মেদিনীপুর, 13 জানুয়ারি: মৃত্যু হয়েছে মায়ের ৷ সন্তান প্রসবের পর তাকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ আগেই ছুটি দেয় ৷ কিন্তু রবিবার রাত থেকে স্যালাইন-কাণ্ডে মৃত প্রসূতি মামনি রুইদাসের পুত্রসন্তানের অবস্থার অবনতি হয় ৷ সোমবার সকালে তড়িঘড়ি ওই সদ্যোজাতকে ভর্তি করা হয় মেদিনীপুর হাসপাতালের মাতৃমা বিভাগে ৷
জানা গিয়েছে, পাঁচদিনের শিশু এখন ভর্তি এসএনসিইউতে। তার জ্বর, হলুদ প্রস্বাব ও আরও কিছু শারীরিক সমস্যা নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে তাকে ৷ সদ্যোজাতকে ভর্তি করতে নিয়ে আসা রুম্পা দাস (মৃত প্রসূতির ননদ) বলেন, "গত বুধবার মামনির বাচ্চা হয়েছে ৷ তারপর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ে সে ৷ পরবর্তীকালে গুরুতর অসুস্থ হলে আইসিই-তে নিয়ে যাওয়া হয়। কারণ ওর কিছুতেই প্রস্রাব হচ্ছিল না। এরপর ডায়ালিসিস হয় ৷ বৃহস্পতিবার মারা গেলেও শুক্রবার সকালে ঘোষণা করা হয় যে মামনি মৃত। বাচ্চাটা সদ্য 5 দিনের ৷ পুরো গা হলুদ, প্রস্বাব হলুদ হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত। আমরা প্রশাসন থেকে শুধু কিছু শুকনো খাবার পেয়েছি ।"
গত বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর মেডিক্যালে মোট 5 প্রসূতি অসুস্থ হয়ে পড়েন ৷ যাঁরা হলেন, মাম্পি সিং (23), নাসরিন খাতুন (19) ও মিনারা বিবি (31), মামনি রুইদাস (21) ও রেখা সাউ (23)। যার মধ্যে মামনি রুইদাসের মৃত্যু হয়। অভিযোগ ওঠে মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইনের জেরেই তাঁদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় ৷ রোগীর পরিবার অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেন চিকিৎসার অব্যবস্থা এবং এলআর (LR) স্যালাইনের জন্যই এই ঘটনা ঘটেছে। রবিবার ওই চার প্রসূতির মধ্যে 3 জনকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় গ্রিন করিডোর করে ৷
তবে রেখা সাউ ও তাঁর সন্তানের অবস্থা স্থিতিশীল হওয়ায় মেদিনীপুর মেডিক্যালেই তাঁদের চিকিৎসা চলছে ৷ যদিও সোমবার ওই প্রসূতিদের সিজারের দিন সিনিয়র ডাক্তারদের অ্যাটেনডেন্স নিয়ে মেডিক্যালের প্রিন্সিপালকে প্রশ্ন করা হলে তিনি সম্পূর্ণ বিষয়টি এড়িয়ে যান ৷
প্রিন্সিপাল মৌসুমী নন্দীর কাছে জিজ্ঞেস পুরো বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে, প্রথমে বাচ্চা সুস্থ ও স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান তিনি ৷ তবে হাসপাতালে সিনিয়র ডাক্তারদের অ্যাটেনডেন্স নিয়ে প্রশ্ন করলেই তিনি সেখান থেকে চলে যান। সেই সঙ্গে সাংবাদিকদের অন্য প্রশ্ন করা নিয়ে ধমক দেন। যদিও এর আগে প্রিন্সিপালের ব্যবহার নিয়েও একাধিক অভিযোগ রয়েছে ।