বসিরহাট, 20 নভেম্বর: প্রৌঢ়ের মেয়েকে বিয়ে করবেন বলে প্রস্তাব দিয়েছিলেন প্রতিবেশী যুবক ৷ কিন্তু, সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেন প্রৌঢ় ৷ বদলে অন্য পাত্রের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দেন তিনি ৷ অভিযোগ, সেই আক্রোশে তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করেছেন যুবক ৷ মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর 24 পরগনার বসিরহাটের মাটিয়া এলাকায় ৷
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত প্রৌঢ়ের নাম জব্বার মোল্লা (55)। এই ঘটনায় পালটা স্থানীয়রা অভিযুক্ত যুবকের বাড়িতে ভাঙচুর করেন বলে অভিযোগ ৷ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জব্বার মোল্লা মাটিয়া থানার কোড়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ৷ পড়শি যুবক নাজিমুদ্দিন মোল্লা ওই প্রৌঢ়ের মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন ৷ কিন্তু, কোনও স্থায়ী উপার্জন ছিল না নাজিমুদ্দিনের ৷ তাই বেকার ছেলের হাতে মেয়েকে তুলে দিতে রাজি ছিলেন না জব্বার ৷
তিনি পড়শি যুবকের বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন ৷ অভিযোগ, তারপর থেকেই নাজিমুদ্দিন ও তাঁর দলবল বেশ কয়েকবার জব্বারের বাড়িতে হামলাও চালিয়েছেন ৷ এরই মধ্যে গত রবিবার জব্বার তাঁর মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন অন্য পাত্রের সঙ্গে ৷ তারপর থেকেই নাজিমুদ্দিনের দলবল তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকে ৷
মঙ্গলবার রাতে কলকাতা থেকে কাজ সেরে জব্বার মোল্লা মালতীপুর রেল স্টেশনে নেমেছিলেন ৷ রেললাইন ধরে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি ৷ অভিযোগ, পথে একদল দুষ্কৃতী তাঁর উপর হামলা চালায় ৷ ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে এলোপাথাড়ি কোপানো হয় ৷ রক্তাক্ত অবস্থায় রেললাইনের ধারে লুটিয়ে পড়েন তিনি ৷ চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে যান এবং গুরুতর জখম অবস্থায় জব্বারকে বসিরহাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করান ৷ সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ৷
জব্বার মোল্লাকে খুনের খবর গ্রামে পৌঁছতেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায় ৷ এরপরেই স্থানীয়রা নাজিমুদ্দিনের বাড়িতে চড়াও হয় ৷ প্রৌঢ়কে খুনের অভিযোগে নাজিমুদ্দিনের বাড়িতে ভাঙচুর চালান তাঁরা ৷ এই ঘটনায় নাজিমুদ্দিন ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা রাতেই গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন ৷ খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে ৷ জব্বারের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে ৷
এই বিষয়ে নিহত জব্বারের ভাই রব্বানি মোল্লা বলেন, "বিয়ে করবে বলে পাড়ার ছেলে নাজিমউদ্দিন বহুদিন ধরে আমার ভাইঝিকে উত্ত্যক্ত করছিল ৷ আমার ভাইঝি এমএ পাশ ৷ ওই ছেলেটি বিশেষ কোনও কাজ করে না ৷ রবিবার আমরা ভাইঝিকে অন্য পাত্রের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ সেই আক্রোশে নাজিমুদ্দিন ও তাঁর দলবল আমার দাদাকে কুপিয়ে খুন করেছে ৷ আমরা ওদের কঠোর শাস্তি চাই ৷"
নাজিমুদ্দিন-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর ৷ থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর থেকে অভিযুক্তরা সকলেই গা-ঢাকা দিয়েছেন ৷