মালদা, 24 ফেব্রুয়ারি: একইদিনে জেলার দুই জায়গায় নাবালিকা ও যুবতীকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়াল বিজেপি ৷ রাজ্যে মহিলাদের সুরক্ষা না-থাকার অভিযোগ তুলে পুলিশমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্রুত পদত্যাগ দাবি করেছেন উত্তর মালদা লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ খগেন মুর্মু ৷ অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার না-করা হলে পুলিশের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের হুমকি দিয়েছেন পুরাতন মালদার বিধায়ক গোপালচন্দ্র সাহা ৷ যদিও পুলিশের দাবি, দুই ঘটনাতেই জড়িতদের খোঁজ পাওয়ার চেষ্টা চলছে ৷ তাদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে ৷
উল্লেখ্য, শুক্রবার সন্ধেয় পুরাতন মালদার একটি গ্রামে এক বন্ধ থাকা ইটভাটা থেকে 13 বছরের এক নাবালিকার মাথা থেঁতলানো দেহ উদ্ধার করে মালদা থানার পুলিশ ৷ ভাটার চুল্লির সামনে নাবালিকাকে অর্ধনগ্ন অবস্থায় পাওয়া যায় ৷ শরীরে বিভিন্ন চিহ্ন দেখে কিশোরীর বাবা-মা সহ গ্রামবাসীরাও দাবি করে, তাকে ধর্ষণ কিংবা গণধর্ষণের পর খুন করা হয়েছে ৷ প্রায় একই সময়ে কালিয়াচক 3 নম্বর ব্লকের এক গ্রামে একটি ভুট্টার জমি থেকে বছর তিরিশের এক বধূর গলাকাটা দেহ উদ্ধার করে বৈষ্ণবনগর থানার পুলিশ ৷ তাঁর পোশাক অবিন্যস্ত অবস্থায় ছিল ৷ তাঁকেও ধর্ষণের পর খুন করা হয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের ৷ দুই ঘটনার জেরে শুক্রবার রাত থেকে উৎকণ্ঠায় গোটা জেলা ৷
শনিবার পুরাতন মালদায় খুন হওয়া নাবালিকার বাড়িতে যান এলাকার সাংসদ খগেন মুর্মু ও বিধায়ক গোপালচন্দ্র সাহা ৷ সঙ্গে ছিলেন জেলা ও স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব ৷ নাবালিকার অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা ৷ সেখান থেকে বেরিয়ে যান বন্ধ থাকা ওই ইটভাটায় ৷ পরিদর্শনের পর বিধায়ক গোপালচন্দ্র সাহা বলেন, "সারা বাংলায় যা ঘটছে, তা ঘটেছে পুরাতন মালদাতেও ৷ গতকাল যখন ঘটনাটি শুনি, স্তম্ভিত হয়ে যাই ৷ আমি ভাবতেই পারছি না, এই এলাকায় এমন ঘটনা ঘটতে পারে ৷ 13 বছর বয়সি নবম শ্রেণির আদিবাসী ওই ছাত্রীকে যেভাবে তুলে নিয়ে এসে এই ভাটাতে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে, তা ভাবা যায় না ৷ আসলে সন্দেশখালিতে যে ঘটনা ঘটেছে, তাতে দুষ্কৃতীরা উৎসাহ পাচ্ছে ৷ পুলিশ দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় রাজ্যের এই হাল ৷ এই নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনে যারা অপরাধী, তাদের দ্রুত ধরতে না-পারলে আমরা পুলিশের বিরুদ্ধে লড়ব ৷ বিজেপি কিছুতেই ছাড়বে না ৷"
অন্যদিকে সাংসদ খগেনের বক্তব্য, "সেদিন ছিল বাঁধনা পরবের তৃতীয় দিন ৷ আদিবাসীরা একে খুণ্টাও বলে ৷ খুণ্টাওয়ের দিন প্রচুর নাচগান হয় ৷ মেয়েটি সেখানেই নাচতে গিয়েছিল ৷ সেখান থেকে ও কখন নিখোঁজ হয়ে যায় কেউ জানে না ৷ অর্থাৎ, দুষ্কৃতীরা নাচের আসর থেকে মেয়েটিকে এখানে এনে ধর্ষণ করে খুন করেছে ৷ এমন ঘটনা গোটা রাজ্যেই ঘটছে ৷ পশ্চিমবঙ্গে এখন ধর্ষকরাজ চলছে ৷ শেখ শাহজাহান আর তার সাঙ্গপাঙ্গরা সন্দেশখালিতে বাড়ির মেয়ে-বউদের রাতে তুলে নিয়ে যেত ৷ অথচ পুলিশ এদের ধরতে পারছে না ৷ এতে দুষ্কৃতীদের সাহস বেড়ে যাচ্ছে ৷ তারা জানে, রাজ্যে আইনের শাসন নেই ৷ গতকাল বৈষ্ণবনগরেও একই ঘটনা ঘটেছে ৷ মুখ্যমন্ত্রী একজন মহিলা হয়ে কী করছেন? তাঁকে অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত ৷"
আরও পড়ুন: