চুঁচুড়া, 11 জুন: শস্য শ্যামলার দেশে বৃষ্টির আহ্বানে পান্তা উৎসবের আয়োজন । তীব্র দাবদাহে গরমের হাত থেকে বাঁচতে খাওয়া-দাওয়ার বৈচিত্র্য দেখা যায় বাঙালির মধ্যে । অতীত কাল থেকেই মা ঠাকুমারা গরমের হাত থেকে বাঁচতে পান্তা ভাত খাওয়ার কথা বলতেন । এখনও অনেকেই তীব্র গরমে পান্তা খেয়ে থাকেন ৷ বড় বড় রেস্তোরাঁগুলোও এখন মেনুতে পান্তা ভাত রাখে ৷
চিকিৎসদের মতে, পান্তা ভাত শরীরের পক্ষেও উপযোগী । সেই কারণেই দীর্ঘ 13 বছর ধরে পান্তা উৎসবের আয়োজন করে আসছে চুঁচুড়ার এক সংস্থা । পান্তার সঙ্গে বিভিন্ন পদ পরিবেশন করা হয় এখানে । আর এর টানে হুগলি ছাড়াও দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষ ছুটে আসেন এই পান্তা উৎসবে । এই উৎসবে পান্তা উপভোগ করার সঙ্গে সঙ্গে সকলে মিলে বর্ষাকে আহ্বান জানান ৷
এবারের এই উৎসবের মেনুতে ছিল 16 রকমের পদ ৷ সেগুলি হল- পান্তা ভাত, গন্ধরাজ লেবু, আলু ভাতে, কাঁচা লঙ্কা, ভাজা শুকনো লঙ্কা, কাঁচা পিঁয়াজ, ডাল বড়া, পিঁয়াজি, ছের ডিমের বড়া, পাবদার ঝাল, মৌরলা মাছের চচ্চড়ি, মাছের মাথা দিয়ে ছ্যাঁচড়া, কাতলা কালিয়া, চাটনি, পাঁপড়, হিমসাগর আম ও কাঁঠাল । চুঁচুড়ার এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে পালিত হল এই পান্তা উৎসব ।
এই বিষয়ে আয়োজনকারী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য ইন্দ্রজিৎ দত্ত বলেন, "এই তাপপ্রবাহ থেকে মুক্তি পেতে একটু বৃষ্টি আসুক । মানুষ ন'টার পর রাস্তায় বেরোতে পারছে না । বর্ষার আহ্বানে আমরা এই পান্তা উৎসব করে আসছি দীর্ঘ 13 বছর ধরে । কয়েক বছর ধরে আমরা লক্ষ্য করছি শুধু এই জেলা নয় অন্যান্য জেলা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এই পান্তা উৎসবে যোগ দিচ্ছেন । পান্তা খেলে শরীর ঠান্ডা হয় । সেই কারণেই এই চিন্তা ভাবনা আমাদের । এখানে আম পোড়ার শরবত থেকে বিভিন্ন ধরনের মাছের ঝোল, ঝাল, অম্বল সবকিছুরই আয়োজন করা হয় ।"
নদিয়ার কৃষ্ণনগর থেকে এই পান্তা উৎসবে যোগ দিতে আসেন মধুমিতা বিশ্বাস ৷ তাঁর কথায়,"প্রতিবছর লোক মুখে শুনি এই উৎসেবর কথা । কিন্তু আসা হয় না আর । এ বছর পান্তা উৎসবে আসতে পেরে খুব ভালো লাগছে । গরমে সেভাবে বাড়িতে পান্তা ভাত খাওয়া হয় না । পান্তার এই রকম আয়োজন হতে পারে ভাবতেই পারিনি । আমাদের জেলায় এভাবে এরকম উৎসব হয় না । এখানে কোনও পদ বাদ নেই । লেবু লঙ্কা থেকে বিভিন্ন ধরনের মাছ, চাটনি, আম, কাঁঠাল থেকে পাঁপড় সবেরই ব্যবস্থা রয়েছে । এই পান্তা উৎসবে প্রতিবছর বাড়ির সকলকে নিয়ে আসার চেষ্টা করব ।"