বর্ধমান, 17 অগস্ট: লালবাজার ডাকলে অবশ্যই যাবেন তিনি ৷ কিন্তু আইনজীবীদের পরামর্শ নিয়ে তবেই যাবেন ৷ "আমরা চাই খুনি ধর্ষকেরা শাস্তি পাক", আরজি কর-কাণ্ডের পাশাপাশি বর্ধমানে দু'টি ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার বিকালে বর্ধমানের কার্জন গেটে বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিয়ে এই মন্তব্য করলেন বাম ছাত্র সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় ।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবিতে ফের সরব হতে দেখা গেল তাঁকে ৷ এদিন তিনি বলেন, "খুনি ও ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে আরজি করে দুর্নীতির আঁতুড়ঘর ভাঙতে যা তদন্ত হবে, সেই তদন্তে সাহায্য করার জন্য আমরা বসে আছি । যারা খুন ধর্ষণ করে আরজি করের ভিতরে জঙ্গলরাজ চালাল, তাদের শাস্তি দিতে হবে । নির্যাতিতার পরিবারকে বিচার পাইয়ে দিতে হবে ৷ সেই কারণে তো সারা রাজ্যের মা-বোনেরা সারারাত রাস্তায় ছিল । ডিওয়াইএফআই-এর সঙ্গে সারা রাজ্যের মানুষ তো চাইছে দোষীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাক ৷ এমন শাস্তি দেওয়া হোক, যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা আর না ঘটে ।"
লালবাজার ডেকে পাঠানো প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, "নিশ্চয়ই যাব লালবাজার ৷ কিন্তু আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে । কারণ যে পুলিশ বডি লোপাট কিংবা সিসিটিভির ফুটেজ লোপাট করে দিতে পারে, এমনকী যে পুলিশ আরজি করকে ভাঙচুরের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে না, বাথরুমে গিয়ে লুকিয়ে বসে থাকে, সেই পুলিশকে তো বিশ্বাস করতে পারি না । আমি গতকালই মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশ মন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়েছি । আর আজ দেখুন বর্ধমানের বসতপুরে আর নান্দুর গ্রামে একই ঘটনা । আজ আমরা কোথায় যাব ? কিন্তু যারা ধর্ষক কিংবা খুনিদের আড়াল করতে চাইছে তাদের আড়াল হতে দেব না । আজ বর্ধমানের পুলিশের এমন অবস্থা যে একটা ডেপুটেশন দিতে এলে পুলিশ জিটি রোডে মাচা বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকে ৷ কিন্তু মা বোনেদের সুরক্ষা দিতে পারে না ।"
তিনি আরও বলেন, "ওরা যে বলছে এসএফআই, ডিওয়াইএফআই ভাঙচুর করেছে সেটা মুখে বললে হবে না । প্রমাণ করতে হবে । আমাদের পেজে সেই রাতের সারাক্ষণের ভিডিয়ো দেওয়া আছে । পুলিশ যখন বাথরুমে ঢুকেছে আমরা তখন সেই জনস্রোতকে নিয়ন্ত্রণ করেছি, যাতে প্রমাণ লোপাট না হয় সেই জন্য গাড়িটিকে বুক দিয়ে আগলে রেখেছিলাম ৷ যখন সেমিনার হল, বাথরুম পাশের পিজিটি রুম ভাঙার কাজ শুরু করে তখন এসএফআই, ডিওয়াইএফআই আমরা ভিতরে ঢুকে ভাঙা বন্ধ করতে বলেছিলাম ৷ গাড়িতে তথ্য প্রমাণ ছিল আটকানোর চেষ্টা করেছি ।"
এদিকে মীনাক্ষীদের লালবাজারে ডাকার প্রসঙ্গে সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, "হাইকোর্ট বলেছে পুলিশকে তোমরা দালালি করছ তদন্ত করেনি ঠিকমতো তাই জন্য সিবিআই হয়েছে । এখন ওরা ডাকছে, কীসের জন্য ডাকছে ! তদন্ত করতে ? মমতার কেস সাজানোর জন্য । যদি সাহস থাকে তাহলে প্রথমে অভিষেক ও তার মাকে ডাকুন । পরিষ্কার বললাম লতা ব্যানার্জিকে । এসিপি শান্তনু সিনহাকে ডাকুন । চিকিৎসক অভিক দে কে ডাকুন । ডাকুক সুশান্ত রায়কে । ডাকুক শ্যামাপদকে । যারা এই গোটা মামলায় হাসপাতালে দুষ্কৃতী চক্র চালাচ্ছে তাদেরকে ডাকুন ।"
মীনাক্ষীদের যাওয়ার প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, "কেন যাবেন, কার হুকুমে যাবেন ? জিজ্ঞাসা করার জন্য আইন আছে আইনকে পরামর্শ দেবার জন্য আইনবিদরা আছে । যে বিকাশ ভট্টাচার্য তদন্ত করে বিচার পাওয়াতে পারেন তিনি বিচারপতির কাছে যেমন নিয়ে যাবেন তেমনই এদের আইনি পরামর্শ দেবেন । আমি আইনের শাসন চাই লাইনের নয় ।"