ETV Bharat / state

তৃণমূল বিধায়কের কলেজ হস্টেলে ফার্মাসি ছাত্র খুনের অভিযোগ - pharmacy student found dead

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Aug 17, 2024, 12:59 PM IST

Student Dead in pharmacy college: তৃণমূল বিধায়কের ফার্মাসি কলেজের হস্টেলে উদ্ধার ছাত্রের দেহ ৷ খুন বলে অভিযোগ পরিবারের ৷ অভিযোগ নিতে অস্বীকার পুলিশের ৷

student murder in pharmacy college
কলেজের হস্টেলে ছাত্র খুন (নিজস্ব চিত্র)

মুর্শিদাবাদ/মালদা, 17 অগস্ট: আরজি করে পড়ুয়া চিকিৎসকের মৃত্যুতে তোলপাড় রাজ্য ৷ জনবিক্ষোভের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে একাধিক দেশেও ৷ সেই আবহে এবার জঙ্গিপুরের তৃণমূল বিধায়কের ফার্মাসি কলেজের হস্টেলে প্রথম বর্ষের এক ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ৷ ওই ছাত্রের অভিভাবকের অভিযোগ, পরিকল্পনামাফিক তাঁর ছেলেকে খুন করা হয়েছে ৷ এ নিয়ে তাঁরা স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলেও পুলিশ তাঁদের অভিযোগ জমা নেয়নি বলেও অভিযোগ উঠেছে ৷ এই পরিস্থিতিতে পরিবার আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন ৷

তৃণমূল বিধায়কের কলেজ হস্টেলে ফার্মাসি ছাত্র খুনের অভিযোগ (ইটিভি ভারত)

জানা গিয়েছে, মৃত ছাত্রের নাম তহীদ করিম ৷ বাড়ি ইংরেজবাজার ব্লকের যদুপুর এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের কমলাবাড়ি গ্রামে ৷ মুর্শিদাবাদের মিয়াঁপুরে তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসেনের জাকির হোসেন ইন্সটিটিউট অফ ফার্মাসি কলেজ পড়াশোনা করতেন ৷ গত 13 অগস্ট এই কলেজেরই হস্টেল থেকে উদ্ধার হয় তহীদের দেহ ৷ খবর পেয়ে তহীদের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশ ৷ কিন্তু অদ্ভুত বিষয়, তহীদের মৃত্যুর দীর্ঘ সময় পরও অভিভাবকদের সেই খবর দেওয়া হয়নি ৷ এতেও প্রশ্ন তুলেছে পরিবারের লোকেরা ৷ যদিও জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার আনন্দ রায় বলেন,"আমার কাছে খবর আছে, মৃত ছাত্রের পরিবার আজ রঘুনাথগঞ্জ থানায় অভিযোগ করতে যাচ্ছেন ৷

তহীদের বাবা রেজাউল করিম পেশায় লরিচালক ৷ তাঁর বক্তব্য, "13 তারিখ রঘুনাথগঞ্জের দিকেই আমার লরি নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল ৷ স্ত্রী রাতে ছেলের সঙ্গে কথা বলে ৷ কিছু জিনিস ছেলে চেয়েছিল ৷ পরদিন সকালে স্ত্রী ছেলেকে ফোন করলেও ছেলে ফোন ধরেনি ৷ বিকেল নাগাদ স্ত্রী আমাকে ফোন করে জানায়, ছেলে তখনও ফোন করেনি ৷ রাত ন’টা নাগাদ আমি ছেলের কলেজে যাই ৷ তার আগেই হস্টেল সুপারের সঙ্গে কথা হয় আমার ৷" মৃতের বাবার দাবি, "কলেজে পা দিতেই স্ত্রী ফোন করে জানায়, ছেলে নাকি মারা গিয়েছে ৷ হস্টেলের তিনতলায় গিয়ে দেখি, ছেলের মৃতদেহ মেঝেতে শুইয়ে রাখা হয়েছে ৷ হস্টেল সুপার আমাকে ছেলের মৃত্যুর ব্যাপারে কিছু জানাননি ৷ ছেলের বাম চোখে রক্ত জমে ছিল ৷ শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল ৷ পরে পুলিশ ছেলের দেহ থানায় নিয়ে যায় ৷"

