ETV Bharat / state

ঝিরিঝিরি বৃষ্টিকে সঙ্গী পেতে চান ? আপনার অপেক্ষায় চিলাপাতা - Chilapata Forest

Destination Chilapata Forest: জঙ্গল ভালবাসেন ? পেতে চান বন্য পশুপাখির দেখা ? তবে ঝিরিঝিরি বৃষ্টিকে সঙ্গী করে ঘুরে আসুন উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্সের চিলাপাতা-মেন্দাবাড়ি। প্রকৃতি এখানে রূপের পসরা সাজিয়ে বসেছে ।

Chilapata Forest
ঘুরে আসুন চিলাপাতা (নিজস্ব ছবি)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : May 15, 2024, 10:58 PM IST

Updated : May 17, 2024, 9:43 AM IST

ঘুরে আসুন চিলাপাতা থেকে (ইটিভি ভারত)

আলিপুরদুয়ার, 15 মে: পাহাড় ও সবুজের সমারোহ বললেই সবার প্রথম মাথায় আসে উত্তরবঙ্গের কথা ৷ ভ্রমণপিপাসুদের কাছে সবুজে ঘেরা উত্তরবঙ্গের নৈসর্গিক শোভার হাতছানি উপেক্ষা করা বড়ই কঠিন ৷ যেমন উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ারের গভীর অরণ্য চিলাপাতা। এই এলাকাতেই আছে বহুল পরিচিত নল রাজার গড় । যা পর্যটনপ্রিয় বাঙালির কাছে ভ্রমণের জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয় ৷ শহরের কলকারখানার ধোঁয়া থেকে দূরে, প্রকৃতির কোলে কিছু দিনের জন্য হারিয়ে যেতে চাইলে অনায়াসেই ঘুরে আসা যেতে পারে উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্সের চিলাপাতায় ৷

কীভাবে যাবেন চিলাপাতা:

শিয়ালদা বা হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে সোজা আলিপুরদুয়ার জংশন বা হাসিমারা স্টেশন। সেখান থেকে মাত্র 20 কিলোমিটার দূরত্ব ডুয়ার্সের এই ভার্জিন ফরেস্টের । ঘন গাছ-পালা থাকায় এটিকে ভার্জিন ফরেস্ট বলা হয় ৷

চিলাপাতার ইতিহাস:

কোচ রাজবংশের আদিপুরুষ বিশ্ব সিংহের তৃতীয় পুত্রের নাম ছিল চিলা রায় । ডুয়ার্সের সীমানায় আলিপুরদুয়ারের কাছে গভীর অরণ্যে চিলারায় এক দুর্গ নির্মাণ করেন । সেই দুর্গ রাজা নরনারায়ণের নামে পরবর্তীকালে নল রাজার গড় হিসেবে পরিচিত হয় । আর যে অরণ্যে এই দুর্গ নির্মিত হয়েছিল সেটি আজ চিলাপাতা অরণ্য নামে খ্যাত । কোচবিহারের রাজা জঙ্গলে এসে গন্ডার শিকার করতেন । জঙ্গলের ভিতরে ধ্বংসস্তূপ বুকে নিয়ে এখনও দাঁড়িয়ে রয়েছে গুপ্তযুগের নল রাজার গড় ।

চিলাপাতার ভ্রমণকাহিনী:

নিস্তব্ধতার বুক চিরে ঘন সবুজ জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে গিয়েছে আঁকাবাঁকা আলপথ ৷ সেই পথ দিয়ে গেলে শোনা যাবে নাম না-জানা অজস্র পাখির কুহুতান ৷ আলিপুরদুয়ার থেকে চিলাপাতার দূরত্ব প্রায় 20 কিলোমিটার । জঙ্গলপ্রেমী ও অ্যাডভেঞ্চার প্রিয়দের কাছে চিলাপাতা অত্যন্ত আকর্ষণীয় ৷ অরণ্যে একাকী রাত্রিযাপনের ইচ্ছা থাকেল সেরা ঠিকানা হতে পারে ডুয়ার্সের এই চিলাপাতা ফরেস্ট । আর ফটোগ্রাফার হলে তো কথাই নেই, জঙ্গলে কাটানোর প্রত্যেক মুহূর্ত আপনার ক্যামেরার লেন্সে নতুন কিছু দেবে ।

জঙ্গল সাফারি:

