কোচবিহার, 6 অগস্ট: "দুদিন চার দেওয়ালের মধ্যে বন্দি ছিলাম। বাংলাদেশের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। খাওয়া দাওয়া হয়নি। গতকাল থেকে না খেয়েই ছিলাম।" চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ নিয়ে ভারতে ফিরলেন 190 জন ভারতীয় ট্রাক চালক। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রভাব পড়েছে বৈদেশিক বাণিজ্যের উপরও।
সোমবার সন্ধ্যে থেকেই ভারতীয় ট্রাক ড্রাইভারদের ভারতে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। ভারত বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক চেক পোস্ট চ্যারাবান্ধায় আসেন কোচবিহারের মাথাভাঙার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সন্দীপ গড়াই, মেখলিগঞ্জ পুলিশের এসডিপিও আশিস সুব্বা, মেখলিগঞ্জ পুলিশের সিআই (সার্কেল ইন্সপেক্টর) অভিজিৎ সরকার, ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ওসি সুরজিৎ বিশ্বাস, কাস্টমস সুপারিনটেন্ডন্ট কুন্দন চৌহান সহ-বিএসএফ আধিকারিকরা।
জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতির কারণে একাধিক বিষয়ে নিষেধজ্ঞা জারি হয়েছে ৷ হঠাৎ করে বাংলাদেশে কার্ফু শুরু হয়ে যাওয়ার ফলে বিপাকে পড়েন ভারতীয় ট্রাক চালকরা। তার জেরেই ভারত-বাংলাদেশের বুড়িমারি স্থলবন্দরে পণ্য নিয়ে যাওয়া 207টি ভারতীয় ট্রাক আটকে পড়ে। সোমবার 190 জন ট্রাক চালককে ভারতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে । এখনও 17 জন ড্রাইভার বাংলাদেশে আটকে রয়েছেন।
বাংলাদেশে আটকে পড়া ভারতীয় ড্রাইভার মনসুর আলি বলেন, "গত শনিবার ট্রাকে করে পাথর নিয়ে বাংলাদেশ গিয়েছিলাম। বর্তমানে সেখানকার পরিস্থিতি খুবই খারাপ। আমরা দু’দিন থেকে চার দেওয়ালেই মধ্যে বন্দি ছিলাম। দোকানপাট কিছুই খোলা পায়নি ৷ না-খেয়েই একপ্রকার আছি। পরে যোগাযোগ করলে আমাদেরকে ভারতে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেছে। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের কোনও সাহায্য আমরা পাইনি ৷"
কোচবিহার জেলার মাথাভাঙার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সন্দীপ গড়াই জানান, চ্যাংড়াবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। ভারতীয় প্রায় দুই শতাধিক ট্রাক চালক বাংলাদেশের আটকে পড়েছিলেন দুই দেশের সহযোগিতায় ট্রান ড্রাইভারদের ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে । 190 জন ট্রাক ড্রাইভারকে ফেরানো হয়েছে। সব কিছু শান্তিপূর্ণ আছে। সীমান্তে অতিরিক্ত বিএসএফ জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছে ৷
উল্লেখ্য, কোচবিহার জেলার আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট চ্যাংড়াবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন প্রায় 450-500টি ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করে। হঠাৎ করে অনির্দিষ্টকালের জন্য বৈদেশিক বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাবার ফলে বিপাকে পড়েন ভারতীয় ড্রাইভাররা। বাংলাদেশে ভাঙচুর ও গণ্ডোগোলের জেরে বন্দি হয়ে পড়েন ভারতীয় ড্রাইভাররা। তাদের খাওয়া পর্যন্ত জোটেনি। চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন তাদের আত্মীয় পরিজনেরাও। এই অবস্থায় এদিন ভারতীয় প্রশাসনের তরফে দ্রুত আটকে পড়া সেইসব ট্রাক চালকদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয় ৷