কলকাতা, 10 ডিসেম্বর: প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ শিক্ষা দফতরের পাঁচ আধিকারিকরা প্রভাবশালী । রাজ্যের সঙ্গে তাঁদের যোগসাজশ রয়েছে বলে বারবার দাবি করছে সিবিআই । কিন্তু তার সপক্ষে প্রমাণ কি আছে সিবিআইয়ের হাতে ? মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে সেই প্রশ্ন তুললেন আইনজীবীরা ৷
এদিন এই অভিযুক্তদের জামিন সংক্রান্ত মামলার শুনানি হয় হাইকোর্টের বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তীর এজলাসে ৷ সেখানে এই প্রশ্ন তোলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুবীরেশ ভট্টাচার্যদের আইনজীবীরা ৷ তাঁদের আরও দাবি, ‘‘(প্রমাণ) কিছুই নেই । এতদিনে সিবিআই সেটা প্রমাণ করতে পারেনি । তাহলে কিসের ভিত্তিতে এদের আটকে রাখা হয়েছে ?’’
এদিন আদালতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায় ৷ তিনি বলেন, ‘‘পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে চার্জ ফ্রেম করার অনুমতি দিয়েছিলেন রাজ্যপাল । তারপরও তাঁর বিরুদ্ধে কী তদন্ত করেছে সিবিআই ? তাঁকে ফের অন্য মামলায় শোন অ্যারেস্ট করেছে সিবিআই । পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দফতর যদি দুর্নীতি করে, তাহলে তার দায় কি পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিতে হবে ? তাঁকে আড়াই বছর ধরে জেলে রাখা হয়েছে প্রভাবশালী তত্ত্বের কথা বলে ।’’
সুবীরেশ ভট্টাচার্য সহ অন্যান্য আধিকারিকদের হয়ে এদিন আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী সন্দীপন গঙ্গোপাধ্যায় ৷ তিনি বলেন, ‘‘বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায় নির্দেশের পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেছিলেন রাজ্য সরকার চার্জ ফ্রেম করার অনুমতি দিচ্ছে না মানে রাজ্যের সঙ্গে এদের অবৈধ যোগ রয়েছে । এরা প্রভাবশালী । এদের জামিন দিলে তথ্য-প্রমাণ নষ্ট করতে পারে । কিন্তু তার সপক্ষে প্রমাণ কই ?’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট প্রসন্নকুমার রায়ের জামিন মঞ্জুর করেছিল কারণ । তাঁর সত্তর বছরের বেশি বয়স । কবে বিচারপর্ব শুরু হবে, তা সুনির্দিষ্ট নয় । সেই জন্যই জামিন পান তিনি । প্রত্যেকটা মামলায় প্রায় 130 থেকে 140 জন করে সাক্ষী রয়েছেন ।’’
আইনজীবী সন্দীপন গঙ্গোপাধ্যায় আরও বলেন, ‘‘সিবিআই গত দু’বছর ধরে এদের বিরুদ্ধে চার্জ ফ্রেম করার অনুমতি পাচ্ছে না বলেই তারা এই তত্ত্ব খাড়া করেছে যে এর মানে রাজ্যের সঙ্গে এদের একটা যোগসাজস রয়েছে । এভাবে বছরের পর বছর আটকে রাখা যায় না ।’’
এদিন সিবিআইয়ের তরফে আইনজীবী তাঁর বক্তব্য জানাতে সময় চান ৷ এই নিয়ে বিরক্ত বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী ৷ বিচারপতি চক্রবর্তী যত দ্রুত সম্ভব এই মামলার শুনানি শেষ করতে চান । আগামী 17 ডিসেম্বর ফের শুনানি এই মামলার ।