কলকাতা, 12 অগস্ট: রাজ্যের যিনি মুখ্যমন্ত্রী তিনিই পুলিশমন্ত্রী। পুলিশমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত। উনি আদতে নাটক করছেন। আরজি কর-কাণ্ডে হত্যার কিনারা করার জন্য পুলিশকে সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার প্রেক্ষিতে সোমবার এভাবেই মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করল বিরোধীরা।
একদিকে যখন রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে চলছে জুনিয়ার এবং সিনিয়র চিকিৎসক, ইন্টার্নদের কর্মবিরতি তখনই ঝাড়গ্রাম থেকে ফিরে এদিন মৃতার বাড়িতে যান মুখ্যমন্ত্রী। পরিবারের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, আগামী রবিবারের মধ্যে পুলিশ হত্যার কিনারা করতে না পারলে সিবিআইয়ের হাতে বিষয়টি হস্তান্তর করা হবে। যদিও তিনি তারপরেই সিবিআই-এর হাতে থাকা আগের বেশ কয়েকটি ঘটনার কিনারা হয়নি বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন। এই ঘটনার পরই বিজেপি থেকে শুরু করে বাকি বিরোধীরা এই তদন্ত রাজ্যে পুলিশের হাত থেকে নিয়ে সিবিআইকে হস্তান্তরের দাবি তুলেছেন।
এদিন বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, "এত বড় জঘন্য ঘটনা ঘটল ৷ এরপরে সরকারের পড়ে যাওয়া উচিত। এর থেকেই বোঝা যায় তৃণমূল সরকারের সময় ঘনিয়ে আসছে । একজন মহিলা চিকিৎসকের উপরে অত্যাচার হয়েছে ৷ তাঁকে খুন করা হয়েছে তাই একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ করা উচিত। কামদুনির ঘটনাতেও কেউ সাজা পায়নি। কারণ সবাই ওঁর দলের লোক ৷ সবাইকে উনি সুরক্ষা দিয়েছেন ৷ সব দোষীকে উনি ছেড়ে দিয়েছেন।"
তিনি আরও বলেন, "আসলে মুখ্যমন্ত্রী এটা ধরেই নিয়েছেন যে উনি এই ঘটনার কুলকিনারা করতে পারবেন না। উনি দোষীকে সাজা দিতে পারবেন না। এরা সবাই দলের লোক। তাই তিনি সিবিআইয়ের কথা বলছেন। আসলে উনি হাত তুলে নিয়েছেন।" অন্যদিকে, বিজেপির নেতা সজল ঘোষ প্রশ্ন তোলেন, "মুখ্যমন্ত্রী এই বিষয়ে এত সক্রিয় কেন ? কেন কামদুনি ঘটনার পরে ওঁর মনে হল না যে এই ঘটনাতেও সিবিআই দরকার ? এই সমস্তটাই ওঁর নাটক। উনি বাংলাদেশ দেখে ভয় পেয়েছেন। আর তা না হলে এমন কোনও ঘটনা ভিতরে আছে সেটাকে ধামাচাপা দিতেই তিনি সিবিআই তদন্তের কথা বলছেন। এখান থেকেই তো সন্দেহ জাগছে যে মুখ্যমন্ত্রী হঠাৎ এতটা পালটে গেলেন কেন ?"
কংগ্রেস নেতা আশুতোষ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলছেন ৷ সিভিক নামক যন্ত্রণাটা পুলিশের মধ্যে প্রবেশ করানো হয়েছে ৷ সেই যন্ত্রণা থেকে পুলিশ ফোর্সকে মুক্তি দিন। এরা দলের প্রতিনিধি হিসেবে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। কংগ্রেস মনে করে এর বিচারবিভাগীয় তদন্ত হওয়া উচিত। এটা সিবিআইকে দিয়ে হবে না ৷ সিবিআই বাংলায় চোর ধরতে পারেনি। সিবিআই যে কিছু করতে পারছেন না সেই কথা মুখ্যমন্ত্রী কিন্তু নিজেই বলেছেন। তাই কংগ্রেসের মনে হয় পুলিশের উপরেই ওঁর ভরসা রাখা উচিত। পুলিশকে রাজনীতির মধ্যে না ঢুকিয়ে তাদের নিজেদের কাজ করতে দেওয়া উচিত।"