সন্দেশখালি, 26 ফেব্রুয়ারি: সন্দেশখালি কাণ্ডে নয়া মোড়! 'ফেরার' তৃণমূল নেতা শাহজাহানের ভাই শেখ সিরাজউদ্দিনের বিরুদ্ধে এবার এফআইআর রুজু করল পুলিশ। সূত্রের খবর, তাঁর বিরুদ্ধে জমি সংক্রান্ত 100টিরও বেশি অভিযোগ জমা পড়েছিল পুলিশের সহায়তা কেন্দ্রে। প্রাথমিক পর্যায়ে অভিযোগের সত্যতা মেলায় অবশেষে শাসকনেতা শেখ সিরাজউদ্দিনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয় সন্দেশখালি থানায়। তবে, তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর রুজু হলেও পুলিশ এখনও পর্যন্ত শাহজাহানের ভাইকে খুঁজে পায়নি। এর কারণ জনরোষের জেরে এলাকা ছেড়ে আপাতত সিরাজ গা-ঢাকা দিয়েছেন অন্যত্র ! ফলে, তাঁর কোনও হদিশ মিলেনি।
'দাদা' শাহজাহানের মতো 'ভাই' সিরাজউদ্দিনের বিরুদ্ধেও উঠেছে ভুরিভুরি অভিযোগ। জমি জবরদখল, লুট, কৃষি জমি কব্জা করে ইচ্ছে মতো ভেড়ি বানানো, আবাস যোজনা ও জব কার্ডের টাকা হাতিয়ে নেওয়া। সবেতেই 'বাদশা' দাদার পথ অনুসরণ করেছিলেন 'ভাই' সিরাজও। অল্পদিনেই তিনি বেড়মজুর অঞ্চলের 'ত্রাস' হয়ে ওঠেন ৷ তাঁর বেপরোয়া দৌরাত্ম্য এবং জুলুমবাজিতে একপ্রকার সন্ত্রস্ত হয়ে থাকত গোটা অঞ্চল। এলাকায় সিরাজ 'ভাই'-এর দাপট এতটাই ছিল যে প্রতিবাদ করা তো দূরের কথা, ভয়ে সিঁটিয়ে থাকতেন গ্রামবাসীরা, এমনটাই অভিযোগ উঠেছে ৷
বুকে একরাশ আতঙ্ক নিয়েই সবসময় দুর্বিষহ জীবন কাটাতে হয় গ্রামবাসীদের। সূত্রের খবর, বেড়মজুর অঞ্চলে কমপক্ষে 250 বিঘা জমি লুট করার অভিযোগ রয়েছে এলাকার 'মাফিয়া' শেখ সিরাজউদ্দিনের বিরুদ্ধে। সবটাই করা হয়েছে গ্রামবাসীদের হুমকি এবং মারধর দিয়ে। এমনটাই অভিযোগ অধিকাংশ গ্রামবাসীরই। সেই জবরদখল করা জমি ফেরতের দাবিতেই গত তিনদিন ধরে জ্বলছে সন্দেশখালির বেড়মজুর অঞ্চল। ঝাঁটা, লাঠি হাতে নিয়ে পথে নেমে প্রতিবাদ ও ক্ষোভ-বিক্ষোভ। তার জেরে ভেড়ির আলাঘরে অগ্নিসংযোগ! কিছুই বাদ যায়নি শাহজাহানের ভাই সিরাজউদ্দিনের গ্রেফতারের দাবি ঘিরে।
তাঁর গ্রেফতারি চেয়ে যখন ক্ষোভে ফুঁসছেন বেড়মজুরের মানুষজন, ঠিক তখন ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে উদ্যোগী হয় পুলিশ। বেড়মজুর বাজারের কাছে খোলা হয় সহায়তা কেন্দ্র। যেখানে গত দু'দিন ধরে একের পর এক অভিযোগপত্র জমা দেন গ্রামবাসীরা। যার মধ্যে অধিকাংশই ছিল জমি সংক্রান্ত। এদিকে, অগ্নিগর্ভ বেড়মজুরে সাতদিন আগে এলাকার 'মস্তান' সিরাজকে শেষবার দেখা গিয়েছিল। তারপর থেকেই কর্পূরের মতো 'ভ্যানিশ' হয়ে গিয়েছেন তিনি। গ্রামবাসীদের অবশ্য দাবি, সিরাজ এলাকাতেই গোপন আস্তানায় রয়েছেন। সেখান থেকেই তিনি তাঁর দলবলকে পরিচালনা করছেন। নির্দেশ দিচ্ছেন অনৈতিক কাজকর্ম করার।
আরও পড়ুন: