দার্জিলিং, 17 ফেব্রুয়ারি: বেশ কয়েকদিন ধরে অসুস্থ দলছুট এক হস্তিশাবক । তাকে সুস্থ করে তুলতে দিনরাত এক করে ফেলেছেন বনকর্মীরা । তাঁদের চেষ্টায় অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠেছে হাতিটি ৷ এখনও তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে ৷
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দু'দিন আগে শিলিগুড়ি সংলগ্ন বিন্নাবাড়ি সেনা ছাউনির কাছে মহানন্দা অভয়ারণ্যে অসুস্থ দলছুট হাতির শাবকটিকে উদ্ধার করেন বনকর্মীরা । হাতিটির শারীরিক পরিস্থিতি এতটাই খারাপ ছিল যে, এক পা-ও নড়তে পারছিল না । দীর্ঘদিন খেতে না-পেয়ে সে আরও দুর্বল হয়ে পড়েছিল ৷ বনকর্মীরা মনে করছেন, শাবকটি আর চলতে না-পারায় তাকে ছেড়ে রেখেই চলে যায় হাতির দল ।
শাবকটিকে অসুস্থ অবস্থায় দেখতে পেয়ে তৎক্ষণাৎ পদক্ষেপ করেন কার্শিয়াং বন বিভাগের আধিকারিক ও কর্মীরা । হাতিটির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ছুটে যান ডিএফও দেবেশ পাণ্ডে, মহানন্দা অভয়ারণ্যের ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন সন্টু দাস, বাগডোগরার রেঞ্জার সোনম ভুটিয়া-সহ অন্যান্যরা । হাতিটির অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় দ্রুত একটি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয় ।

বেঙ্গল সাফারি পার্কের পশু চিকিৎসক নিক দোলে ও প্রাণিসম্পদ দফতরের ফাঁসিদেওয়া ব্লকের পশু চিকিৎসক শুভঙ্কর ভৌমিক হাতিটির চিকিৎসা শুরু করেন । সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে ভারতীয় সেনা ও জাম্বো ট্রুপস স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা । সোমবার সকাল থেকে জঙ্গলেই ওই হাতিটির যাবতীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয় ।
জানা গিয়েছে, স্ত্রী হাতি শাবকটির বয়স ছয় বছর । তার পিছনের পায়ে অভ্যন্তরীণ কোনও ক্ষত থেকে ইনফেকশন হয়েছে । সেই ইনফেকশন বেড়ে যাওয়ায় সেটা থেকে শাবকটির যাবতীয় রোগ সংক্রমণ হয়েছে । হাতিটির জ্বর রয়েছে । চিকিৎসকরা বনকর্মীদের সহায়তায় খাবারের সঙ্গে ওষুধ দিয়ে খাওয়াচ্ছেন । সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে জল, ডাল, কলাপাতা-সহ অন্যান্য খাবার ।

ডিএফও দেবেশ পাণ্ডে বলেন, "দু'দিন আগে হাতিটিকে ওই অবস্থায় উদ্ধার করা হয় । একদমই চলতে পারছিল না । না খেতে পেয়ে হাড় বেরিয়ে গিয়েছিল । এরপরই দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয় । কোথাও স্থানান্তর না-করে হাতিটিকে ওইখানেই চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে । অ্যান্টিবায়োটিক ও ওষুধ শুরু করা হয়েছে । খাবারের সঙ্গেই ওষুধ মিলিয়ে খাওয়ানো হচ্ছে । কিছুটা সুস্থ হলে শাবকটির পায়ের চিকিৎসা শুরু করা হবে ।"
রেঞ্জার সোনম ভুটিয়া বলেন, "দু'জন চিকিৎসক হাতিটির চিকিৎসা করছেন । আজ সকাল থেকে অনেকটা ভালো রয়েছে । চব্বিশ ঘণ্টা হাতিটির উপর নজর রাখা হবে ।"