কলকাতা, 19 মার্চ: গার্ডেনরিচে বেআইনি বহুতল নির্মাণের ঘটনায় অসাধুচক্রের যোগ রয়েছে বলেই মনে করছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম ৷ আর এদের সঙ্গে কলকাতা পৌরনিগমের কোনও আধিকারিক যুক্ত থাকার প্রমাণ পেলে, তার 'চাকরি খাবেন' মেয়র ৷ আজ এসএসকেএম হাসপাতালে আহতদের দেখতে এসে এমনটাই হুঁশিয়ারি দিয়ে গেলেন তিনি ৷ কিন্তু, ওই 105 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সামশ ইকবালকে নিয়ে প্রশ্ন করতেই, বিষয়টি এড়িয়ে গেলেন ফিরহাদ ৷
মঙ্গলবার এসএসকেএম হাসপাতালে ভরতি গার্ডেনরিচ-কাণ্ডে আহত তিনজনকে দেখতে আসেন ফিরহাদ ৷ সেখানেই গার্ডেনরিচ-সহ শহরের বিভিন্ন প্রান্তে পুকুর ও জলাজমি বুজিয়ে বেআইনি নির্মাণ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, "গার্ডেনরিচে এমনটা হচ্ছিল আমরা জানতাম না, খবর পাইনি ৷ শুধু গার্ডেনরিচ নয়, শহরে আরও কয়েকটি জায়গা রয়েছে ৷ এনিয়ে কেএমসি-র তিনজনকে শো-কজ করেছি ৷ আর যারা এই বেআইনি নির্মাণ করছে, তাঁরা অবশ্যই অসাধু ৷ তা না হলে, বেআইনি নির্মাণ করবে কেন !"
তবে, এই অসাধু চক্রের সঙ্গে কী পৌরনিগমের আধিকারিকদের কেউ কেউ কি জড়িত ? যার জবাব ফিরহাদ বলেন, "যদি পৌরনিগমের কেউ জড়িত থাকার প্রমাণ পাই তবে, চাকরি 'খাব' ৷ কিন্তু, তার জন্য প্রমাণ পেতে হবে ৷ প্রমাণ ছাড়া তো আমরা কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারি না ৷" কিন্তু, প্রশ্ন উঠছে প্রোমোটার এসবের কিছুই জানতেন না ? একজন কাউন্সিলরের ওয়ার্ডে একের পর এক পুকুর ভরাট হচ্ছে, আর সেখানে বহুতল নির্মাণ হচ্ছে বেআইনিভাবে ৷ আর তিনি জানতেন না, একথা সত্যিই কি বিশ্বাসযোগ্য ?
মেয়র ফিরহাদ হাকিমের দাবি, কাউন্সিলর সামশ ইকবাল এসবের কিছুই নাকি জানতেন না ৷ আইনত তাঁর পক্ষে নাকি, এসব জানাও সম্ভব নয় ৷ অন্তত মেয়র হিসেবে তিনি তা বলতে পারেন না ৷ এক্ষেত্রে ফিরহাদ হাকিমের কথা সত্যি ধরে নিলে, সামশ ইকবালের কাউন্সিলর পদে থাকার যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে ৷ একজন কাউন্সিলর তখনই ওয়ার্ডের উন্নতি করতে পারবেন, যখন তিনি সেই এলাকাকে হাতের তালুর মতো চিনবেন ৷
যদিও, ফিরহাদ হাকিম পুরো বিষয়টিই এলাকার মানুষ ও অসাধু প্রোমোটারদের উপর চাপিয়ে দিলেন ৷ তিনি বলেন, "ওরা মনে করে বিএলআরও-র অনুমতি পাওয়া যায় না ৷ তাই এই বেআইনি বাড়ি তৈরি করে ৷ তবে বিএলআরও এখন কলকাতা পৌরনিগমে আছেন ৷ অনেক সুবিধা আছে ৷ তাও এই বেআইনি বাড়ি তৈরি এখন সামাজিক ব্যাধি হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷ বেআইনি বিল্ডিংয়ের দরকার হয় না ৷ সরকার বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে । গরিব মানুষের জন্য বাংলার বাড়ি রয়েছে ৷ তাও কেন এমন ওখানে হচ্ছে তা বুঝতে পারছি না ৷ এটা আমাদের দুর্ভাগ্য ।"
আরও পড়ুন: