ব্যারাকপুর, 26 অগস্ট: আরজি কর-কাণ্ডের আবহেই এবার সামনে এলো মদ্যপ পুলিশ কনস্টেবলের 'কীর্তি'। প্রতিবাদ মিছিলে সামিল হওয়া এক যুবতীর সঙ্গে অভব্য আচরণের অভিযোগ উঠেছে ওই কনস্টেবলের বিরুদ্ধে। জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ওই কনস্টেবল কর্মরত রয়েছেন হালিশহর থানায় ৷ কর্তব্যরত অবস্থায় এক পুলিশ কর্মীর এহেন আচরণে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল সুকুমার মাণ্ডির বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ না নেওয়া হলেও তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত হতে পারে বলে সূত্রের খবর। তবে, এনিয়ে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের কোনও আধিকারিক মুখ খুলতে চাননি।
জানা গিয়েছে, আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ জানাতে রবিবার রাতে কাঁচরাপাড়া ও হালিশহরের ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগানের সমর্থকরা একত্রিত হয়েছিলেন বাগমোড় এলাকায়। সেখানেই দু'দলের সমর্থকরা যৌথভাবে আন্দোলন করছিলেন। চলছিল নারী সুরক্ষার দাবিতে স্লোগানও। অভিযোগ, তখনই উর্দি পড়ে ওই কনস্টেবল সেখানে এসে টলমল পায়ে ভিড় সরাতে থাকেন। এই ঘটনা দেখে সন্দেহ হয় ওই যুবতীর।
তিনি এর প্রতিবাদ করতে গেলে কর্তব্যরত অবস্থায় ওই মদ্যপ কনস্টেবল তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার শুরু করেন বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, যুবতীকে গালিগালাজ করার অভিযোগও উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। এরপরই কীর্তিমান মদ্যপ কনস্টেবলকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায় ৷ পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
পেশায় মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ ওই যুবতী বলেন, "আরজি করের ঘটনায় বিচার চেয়ে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান সমর্থকরা পথে নেমেছেন। তখন আমিও তাতে যোগ দিয়েছিলাম ৷ লক্ষ্য করলাম, ওই কনস্টেবল মদ খেয়ে টলমল পায়ে সবাইকে সরিয়ে দিচ্ছেন মিছিল থেকে। অন ডিউটি মদ্যপ পুলিশের এই কীর্তি দেখে প্রতিবাদ করেছিলাম। তখন উনি আমাকে ধাক্কা দিয়ে বাজে কথা বলেন। সেখানে কর্তব্যরত অন্য পুলিশকে বিষয়টি জানালে উলটে মদ্যপ কনস্টেবলের ব্যাক্তিগত কারণ বলে এড়িয়ে যান তাঁরা।" যাঁর নিজেরই টলমল অবস্থা, সে সুরক্ষা দেবে নারীকে ? প্রশ্ন তুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হন অভিযোগকারী যুবতী।
এদিকে, বিষয়টি নিয়ে কাঁচড়াপাড়া ইস্টবেঙ্গল ফ্যান ক্লাবের সদস্য আকাশ নীল দে বলেন, "আমরা ঘটনার প্রতিবাদ করলেও কেউ অভিযুক্ত পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হয়নি । ওই পুলিশকে আমরাই থানা পর্যন্ত নিয়ে যাই। থানায় অভিযোগ জানিয়েছি। পুলিশের তরফে তদন্ত করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।" অন্যদিকে, এনিয়ে বারবার প্রশ্ন করলেও কোনও উচ্চবাচ্য করেননি ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (নর্থ) গনেশ বিশ্বাস। বিষয়টি একপ্রকার এড়িয়ে যান তিনি।