ ও খুন করার মত ঘটনার প্রতিবাদ না করলে কার প্রতিবাদ করব ? এগুলো সবটাই ষড়যন্ত্র।"
এই ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। আসফাকুল্লার পাশে দাঁড়িয়ে বিকেলে আন্দোলনে নামছে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডাক্তারস ফ্রন্ট। তার সঙ্গে রয়েছেন সিনিয়র চিকিৎসকরাও ৷ অন্যদিকে, জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরসের তরফে জানানো হয়েছে, মেডিক্যাল কাউন্সিল কারও বাড়িতে পুলিশ পাঠাচ্ছে এরকম নজির ইতিহাসে নেই । স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে প্রতিবাদীদের কণ্ঠরোধ করার জন্য, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্দেশ্যেই এইসব আয়োজন ।
তবে আসফাকুল্লার বিরুদ্ধে প্রথম এই অভিযোগ তুলেছিল ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন । তাদের অভিযোগ ছিল, এখনও পর্যন্ত নিজের কোর্স শেষ না-করে বিশেষজ্ঞের ডিগ্রি ব্যবহার করছেন আসফাকুল্লা। এরপরেই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়ে থানায় । এই বিষয়ে বিধাননগর থানার ডিসি আনিস সরকার বলেন, "আমাদের কাছে অভিযোগ আসার পর বিধাননগর আদালত থেকে অনুমতি নিয়েছি । সেখান থেকে সার্চ ওয়ারেন্ট নিয়ে আজ জুনিয়র চিকিৎসকের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয় । এই বিষয়ে যাবতীয় তথ্য তুলে দেওয়া হবে বিধাননগর আদালতে ।"