সন্দেশখালি, 27 ফেব্রুয়ারি: সন্দেশখালিতে বেদখল হয়ে যাওয়া জমি পুনরুদ্ধার করে 130 জন গ্রামবাসীকে ফিরিয়ে দিল প্রশাসন । সরকারি ক্যাম্পে জমা পড়া অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রাথমিক পর্যায়ে সন্দেশখালির মাঝেরপাড়ায় 9 জনের পর মঙ্গলবার 130 জন গ্রামবাসীকে জমি ফিরিয়ে দিল জেলা প্রশাসন ৷
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার যাঁরা জমি ফেরত পেলেন তাঁরা দারির জঙ্গল, জেলিয়াখালি এবং বেড়মজুর পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা । এই সমস্ত মৌজাতেই কারওর চাষের জমি ছিল । আবার কারও ছিল নিজস্ব মাছের ভেড়ি । এখান থেকে আয়ের উপরই সংসার চলত গ্রামবাসীদের ৷ সেই সমস্ত জমিই একসময় শাহজাহান বাহিনীর দখলে চলে যায় বলে অভিযোগ । কার্যত বিঘার পর বিঘা জমি দখল করে ভেড়ি সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলন শেখ শাহজাহান ও তাঁর দুই শাগরেদ শিবু হাজরা উত্তম সর্দাররা । বাচ্চাদের খেলার মাঠও কেড়ে নিয়ে দখলদারির রাজনীতি কায়েম করেছিলেন শাহজাহান ও তাঁর দোসর'রা ৷
সন্দেশখালি অশান্ত হয়ে ওঠার পর, গ্রামবাসীদের ক্ষতে প্রলেপ দিতে গ্রামে সরকারি ক্যাম্প করেছিল প্রশাসন । সেই ক্যাম্পগুলিতেই জমি সংক্রান্ত ভূরিভূরি অভিযোগ জমা পড়েছিল । প্রশাসন সূত্রে খবর, বেশিরভাগ অভিযোগেরই সত্যতা মিলেছে । তাই অভিযোগ জমা নেওয়ার পাশাপাশি চলছে জমি ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়াও । জমি জবর দখলের অভিযোগে শেখ শাহজাহান বাহিনী একদিকে সেঞ্চুরি পার করে ফেলেছে । অন্যদিকে, নোনাজল ঢুকিয়ে চারশোরও বেশি জমি নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ । সেই সমস্ত জমিও ঠিক করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে প্রশাসন ।
এদিকে, সন্দেশখালিতে গণ-বিক্ষোভের জেরে তড়িঘড়ি শুরু হয়েছে বাঁশের অস্থায়ী সাঁকো তৈরির কাজ । স্থানীয়দের দাবি, 2009-এর আয়লায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় ঝুপখালির বটতলার কাঠের সেতুটি । 15 বছর ধরে প্রশাসনের কাছে দরবার করেও সুরাহা মেলেনি । বহুবার বলা হলেও কোনও কর্ণপাতও করেননি শেখ শাহজাহান, শেখ সিরাজউদ্দিন-সহ এলাকার দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতারা । যার ফলে বিপজ্জনক সেতু দিয়েই চলছিল গ্রামের লোকজনের পারাপার । গত শুক্রবার এই ভাঙা সেতু থেকে খালে পড়ে যান বিডিও অফিসের এক কর্মী । এরপরই পাকা সেতু তৈরির দাবিতে সোচ্চার হন আন্দোলনকারী গ্রামবাসীরা । আর তাতেই টনক নড়ল জেলা প্রশাসনের । আপাতত ভাঙা সেতুর বদলে বাঁশের অস্থায়ী সাঁকো তৈরি হলেও কয়েকমাসের মধ্যে সেখানে পাকা সেতু তৈরি হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন ।
আরও পড়ুন :