তাঁর অভিযোগ, এরপর থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে অভিযোগপত্র জমা নেয়নি পুলিশ ৷ মৃতের পরিবারের অভিযোগ, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর অভিযোগ জমা নেওয়া হবে বলে পুলিশ তাঁদের জানায় ৷ মৃতের বাবা বলেন, "ময়নাতদন্তের সময় আমাদের ডেকে নেওয়া হবে ৷ সেটাও করা হয়নি ৷ তিনি আমাকে এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা না-বলারও পরামর্শ দিয়েছিলেন ৷ আমি থানার এসআই শাজাহান শেখের কাছে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের বিষয়ে জানতে চাই ৷ কিন্তু তিনি আমাকে ফোনে হুমকি দিতে থাকেন ৷"

যদুপুর এলাকায় মেধাবী ছাত্র হিসাবেই পরিচিত ছিলেন ওই ছাত্র তহীদ ৷ তেমনটাই জানাচ্ছেন এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য সেনাউল ইসলাম ৷ তিনি বলেন, "আমাদের অঞ্চলে যে কয়েকটি ছেলে মেধাবী হিসাবে পরিচিত, তহীদ তাদের একজন ৷ খুব ভালো ছেলে ৷ ও আত্মহত্যা করতেই পারে না ৷ ওর বাবার সঙ্গে আমার নিয়মিত কথা হয় ৷ পরিকল্পনা করে ওকে হস্টেলেই খুন করা হয়েছে ৷ এখনও রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশ পরিবারের অভিযোগ জমা নেয়নি ৷ ওই কলেজটি জঙ্গিপুরের বিধায়ক জাকির হোসেনের ৷ তিনি নিজের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে পুলিশকে অভিযোগপত্র জমা নিতে দেননি ৷ এটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে ৷ সাধারণ আত্মহত্যা হলে পুলিশের কোনও সমস্যা থাকত না ৷ আমার মনে হয়, সেদিন বাবা না-গেলে হয়তো ছেলের দেহ উধাও করে দেওয়া হত ৷"

কমলাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রহিম বলছেন, "আরজি করের ঘটনায় সুবিচার পেতে গোটা দেশ রাস্তায় নেমেছে ৷ ঠিক সেভাবেই আমরা আমাদের গ্রামের ছেলে তহীদের খুনে অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবিতে রাস্তায় নেমেছি ৷ তহীদকে ফার্মাসি নিয়ে পড়াশোনার জন্য পাঠানো হয়েছিল ৷ আমরা দোষীদের ফাঁসি চাই ৷ ওকে নিশ্চিতভাবে খুন করা হয়েছে ৷ ওর মৃত্যুর কথা কলেজ কর্তৃপক্ষ কাউকে জানায়নি ৷ আমরা সেখানে গেলে আমাদের হুমকি দেওয়া হয়েছে ৷"

মুর্শিদাবাদ/মালদা, 17 অগস্ট: আরজি করে পড়ুয়া চিকিৎসকের মৃত্যুতে তোলপাড় রাজ্য ৷ জনবিক্ষোভের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে একাধিক দেশেও ৷ সেই আবহে এবার জঙ্গিপুরের তৃণমূল বিধায়কের ফার্মাসি কলেজের হস্টেলে প্রথম বর্ষের এক ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ৷ ওই ছাত্রের অভিভাবকের অভিযোগ, পরিকল্পনামাফিক তাঁর ছেলেকে খুন করা হয়েছে ৷ এ নিয়ে তাঁরা স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলেও পুলিশ তাঁদের অভিযোগ জমা নেয়নি বলেও অভিযোগ উঠেছে ৷ এই পরিস্থিতিতে পরিবার আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন ৷

তৃণমূল বিধায়কের কলেজ হস্টেলে ফার্মাসি ছাত্র খুনের অভিযোগ (ইটিভি ভারত)

জানা গিয়েছে, মৃত ছাত্রের নাম তহীদ করিম ৷ বাড়ি ইংরেজবাজার ব্লকের যদুপুর এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের কমলাবাড়ি গ্রামে ৷ মুর্শিদাবাদের মিয়াঁপুরে তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসেনের জাকির হোসেন ইন্সটিটিউট অফ ফার্মাসি কলেজ পড়াশোনা করতেন ৷ গত 13 অগস্ট এই কলেজেরই হস্টেল থেকে উদ্ধার হয় তহীদের দেহ ৷ খবর পেয়ে তহীদের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশ ৷ কিন্তু অদ্ভুত বিষয়, তহীদের মৃত্যুর দীর্ঘ সময় পরও অভিভাবকদের সেই খবর দেওয়া হয়নি ৷ এতেও প্রশ্ন তুলেছে পরিবারের লোকেরা ৷ যদিও জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার আনন্দ রায় বলেন,"আমার কাছে খবর আছে, মৃত ছাত্রের পরিবার আজ রঘুনাথগঞ্জ থানায় অভিযোগ করতে যাচ্ছেন ৷

