কলকাতা, 13 জুন: ভোট পরবর্তী হিংসায় আক্রান্তদের পরিবারের 400 জনকে সঙ্গে নিয়ে রাজভবনের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ সেখানে পৌঁছনোর আগেই তাঁকে আটকে দিল পুলিশ ৷ বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করার জন্য রাজভবন যাচ্ছিলেন বিরোধী দলনেতা ৷ কিন্তু রাজভবন লাগোয়া গ্রেট ইস্টার্ন মোড়ে বিকেল 5টা নাগাদ আটকে দেওয়া হয় তাঁকে ৷ পরে প্রায় এক ঘণ্টা আটকে রাখার পর শুভেন্দুর পথ ছাড়ে পুলিশ ৷
এরপরই রণমূর্তি ধারণ করে শুভেন্দু বলেন, "আমি মমতার মতো ভাঙচুরের রাজনীতি করি না ৷ রাজ্যপালের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি ৷ রাজ্যপাল জানিয়েছেন, রাজভবনের বাইরের রাস্তা পুলিশের তত্ত্বাবধানে ৷ তবে অন্য়ায় করেছে পুলিশ ৷ 144-এর নামে এখানে আটকাতে পারে না ৷ আমি মিছিল করে যাইনি ৷ ডিজি এবং স্বরাষ্ট্রসচিবের রিপোর্ট তলব করেছেন রাজ্যপাল সেটাই ওএসডি জানিয়েছেন ৷"
বিজেপি নেতা পুলিশ কমিশনারকে লক্ষ করে হুমকির সুরে বলেন, "বিনীত গোয়েলের নেতৃত্বে আমাদের আটকানো হচ্ছে ৷ কেন্দ্রীয়বাহিনী রয়েছে, তবু রাজ্য পুলিশ তাদের ব্যবহার করছে না ৷ এই লড়াই আরও তীব্র হবে ৷ পুলিশ আমাদের ঢুকতে না দিয়ে মমতার ফ্যাসিবাদী চরিত্র এবং প্রতিহিংসামূলক চরিত্র মানুষ দেখতে পেল ৷ রাজ্যপালের অনুমোদন সত্ত্বেও আমাদের আটক করা হল ৷ রাজ্যপালকে মান্যতা দিচ্ছে না পুলিশ ৷ আমরা সঠিক জায়গায় একে চ্যালেঞ্জ করব ৷ বিনীত গোয়েলকে আমি হুঁশিয়ারি দিয়ে গেলাম ৷"
ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে শুভেন্দু বলেন, "ভোটের পর মানুষকে মেরেছে মমতা সরকার ৷ বাংলার মেয়ে, শিশুদের মেরেছে ৷ 1200 মানুষকে মেরেছে, 7 হাজার দোকান ভেঙেছে, 10 হাজার মানুষ ঘর ছাড়া ৷ গণতন্ত্রে মানুষই শেষ কথা বলে ৷ আজ পুলিশ রাজ্যপালকে চ্য়ালেঞ্জ করেছে ৷ এই পুলিশই স্য়ালুট দিয়ে ঢোকাবে ৷ আমি ঠিক জায়গায় যাব ৷ এদের সম্মানের সঙ্গে বাড়ি ফেরাব ৷ আমি মমতার মতো অর্ধশিক্ষিত অশিক্ষিত নই ৷"
ডায়মন্ড হারবারের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ দাস ওরফে ববি এদিন রাজভবনের উত্তর গেটের বাইরে অবস্থান বিক্ষোভে হাজির ছিলেন ৷ তবে শুভেন্দু চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর তিনি চলে যান ৷ এই ঘটনায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি ৷
ভোট পরবর্তী হিংসায় আক্রান্ত প্রায় 400 জনকে সঙ্গে নিয়ে বৃহস্পতিবার রাজ্যপালের কাছে যাচ্ছিলেন বিরোধী দলনেতা ৷ বিষয়টি জানার পরেই রাজভবন চত্বর কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয় । রাজভবনের উত্তর গেট এবং গ্রেট ইস্টার্ন রাস্তার দিকে দু'পাশে ব্যারিকেড করে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে ৷ এছাড়া টেলিফোন ভবনের সামনে এবং হাইকোর্টের লাগোয়া রাস্তাতেও ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ৷
বলা যায়, বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে আটকাতে একরকম চক্রব্যূহ ব্যবস্থা করেছে পুলিশ প্রশাসন ৷ শুধুমাত্র বিরোধী দলনেতা রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসায় এত পুলিশি তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ৷ অন্যদিকে, রাজভবনের উত্তর গেটের সম্মুখে টেলিফোন ভবনের সামনের ব্যারিকেডের বাইরে জটলা তৈরি হয় । সেখানেই স্লোগান দিতে থাকেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা ।