ETV Bharat / state

মেয়রের আশঙ্কায় শিয়রে বিপদ! চেন্নাইয়ের জলসঙ্কটের ছবি কি এবার কলকাতায়? - Water Crisis in Kolkata

Water Crisis Situation in Kolkata: কলকাতায় তীব্র হতে পারে জলসঙ্কট ! জলস্তর নীচে নেমে যাওয়ায় এমনই আশঙ্কা করছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম ৷ তাই শহরবাসীকে জল অপচয় না করার আবেদন করেছেন তিনি ৷

Kolkata News , Water Crisis
কলকাতায় জলসঙ্কট তীব্র
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Apr 29, 2024, 10:55 PM IST

কলকাতা, 29 এপ্রিল: গরমে জেরবার গোটা দেশ । এর মধ্যেই তীব্র জলসঙ্কটের ছবি ফুটে উঠেছে চেন্নাই, বেঙ্গালুরুর মতো শহরগুলিতে । কলকাতায় সার্বিকভাবে তেমন সঙ্কট নেই ৷ তবে গরম পড়তেই কলকাতার দক্ষিণ ও সংযুক্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় তীব্র হচ্ছে জলসঙ্কট । মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, পরিশ্রুত পানীয় জল উৎপাদনই বাধা পাচ্ছেন তাঁরা । কারণ, তীব্র দাবদাহের জেরে জল প্রকল্পের যেখান থেকে জল তোলা হয়, সেখানে জোয়ার ছাড়া আর জল তোলা সম্ভব হচ্ছে না । জলস্তর এক্কেবারে নীচে চলে গিয়েছে । এই নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি ।

জলের ট্যাঙ্কের উপর নির্ভর করে চলছে চেন্নাই, বেঙ্গালুরুর মতো বেশ কিছু শহর । জল অপচয় নিয়ে সেখানে রীতিমতো কড়াকড়ি মনোভাব প্রশাসনের । পরিস্থিতি এমন যে নাগরিক বা বাসিন্দারা হারে হারে টের পাচ্ছেন প্রতি ফোঁটা জলের গুরুত্ব । সেই ছবি কি এবার ফুটে উঠবে কলকাতার বুকেও ? দ্রুত কি সেই দিন ঘনিয়ে আসছে তিলোত্তমায় ? শুকিয়েছে গঙ্গা । তীব্র দাবদাহে সেখানেও কমেছে জলস্তর । এই পরিস্থিতিতে ধাক্কা খাচ্ছে কলকাতার পরিশুদ্ধ পানীয় জলের উৎপাদন । তাই আগামি দিনে শহরের জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে জল অপচয় বন্ধ করার আর্জি জানালেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম । নাগরিকদের প্রতি তার অনুরোধ, আমরা সর্বত্র পানীয় জল সরবরাহ পর্যাপ্ত রাখার চেষ্টা করছি । বর্তমান পরিস্থিতিতে সেটা নিয়মিত চালানো সম্ভব না-ও হতে পারে । তাই জলের অপচয় রুখতেই হবে ।

কলকাতা কর্পোরেশন সূত্রে খবর, প্রতিদিনে গড়ে 500 মিলিয়ন লিটার জল উৎপাদন হয় । কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তীব্র গরমে জল উৎপাদন মাঝে মধ্যেই ধাক্কা খাচ্ছে । সম্প্রতি দু-এক দিন খিদিরপুরের তক্তা ঘাটে পর্যাপ্ত জল গঙ্গা থেকে তোলা যায়নি । ফলে উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে । পলতায় জল প্রকল্পটি এমনভাবে তৈরি সেটি জোয়ার এবং ভাটার সময় খুব একটা জলস্তরের পরিবর্তন হয় না । তাই কলকাতার উত্তর অংশ ও তার আশপাশের পৌর এলাকাও প্রস্তুত জল দিতে সেই সঙ্কট এখনই হবে না । কিন্তু শহরের অভ্যন্তরে বয়ে যাওয়া গঙ্গা নদী বিভিন্ন জায়গায় চড়া পড়েছে ৷ সেই সঙ্গে কাঠফাটা রোদে অনেক জায়গায় জলস্তর আংশিক কমে গিয়েছে । তার জেরে দক্ষিণ কলকাতা, যাদবপুর, টালিগঞ্জ, বেহালা, বাইপাস এলাকায় ব্যাপক প্রভাব পড়ছে । সেই সংকট আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে ।

ফিরহাদ হাকিম বলেন, "জোয়ারের সময় ছাড়া পর্যাপ্ত জল তোলা যাচ্ছে না । ভাটার সময় জল তুলতে গেলে কাদা উঠছে । উৎপাদনে সমস্যা হচ্ছে । তাই নাগরিকের কাছে জল অপচয় বন্ধের আবেদন জানাচ্ছি ।" রাস্তার ও বাড়ির কলের মুখ বন্ধ রাখা, বাড়ির জলের পাইপলাইন যেন লিক না থাকে, ট্যাংক যেন ওভার ফ্লো না হয়, এই বিষয়ে নাগরিকদের সতর্ক থাকার আর্জি জানাচ্ছে কর্পোরেশন ।

তিনি আরও বলেন, "গরমে পানীয় জলের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি । মানুষকে বেশি করে জল পান করতে হয় । দিনে একাধিকবার স্নান করতে হয় । ফলে জল বেশি লাগে । কিন্তু প্রচন্ড গরমে গঙ্গার জলস্তর নেমে যাচ্ছে । ফলে জল উৎপাদন মার খাচ্ছে । শহরবাসীকে পর্যাপ্ত জলের যোগান দেওয়ার ক্ষমতা আছে আমাদের । আমরা বিভিন্ন জায়গায় জল সঞ্চয় করছি । সেখান থেকে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছি । এখনও পর্যন্ত সেভাবে শহরের কোথাও জলের হাহাকার তৈরি হয়নি । কিন্তু জল অপচয় বন্ধ না হলে অচিরেই সমস্যা তৈরি হতে পারে ।"

আরও পড়ুন :

  1. শহরে তাপপ্রবাহের মধ্যেই বর্ষা মোকাবিলার প্রস্তুতি বৈঠক কলকাতা পৌরনিগমের
  2. মানবসভ্যতার সুরক্ষায় ব্যবহারোপযোগী জলের স্থায়ী ব্যবস্থা করা জরুরি, পড়ুন বিস্তারিত বিশ্লেষণ
  3. তপ্ত বেঙ্গালুরুতে রেকর্ড তাপমাত্রা, আরও তীব্র জল সংকট

কলকাতা, 29 এপ্রিল: গরমে জেরবার গোটা দেশ । এর মধ্যেই তীব্র জলসঙ্কটের ছবি ফুটে উঠেছে চেন্নাই, বেঙ্গালুরুর মতো শহরগুলিতে । কলকাতায় সার্বিকভাবে তেমন সঙ্কট নেই ৷ তবে গরম পড়তেই কলকাতার দক্ষিণ ও সংযুক্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় তীব্র হচ্ছে জলসঙ্কট । মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, পরিশ্রুত পানীয় জল উৎপাদনই বাধা পাচ্ছেন তাঁরা । কারণ, তীব্র দাবদাহের জেরে জল প্রকল্পের যেখান থেকে জল তোলা হয়, সেখানে জোয়ার ছাড়া আর জল তোলা সম্ভব হচ্ছে না । জলস্তর এক্কেবারে নীচে চলে গিয়েছে । এই নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি ।

জলের ট্যাঙ্কের উপর নির্ভর করে চলছে চেন্নাই, বেঙ্গালুরুর মতো বেশ কিছু শহর । জল অপচয় নিয়ে সেখানে রীতিমতো কড়াকড়ি মনোভাব প্রশাসনের । পরিস্থিতি এমন যে নাগরিক বা বাসিন্দারা হারে হারে টের পাচ্ছেন প্রতি ফোঁটা জলের গুরুত্ব । সেই ছবি কি এবার ফুটে উঠবে কলকাতার বুকেও ? দ্রুত কি সেই দিন ঘনিয়ে আসছে তিলোত্তমায় ? শুকিয়েছে গঙ্গা । তীব্র দাবদাহে সেখানেও কমেছে জলস্তর । এই পরিস্থিতিতে ধাক্কা খাচ্ছে কলকাতার পরিশুদ্ধ পানীয় জলের উৎপাদন । তাই আগামি দিনে শহরের জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে জল অপচয় বন্ধ করার আর্জি জানালেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম । নাগরিকদের প্রতি তার অনুরোধ, আমরা সর্বত্র পানীয় জল সরবরাহ পর্যাপ্ত রাখার চেষ্টা করছি । বর্তমান পরিস্থিতিতে সেটা নিয়মিত চালানো সম্ভব না-ও হতে পারে । তাই জলের অপচয় রুখতেই হবে ।

