হাওড়া, 1 সেপ্টেম্বর: আরজি কর-কাণ্ডের পর ধর্ষণ বিরোধী কড়া আইন আনার তৎপরতা শুরু হলেও, এখনও যৌন নির্যাতনের ঘটনায় লাগাম টানা যাচ্ছে না ৷ ইলামবাজারে রোগীর হাতে শ্লীলতাহানির শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছিলেন নার্স ৷ আর এবার হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি নাবালিকা রোগীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল কর্মীর বিরুদ্ধে ৷ এই ঘটনায় হাসপাতালের সুপার চিকিৎসক নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়কে ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ দেখায় বাম ও বিজেপি ৷ তাদের দাবি, নাবালিকার শ্লীলতাহানির ঘটনায় সুপারকে অপসারণ করতে হবে ।
হাওড়া জেলা হাসপাতালে নাবালিকা রোগীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ সামনে আসার তার প্রতিবাদে রবিবার সকালে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেটের বাইরে বিক্ষোভ দেখান বাম যুব মহিলা সংগঠনের কর্মীরা । বাম নেতা তথা বিশিষ্ট আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় ও নেত্রী দীপ্সিতা ধর এদিন উপস্থিত ছিলেন বিক্ষোভ কর্মসূচিতে ।
তাঁদের অভিযোগ, হাওড়া জেলা হাসপাতালে 13 বছরের নাবালিকার যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে । চিকিৎসারত অবস্থায় সিটি স্ক্যান করার সময় তাকে যৌন হেনস্তা করা হয় ৷ অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে ৷ তবে আরজি কাণ্ডে যখন গোটা দেশ তোলপাড়, সেই সময় সরকারি হাসপাতালে রোগীকে নিগ্রহের আরও একটা ঘটনা ফের হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে । বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, হাসপাতালে যদি এই ভয়ের পরিবেশ থাকে, মহিলারা তাহলে কোথায় চিকিৎসা করাবেন । এই নিয়ে সুপারকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানো হয় ।
বিজেপির রাজ্য সম্পাদক উমেশ রাই অভিযোগ করে বলেন, "এই হাসপাতালের সুপার 10 বছর ধরে এখানে ঠুঁটো জগন্নাথের মতো বসে আছেন । হাসপাতালে কোনও সুরক্ষা ব্যবস্থা নেই । সিটি স্ক্যানের জায়গাতে কোনও মহিলাকর্মী নেই । সরকার একটি বেসরকারি সংস্থাকে এখানে দায়িত্ব দিয়েছে । সুপার হাসপাতালের প্রশাসনের কর্তা ৷ তিনি জানেন না এটা হতে পারে না । হাসপাতালের দুরবস্থা সব দেখেও কিছু করেননি । আমরা এই ঘটনায় সুপারের পদত্যাগ চাইছি । আমরা এফআইআর করছি আর তাতে সুপারকেও যুক্ত করব ।"
সূত্রের খবর, এই ঘটনায় যথেষ্টই ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে হাসপাতালে । এ বিষয়ে হাওড়া জেলা হাসপাতালের সুপার নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় এদিন বলেন, "সিটি স্ক্যান মেশিন খারাপ ছিল ৷ গত তিন-চার দিন ধরে হঠাৎই ঠিক হয়েছিল, সেটা কারওকে জানায়নি ৷ ওরা নিজেরাই ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে জানিয়ে রোগী নামিয়েছে ৷ আমরা যদি জানতাম নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নিতাম ৷ এই ঘটনার বিষয়ে পুলিশকে জানিয়েছি ৷ যা ব্যবস্থা নেওয়ার পুলিশ নেবে ৷ হাসপাতালের সুরক্ষা আরও বাড়ানোর চেষ্টা করছি ।" তিন-চার দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না-হলে তিনি নিজেই পদত্যাগ করবেন বলেও জানিয়েছেন ৷