জঙ্গলে ঘুরতে গিয়ে সাফারি না করলে ঘোরাটাই অপূর্ণ থেকে যায় ৷ সেই সুযোগ আছে চিলাপাতা ফরেস্টেও ৷ ভাগ্য ভালো থাকলে দেখা পাওয়া যেতে পারে বন্য হাতি, বাইসন, গন্ডারেরও । এক সময় এই জঙ্গলে প্রচুর গন্ডার ছিল । এখন অবশ্য গন্ডারের সংখ্যা খুব কমে গিয়েছে । তবে প্রচুর লেপার্ড আছে ভার্জিন ফরেস্ট চিলাপাতায় । চিলাপাতা অরণ্য জলদাপাড়া এবং বক্সা টাইগার রিজার্ভের মধ্যবর্তী হাতি চলাচলের পথ । নদীর চরে ঘাস খেতে আসে হরিণের দল । সব মিলিয়ে অরণ্যের পরিবেশ অসাধারণ, একেবারে নিবিড় অরণ্য । সে জন্যই পর্যটকরা ভিড় করেন এখানে ।

দূরবীনে চোখ রাখতেই হবে:

জঙ্গল সাফারিতে গেলে শুধুই কি লেন্সে চোখ ? সাফারির কোনও মুহূর্ত যাতে হাতছাড়া না হয়, অনেকেই সাফারিতে গিয়ে দূরবীনে চোখ রাখেন ৷ জঙ্গলের গভীরে হারিয়ে যেতে দূরবীনে চোখ রাখতেই হবে ৷ দূরবীন হাতে সাফারি যে শুধু বন্যপ্রাণী নয় বেশ ফ্যাশনেবলও ৷

কোথায় থাকবেন :

চিলাপাতায় রয়েছে বেশ কিছু হোম স্টে । স্বল্প খরচের মধ্যেই আপনি থাকা ও খাওয়ার সুবিধা পাবেন । জনপ্রতি মাত্র 1100 টাকা থেকে 1500 টাকা খরচ করলেই থাকা এবং খাওয়ার ব্যবস্থা হয়ে যাবে ৷

তবে আর কী ভাবছেন ৷ সুবিধা মতো দিন দেখে বেরিয়ে পডুন জঙ্গল সাফারিতে ৷ ঘুরতে গেলে বেশি জামা-কাপড় না নেওয়াও ভালো ৷ তবে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রে সঙ্গে রাখা দরকার ৷ প্রয়োজনীয় ফোন নম্বরগুলি রেখে দিতে পরেন ৷ জঙ্গল সাফারি জন্য কিছু শুকনো খাবার ও ড্রাই ফ্রুটসও রাখতে পারেন ৷

আরও পড়ুন:

  1. গরম থেকে রেহাই পেতে, ঘুরে আসুন চারখোলে
  2. পাহাড়ে হোক ছোট্ট একখান আস্তানা, এমন ভাবনায় ঢুঁ মারুন অচেনা এই গ্রামে
  3. উটিতে হুটোপুটি! গরম থেকে ছুটি নিয়ে হারিয়ে যান দক্ষিণ ভারতের ‘পাহাড়ের রানি’র কোলে

ঘুরে আসুন চিলাপাতা থেকে (ইটিভি ভারত)

আলিপুরদুয়ার, 15 মে: পাহাড় ও সবুজের সমারোহ বললেই সবার প্রথম মাথায় আসে উত্তরবঙ্গের কথা ৷ ভ্রমণপিপাসুদের কাছে সবুজে ঘেরা উত্তরবঙ্গের নৈসর্গিক শোভার হাতছানি উপেক্ষা করা বড়ই কঠিন ৷ যেমন উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ারের গভীর অরণ্য চিলাপাতা। এই এলাকাতেই আছে বহুল পরিচিত নল রাজার গড় । যা পর্যটনপ্রিয় বাঙালির কাছে ভ্রমণের জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয় ৷ শহরের কলকারখানার ধোঁয়া থেকে দূরে, প্রকৃতির কোলে কিছু দিনের জন্য হারিয়ে যেতে চাইলে অনায়াসেই ঘুরে আসা যেতে পারে উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্সের চিলাপাতায় ৷

কীভাবে যাবেন চিলাপাতা:

শিয়ালদা বা হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে সোজা আলিপুরদুয়ার জংশন বা হাসিমারা স্টেশন। সেখান থেকে মাত্র 20 কিলোমিটার দূরত্ব ডুয়ার্সের এই ভার্জিন ফরেস্টের । ঘন গাছ-পালা থাকায় এটিকে ভার্জিন ফরেস্ট বলা হয় ৷

চিলাপাতার ইতিহাস:

কোচ রাজবংশের আদিপুরুষ বিশ্ব সিংহের তৃতীয় পুত্রের নাম ছিল চিলা রায় । ডুয়ার্সের সীমানায় আলিপুরদুয়ারের কাছে গভীর অরণ্যে চিলারায় এক দুর্গ নির্মাণ করেন । সেই দুর্গ রাজা নরনারায়ণের নামে পরবর্তীকালে নল রাজার গড় হিসেবে পরিচিত হয় । আর যে অরণ্যে এই দুর্গ নির্মিত হয়েছিল সেটি আজ চিলাপাতা অরণ্য নামে খ্যাত । কোচবিহারের রাজা জঙ্গলে এসে গন্ডার শিকার করতেন । জঙ্গলের ভিতরে ধ্বংসস্তূপ বুকে নিয়ে এখনও দাঁড়িয়ে রয়েছে গুপ্তযুগের নল রাজার গড় ।