কলকাতা কর্পোরেশন সূত্রে খবর, প্রতিদিনে গড়ে 500 মিলিয়ন লিটার জল উৎপাদন হয় । কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তীব্র গরমে জল উৎপাদন মাঝে মধ্যেই ধাক্কা খাচ্ছে । সম্প্রতি দু-এক দিন খিদিরপুরের তক্তা ঘাটে পর্যাপ্ত জল গঙ্গা থেকে তোলা যায়নি । ফলে উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে । পলতায় জল প্রকল্পটি এমনভাবে তৈরি সেটি জোয়ার এবং ভাটার সময় খুব একটা জলস্তরের পরিবর্তন হয় না । তাই কলকাতার উত্তর অংশ ও তার আশপাশের পৌর এলাকাও প্রস্তুত জল দিতে সেই সঙ্কট এখনই হবে না । কিন্তু শহরের অভ্যন্তরে বয়ে যাওয়া গঙ্গা নদী বিভিন্ন জায়গায় চড়া পড়েছে ৷ সেই সঙ্গে কাঠফাটা রোদে অনেক জায়গায় জলস্তর আংশিক কমে গিয়েছে । তার জেরে দক্ষিণ কলকাতা, যাদবপুর, টালিগঞ্জ, বেহালা, বাইপাস এলাকায় ব্যাপক প্রভাব পড়ছে । সেই সংকট আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে ।

ফিরহাদ হাকিম বলেন, "জোয়ারের সময় ছাড়া পর্যাপ্ত জল তোলা যাচ্ছে না । ভাটার সময় জল তুলতে গেলে কাদা উঠছে । উৎপাদনে সমস্যা হচ্ছে । তাই নাগরিকের কাছে জল অপচয় বন্ধের আবেদন জানাচ্ছি ।" রাস্তার ও বাড়ির কলের মুখ বন্ধ রাখা, বাড়ির জলের পাইপলাইন যেন লিক না থাকে, ট্যাংক যেন ওভার ফ্লো না হয়, এই বিষয়ে নাগরিকদের সতর্ক থাকার আর্জি জানাচ্ছে কর্পোরেশন ।

তিনি আরও বলেন, "গরমে পানীয় জলের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি । মানুষকে বেশি করে জল পান করতে হয় । দিনে একাধিকবার স্নান করতে হয় । ফলে জল বেশি লাগে । কিন্তু প্রচন্ড গরমে গঙ্গার জলস্তর নেমে যাচ্ছে । ফলে জল উৎপাদন মার খাচ্ছে । শহরবাসীকে পর্যাপ্ত জলের যোগান দেওয়ার ক্ষমতা আছে আমাদের । আমরা বিভিন্ন জায়গায় জল সঞ্চয় করছি । সেখান থেকে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছি । এখনও পর্যন্ত সেভাবে শহরের কোথাও জলের হাহাকার তৈরি হয়নি । কিন্তু জল অপচয় বন্ধ না হলে অচিরেই সমস্যা তৈরি হতে পারে ।"

আরও পড়ুন :

  1. শহরে তাপপ্রবাহের মধ্যেই বর্ষা মোকাবিলার প্রস্তুতি বৈঠক কলকাতা পৌরনিগমের
  2. মানবসভ্যতার সুরক্ষায় ব্যবহারোপযোগী জলের স্থায়ী ব্যবস্থা করা জরুরি, পড়ুন বিস্তারিত বিশ্লেষণ
  3. তপ্ত বেঙ্গালুরুতে রেকর্ড তাপমাত্রা, আরও তীব্র জল সংকট
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.