তহীদের বাবা রেজাউল করিম পেশায় লরিচালক ৷ তাঁর বক্তব্য, "13 তারিখ রঘুনাথগঞ্জের দিকেই আমার লরি নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল ৷ স্ত্রী রাতে ছেলের সঙ্গে কথা বলে ৷ কিছু জিনিস ছেলে চেয়েছিল ৷ পরদিন সকালে স্ত্রী ছেলেকে ফোন করলেও ছেলে ফোন ধরেনি ৷ বিকেল নাগাদ স্ত্রী আমাকে ফোন করে জানায়, ছেলে তখনও ফোন করেনি ৷ রাত ন’টা নাগাদ আমি ছেলের কলেজে যাই ৷ তার আগেই হস্টেল সুপারের সঙ্গে কথা হয় আমার ৷" মৃতের বাবার দাবি, "কলেজে পা দিতেই স্ত্রী ফোন করে জানায়, ছেলে নাকি মারা গিয়েছে ৷ হস্টেলের তিনতলায় গিয়ে দেখি, ছেলের মৃতদেহ মেঝেতে শুইয়ে রাখা হয়েছে ৷ হস্টেল সুপার আমাকে ছেলের মৃত্যুর ব্যাপারে কিছু জানাননি ৷ ছেলের বাম চোখে রক্ত জমে ছিল ৷ শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল ৷ পরে পুলিশ ছেলের দেহ থানায় নিয়ে যায় ৷"

তাঁর অভিযোগ, এরপর থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে অভিযোগপত্র জমা নেয়নি পুলিশ ৷ মৃতের পরিবারের অভিযোগ, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর অভিযোগ জমা নেওয়া হবে বলে পুলিশ তাঁদের জানায় ৷ মৃতের বাবা বলেন, "ময়নাতদন্তের সময় আমাদের ডেকে নেওয়া হবে ৷ সেটাও করা হয়নি ৷ তিনি আমাকে এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা না-বলারও পরামর্শ দিয়েছিলেন ৷ আমি থানার এসআই শাজাহান শেখের কাছে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের বিষয়ে জানতে চাই ৷ কিন্তু তিনি আমাকে ফোনে হুমকি দিতে থাকেন ৷"

যদুপুর এলাকায় মেধাবী ছাত্র হিসাবেই পরিচিত ছিলেন ওই ছাত্র তহীদ ৷ তেমনটাই জানাচ্ছেন এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য সেনাউল ইসলাম ৷ তিনি বলেন, "আমাদের অঞ্চলে যে কয়েকটি ছেলে মেধাবী হিসাবে পরিচিত, তহীদ তাদের একজন ৷ খুব ভালো ছেলে ৷ ও আত্মহত্যা করতেই পারে না ৷ ওর বাবার সঙ্গে আমার নিয়মিত কথা হয় ৷ পরিকল্পনা করে ওকে হস্টেলেই খুন করা হয়েছে ৷ এখনও রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশ পরিবারের অভিযোগ জমা নেয়নি ৷ ওই কলেজটি জঙ্গিপুরের বিধায়ক জাকির হোসেনের ৷ তিনি নিজের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে পুলিশকে অভিযোগপত্র জমা নিতে দেননি ৷ এটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে ৷ সাধারণ আত্মহত্যা হলে পুলিশের কোনও সমস্যা থাকত না ৷ আমার মনে হয়, সেদিন বাবা না-গেলে হয়তো ছেলের দেহ উধাও করে দেওয়া হত ৷"

কমলাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রহিম বলছেন, "আরজি করের ঘটনায় সুবিচার পেতে গোটা দেশ রাস্তায় নেমেছে ৷ ঠিক সেভাবেই আমরা আমাদের গ্রামের ছেলে তহীদের খুনে অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবিতে রাস্তায় নেমেছি ৷ তহীদকে ফার্মাসি নিয়ে পড়াশোনার জন্য পাঠানো হয়েছিল ৷ আমরা দোষীদের ফাঁসি চাই ৷ ওকে নিশ্চিতভাবে খুন করা হয়েছে ৷ ওর মৃত্যুর কথা কলেজ কর্তৃপক্ষ কাউকে জানায়নি ৷ আমরা সেখানে গেলে আমাদের হুমকি দেওয়া হয়েছে ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.