সুন্দরবন, 12 ফেব্রুয়ারি: মাছ ধরতে গিয়ে সুন্দরবনে আবারও বাঘের হানায় প্রাণ গেল এক মৎস্যজীবীর । মৃত মৎস্যজীবীর নাম শ্রীধাম হালদার (46) । সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে এই ঘটনা ঘটেছে । অন্যান্য মৎস্যজীবীদের সঙ্গেই মাছ ধরতে গিয়েছিলেন শ্রীধাম । সেই সময় তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঘ । এরপরে বাঘ তাঁকে টেনে গভীর জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে । তবে বাঘের মুখ থেকে রক্ষা করা গেলেও তাঁকে প্রাণে বাঁচানো সম্ভব হয়নি ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বুধবার গোপালগঞ্জের গায়েন চকের বাসিন্দা শ্রীধাম হালদার চারজন মৎস্যজীবীদের নিয়ে সুন্দরবনের জঙ্গলে নদীতে মাছ ধরার জন্য রওনা দিয়েছিলেন । এরপর সোমবার কাকভোরে গ্রামে খবর আসে শ্রীধামকে বাঘে নিয়ে গিয়েছে । এরপর গ্রাম থেকে বেশ কিছু নৌকা নিয়ে মৎস্যজীবীরা শ্রীধামের দেহ উদ্ধার করার জন্য জঙ্গলের রওনা দেন । এরপর জঙ্গল থেকে শ্রীধামের দেহ উদ্ধার করেন শ্রীধামের সঙ্গীরা ।
শ্রীধামের এক সঙ্গী বলেন, ‘‘রবিবার সারারাত ধরে জঙ্গলে মাছ ধরা হয়েছিল । সোমবার ভোরে শ্রীধাম নৌকায় জাল থেকে মাছ ছাড়ানোর কাজ করছিল । সেই সময় জঙ্গল থেকে একটি বাঘ অতর্কিতভাবে শ্রীধামের উপর হামলা করে । এরপর শ্রীধামকে টানতে টানতে জঙ্গলে নিয়ে যায় ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা অনেক চিৎকার করি এবং লাঠি ছুঁড়ে বাঘের মুখ থেকে শ্রীধামকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করি । কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারিনি আমরা । দিনের আলো ফোটার জন্য আমরা অপেক্ষা করি ৷ দিনের আলো ঘুরতেই আমরা শ্রীধামের উদ্ধারের জন্য জঙ্গলে যাই । এরপর শ্রীধামের নিথর দেহ উদ্ধার করে আমরা উদ্ধার করে গ্রামে নিয়ে আসি ।’’
পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য ছিলেন শ্রীধাম ৷ বাড়িতে তাঁর চার ছেলেমেয়ে রয়েছে । পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারীকে হারিয়ে দিশাহারা হালদার পরিবার । কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মৃতের স্ত্রী ভগবতী হালদার-সহ পরিবারের সকল সদস্যরা ।
প্রসঙ্গত, সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে মাছ, কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের হানায় মৎস্যজীবীদের মৃত্যুর ঘটনা প্রায়ই ঘটে । এই নিয়ে প্রশাসনের তরফে সতর্কতামূলক প্রচার চালানো হয় । বিশেষ করে মৎস্যজীবীরা যাতে জঙ্গলের গভীরে প্রবেশ না করেন, তা নিয়ে প্রশাসনের তরফে প্রচার করা হয়ে থাকে । তারপরেও অর্থ উপার্জনের আশায় প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে যেতে হয় মৎস্যজীবীদের ।
আরও পড়ুন: