কলকাতা, 12 অক্টোবর: আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে ত্রিধারা সম্মিলনীর সামনে 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস' স্লোগান দেওয়ায় 9 জনকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ ৷ এবার সেই ঘটনায় রাজ্য সরকার ও পুলিশ প্রশাসনকে আক্রমণ করেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম । হুঁশিয়ারির সুরে তিনি বলেন, "সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে । পুলিশকে দলদাস বৃত্তি ছাড়তে হবে ।"
ত্রিধারা সম্মলনির সামনে আন্দোলনকারী 9 জনকে 7 দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয় আলিপুর আদালত ৷ শুক্রবার তাঁদের জামিনের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট ৷ এই ঘটনায় এদিন মুজফ্ফর আহমেদ ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করেন সেলিম ৷ তিনি বলেন, "আন্দোলন করার সকলের অধিকার রয়েছে ৷ সুপ্রিম কোর্ট বলেছে ৷ ওই একই এলাকায় যখন প্রতিমা দর্শনে পদপৃষ্ঠের ঘটনা ঘটেছিল, তখন তো মামলা করা হয়নি ! এবার মিথ্যে মামলা করে আন্দোলনকারীদের জেলে ভরে দেওয়া হল ৷ আমাদের দাবি, সমস্ত মিথ্যে মামলা প্রত্যাহার করতে হবে ৷ আসলে পুলিশ কমিশনার বদলেছে ৷ কিন্তু, কলকাতা পুলিশের নীতির পরিবর্তন হয়নি ৷"
আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে অনশন অবস্থানে রয়েছেন জুনিয়ার চিকিৎসকরা ৷ সেই প্রসঙ্গে সেলিম বলেন, "এবার সরকারের দায়িত্ব আন্দোলনকারীদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করা ৷ আগুন নিয়ে খেলা করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ পুলিশকে দিয়ে আগুন আরও বাড়িয়েছেন তিনি ৷" সেলিমের অভিযোগ, "অসংবেদনশীল নিষ্ঠুর সরকার। একজন হাসপাতালে, তবু একেবারে উদাসীন হয়ে রয়েছে ।"
সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদকের আরও অভিযোগ, "যোগী আর মমতার মধ্যে কোনও পার্থক্য আছে কী? যোগী গেরুয়া পরেন আর মমতা নীল সাদা বস্ত্র পরেন । বিকাশ দা আগেই বলেছেন, যা কিছু 'গণ' তাকে আমরা সমর্থন করছি ।"
আরজি কর ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন সাধারণ মানুষ ৷ বিগত 2 মাসেরও বেশি সময় ধরে রাত দখল, রাস্তা দখল, মিছিল, সমাবেশ, গান, কবিতা, নাটকের মধ্য দিয়ে প্রতিবাদে মুখর রয়েছেন তাঁরা । সেলিমের অভিযোগ, "প্রতিবাদী কন্ঠকে স্তব্ধ করতে সরকার, পুলিশ ও শাসক দলের দুষ্কৃতীরা চেষ্টা করেই যাচ্ছে । মিথ্যা মামলায় প্রতিবাদীদের জেলবন্দি করে আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে চাইছে । 10 দফা দাবিতে জুনিয়ার চিকিৎসকদের অনশন শুরু হয়েছে গত শনিবার সন্ধ্যা থেকে । অনশনকারী চিকিৎসকদের কয়েকজনের শারিরীক অবস্থা সঙ্কটজনক । অথচ এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী নির্বিকার ।"
বাম নেতার অভিযোগ, রাজ্য সরকার যে কোনও মূল্যে এই আন্দোলনকে দমন করতে চাইছে । এই পরিস্থিতিতে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, ভাষা নির্বিশেষে সমাজের সমস্ত শুভবুদ্ধি সম্পন্ন, গণতান্ত্রিক, সাধারণ মানুষকে প্রতিবাদে সামিল হওয়ার আবেদন জানান সেলিম ৷