চিলাপাতার ভ্রমণকাহিনী:

নিস্তব্ধতার বুক চিরে ঘন সবুজ জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে গিয়েছে আঁকাবাঁকা আলপথ ৷ সেই পথ দিয়ে গেলে শোনা যাবে নাম না-জানা অজস্র পাখির কুহুতান ৷ আলিপুরদুয়ার থেকে চিলাপাতার দূরত্ব প্রায় 20 কিলোমিটার । জঙ্গলপ্রেমী ও অ্যাডভেঞ্চার প্রিয়দের কাছে চিলাপাতা অত্যন্ত আকর্ষণীয় ৷ অরণ্যে একাকী রাত্রিযাপনের ইচ্ছা থাকেল সেরা ঠিকানা হতে পারে ডুয়ার্সের এই চিলাপাতা ফরেস্ট । আর ফটোগ্রাফার হলে তো কথাই নেই, জঙ্গলে কাটানোর প্রত্যেক মুহূর্ত আপনার ক্যামেরার লেন্সে নতুন কিছু দেবে ।

জঙ্গল সাফারি:

জঙ্গলে ঘুরতে গিয়ে সাফারি না করলে ঘোরাটাই অপূর্ণ থেকে যায় ৷ সেই সুযোগ আছে চিলাপাতা ফরেস্টেও ৷ ভাগ্য ভালো থাকলে দেখা পাওয়া যেতে পারে বন্য হাতি, বাইসন, গন্ডারেরও । এক সময় এই জঙ্গলে প্রচুর গন্ডার ছিল । এখন অবশ্য গন্ডারের সংখ্যা খুব কমে গিয়েছে । তবে প্রচুর লেপার্ড আছে ভার্জিন ফরেস্ট চিলাপাতায় । চিলাপাতা অরণ্য জলদাপাড়া এবং বক্সা টাইগার রিজার্ভের মধ্যবর্তী হাতি চলাচলের পথ । নদীর চরে ঘাস খেতে আসে হরিণের দল । সব মিলিয়ে অরণ্যের পরিবেশ অসাধারণ, একেবারে নিবিড় অরণ্য । সে জন্যই পর্যটকরা ভিড় করেন এখানে ।

দূরবীনে চোখ রাখতেই হবে:

জঙ্গল সাফারিতে গেলে শুধুই কি লেন্সে চোখ ? সাফারির কোনও মুহূর্ত যাতে হাতছাড়া না হয়, অনেকেই সাফারিতে গিয়ে দূরবীনে চোখ রাখেন ৷ জঙ্গলের গভীরে হারিয়ে যেতে দূরবীনে চোখ রাখতেই হবে ৷ দূরবীন হাতে সাফারি যে শুধু বন্যপ্রাণী নয় বেশ ফ্যাশনেবলও ৷

কোথায় থাকবেন :

চিলাপাতায় রয়েছে বেশ কিছু হোম স্টে । স্বল্প খরচের মধ্যেই আপনি থাকা ও খাওয়ার সুবিধা পাবেন । জনপ্রতি মাত্র 1100 টাকা থেকে 1500 টাকা খরচ করলেই থাকা এবং খাওয়ার ব্যবস্থা হয়ে যাবে ৷

তবে আর কী ভাবছেন ৷ সুবিধা মতো দিন দেখে বেরিয়ে পডুন জঙ্গল সাফারিতে ৷ ঘুরতে গেলে বেশি জামা-কাপড় না নেওয়াও ভালো ৷ তবে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রে সঙ্গে রাখা দরকার ৷ প্রয়োজনীয় ফোন নম্বরগুলি রেখে দিতে পরেন ৷ জঙ্গল সাফারি জন্য কিছু শুকনো খাবার ও ড্রাই ফ্রুটসও রাখতে পারেন ৷

আরও পড়ুন:

  1. গরম থেকে রেহাই পেতে, ঘুরে আসুন চারখোলে
  2. পাহাড়ে হোক ছোট্ট একখান আস্তানা, এমন ভাবনায় ঢুঁ মারুন অচেনা এই গ্রামে
  3. উটিতে হুটোপুটি! গরম থেকে ছুটি নিয়ে হারিয়ে যান দক্ষিণ ভারতের ‘পাহাড়ের রানি’র কোলে
Last Updated : May 17, 2024, 9:43 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.