দুর্গাপুর, 29 জুলাই: কাঁকসায় অজয় নদ থেকে অবৈধভাবে বালি তোলা হচ্ছিল। সেই খবর ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরে পৌঁছয় ৷ কাঁকসার বনকাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের কোটালপুকুর সংলগ্ন অজয় নদের অবৈধ বালিঘাটে হানা দেন কাঁকসা থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের আধিকারিকরা। অভিযানে যেতেই বালি এবং ট্রাক্টর ফেলে চম্পট দেয় অবৈধ বালি কারবারিরা। বাজেয়াপ্ত করা হয় দু'টি ট্রাক্টর।
সূত্রের খবর, বনকাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের পাশেই রয়েছে অজয় নদ। সেই নদের বিভিন্ন জায়গায় অবৈধ বালিঘাট করা হয়েছে। কোথাও জেসিবি করে কোথাও আবার বেলচা করে বালি লোড করা হচ্ছে ট্রাক্টর, ডাম্পার আর ট্রাকে। দিনের আলোয় বা রাতের অন্ধকারে ট্রাক্টরে, ট্রাকে এবং ডাম্পারে করে পাচার করা হচ্ছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অবৈধভাবে বালি।
দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুই কলকাতায় বিধানসভার বাদল অধিবেশনে যোগ দিতে গিয়েছেন। ফোনে তিনি ইটিভি ভারতের প্রতিনিধিকে বলেন, "নামমাত্র বালিবন্ধের কথা বলা হয়। বেআইনি বালি বন্ধ হয় না। কাঁকসায় চুনোপটিদেরকে ধরে দেখানো হচ্ছে। রাঘব বোয়ালরা কিন্তু এখনো অধরা। আমি বিধানসভায় সুযোগ পেলে বেআইনি বালির রমরমা কারবার পশ্চিম বর্ধমান জেলায় চলছে সেই কথা তুলে ধরব। কিন্তু আমাদেরকে সুযোগ দেওয়া হয় না বলবার জন্য। বিধানসভাতেও গণতন্ত্রের হত্যা হচ্ছে।"
ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের আধিকারিক বিজয় মাঝি বলেন, "গোপন সূত্রে খবর পেয়ে, আমরা অভিযান চালায়। এভাবে অভিযান চলবে, অবৈধভাবে কোনও বালিরঘাট চলতে দেওয়া হবে না। দু'টি ট্রাক্টর বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের সন্ধানেও তল্লাশি শুরু হয়েছে।"
উল্লেখ্য, দুর্গাপুর মহকুমার অণ্ডাল, পাণ্ডবেশ্বর, দুর্গাপুর-ফরিদপুর ও কাঁকসা ব্লকে বেআইনি বালি কারবার শুরু হয়েছে ঘোর বর্ষার সময়। এই সময়ে বালি তোলা নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করা হলেও তা বন্ধ হয়নি। আসানসোল দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক অগ্রিমিত্রা পল ইতিমধ্যেই বেআইনি বালিকার বানিয়ে সরব হয়েছেন। আইন অনুযায়ী, জুন মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত নদী থেকে বালি তোলার উপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও দুর্গাপুর মহকুমার ফরিদপুর, অণ্ডাল, পাণ্ডবেশ্বরে ও কাঁকসা ব্লকে এই কারবারের সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে।
রানিগঞ্জের নিমচার এক বাসিন্দার হাত ধরেই এই সিন্ডিকেট চলছে বলে অভিযোগ। দুর্গাপুর মহকুমার বিভিন্ন জায়গায় দেখা যাচ্ছে, পাহাড় প্রমাণ বালির স্তূপ করে রাখা হয়েছে। রাতের অন্ধকারে ঘাট থেকে সেই বালি এসে পৌঁছে যাচ্ছে সেই স্টক পয়েন্টগুলিতে। প্রকাশ্যে এখান থেকেই বালি পাচার হয়ে যাচ্ছে গন্তব্যস্থলে। এমন ছবিও ধরা পড়ল ইটিভি ভারতের ক্যামেরায়। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারংবার বেআইনি বালি বন্ধের বিরুদ্ধে সরব হলেও সেই নির্দেশিকাকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পশ্চিম বর্ধমান জেলায় বেআইনি বালির রমরমা কারবার অব্যাহত ৷